মিতুর জমজমাট চলচ্চিত্র যাত্রা

শাকিব খানের সঙ্গে অভিনয় করবেন এটা কখনো স্বপ্নও ভাবেননি মিতু। শাকিব খান অভিনীত কোনো সিনেমা হলে গিয়ে না দেখলেও টেলিভিশনের পর্দায় দেখেছেন অনেকবার। শুরুতেই শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয় করাটা সৌভাগ্যেরও বটে। স্বপ্নের নায়ক শাকিব খানের সঙ্গে প্রথম দেখা নিয়ে মিতু বলেন, তার মতো এত বড় মাপের একজন অভিনেতা আমাকে খুব সহজেই আপন করে নেন। সুপারস্টারের সব গুণ তার মধ্যে আছে।'

প্রকাশ | ২২ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মাসুদুর রহমান ঢাকাই চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করল আরও এক নায়িকা। নাম জাহারা মিতু। এর আগে মিনি পর্দায় টুকটাক কাজ করলেও এবারই প্রথমবার চলচ্চিত্রের ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালেন এই তরুণ নায়িকা। প্রথম ছবিতেই সময়ের সবচেয়ে শীর্ষ ও চাহিদাসম্পন্ন নায়ক শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয়, তার ওপর আবার খ্যাতিমান পরিচালক বদিউল আলম খোকনের নায়িকা। শুধু কী তাই! ছবির মহরত হলো দেশের পাঁচ তারকা এক হোটেলে অনাড়ম্বর এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। সেখানেই আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয় মিতুকে। সব মিলিয়ে বেশ জমকালোভাবেই শুরুটা হলো তার। ছবির নাম 'আগুন'। কিন্তু ছবির আগুনের আগেই স্ম্প্রতি হোটেল সোনারগাঁওয়ে নিজের সৌন্দর্যের জ্যোতি দিয়ে অন্যরকম এক আগুন সন্ধ্যা উপহার দিলেন মিতু। প্রথম দর্শনেই যেন সবাইকে মাত করে ফেলেন এ নায়িকা। শুধু রূপের ঝলকেই নয়, কথার বাচন ভঙ্গিও মুগ্ধ করে সবাইকে। মিতু 'মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ-২০১৭' প্রতিযোগিতার প্রথম রানার আপ হয়েছিলেন। এরপর টিভি নাটকে অভিনয় করেন। এবারের কোরবানি ঈদের দুটি নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। মিতু বলেন, 'নাটক দুটির শুটিং শিডিউল আগে থেকেই দেয়া ছিল। তাই আর না করতে পারিনি। একটি নাটক রোজার আগে, অন্যটির শুটিং করা হয়েছে কুরবানির ঈদের আগে। রাহাত মাহমুদের পরিচালনায় নাটকটির নাম 'পিক পকেট'।' চলচ্চিত্রে নিয়মিত হলে নাটকে অভিনয় করা হবে কিনা জানতে চাইলে মিতু বলেন, 'নাটক ছাড়ছি না। ভালো গল্প ও চরিত্র হলে নাটকেও অভিনয় করা হবে।' মিতু শুধু অভিনয়েই নয়, উপস্থাপনাতেও পারদর্শী। জিটিভিতে ক্রিকেট খেলার উপস্থাপনায় দেখা গেছে তাকে। উপস্থাপনার বদৌলতেই তার চলচ্চিত্রে কাজের সুযোগ হয়েছে। মিতু বলেন, 'সবাই জানেন আমি খেলার অনুষ্ঠান উপস্থাপনার মধ্যে দিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছেছি। বাংলাদেশ ও ওয়েস্টন্ডিজের খেলা চলছিল সেদিন। একটা অপরিচিত নাম্বার থেকে কল এলো আমার ফোনে। প্রথমে রিসিভ করতে পারিনি। পরে যখন ধরলাম ওপার থেকে একজন পরিচয় দিলেন তার নাম খোরশেদ। আমার সঙ্গে সিনেমা নিয়ে কথা বলতে চান। আমি খুব ভদ্রভাবেই বললাম, আমি আপাতত সিনেমায় অভিনয় করতে চাই না। দুই থেকে আড়াই বছর পরে সিনেমায় আসার ইচ্ছা। এই কথা বলেই ফোনটা রেখে দিয়েছি। ভদ্রলোক আবারও ফোন দিলেন। বললেন, এ ছবির সংশ্লিষ্ট সবাই আমাকে এই ছবিতে রাখতে চাচ্ছেন। খেলা উপস্থাপনার সময় তারা আমাকে দেখেছেন, তাদের আমাকে ভালো লেগেছে। আমার বেশি আগ্রহ না দেখে উনি বললেন, এ ছবিটি পরিচালনা করবেন বদিউল আলম খোকন ও ছবিতে আমার নায়ক থাকবেন শাকিব খান। এই দুটা কথা শোনার পর আমি ভাবতে শুরু করলাম। শাকিব খানের সঙ্গে অভিনয় করবেন এটা কখনো স্বপ্নও ভাবেননি মিতু। শাকিব খান অভিনীত কোনো সিনেমা হলে গিয়ে না দেখলেও টেলিভিশনের পর্দায় দেখেছেন অনেকবার। শুরুতেই শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয় করাটা সৌভাগ্যেরও বটে। স্বপ্নের নায়ক শাকিব খানের সঙ্গে প্রথম দেখা নিয়ে মিতু বলেন, 'মহরতের দুদিন আগে তার সঙ্গে আমার কথা হয় মোবাইল ফোনে। পরে মহরতের দিন তাকে সরাসরি দেখি এবং কথা হয়। তার মতো এত বড় মাপের একজন অভিনেতা আমাকে খুব সহজেই আপন করে নেন। সুপারস্টারের সব গুণগুলোই তার মধ্যে আছে।' 'আগুন' চলচ্চিত্রে মিতুর চরিত্র একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর। লেখাপড়ার পাশাপাশি একটি চাকরিও করেন। চরিত্রটি নিয়ে মিতু বলেন, 'প্রথমে সাংবাদিকের চরিত্র ছিল। পরে এটিকে পরিবর্তন করা হয়। যেটি আমার জীবনের সঙ্গে মিলে যায়। আমিও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় পাশাপাশি জব করতাম। তাই অভিনয়টি করা আমার জন্য অনেকটাই সহজ হচ্ছে। এ ছাড়া চরিত্রটি নিয়ে গ্রম্নমিং করেছি। সব মিলিয়ে মনে হয় ভালো কিছু করতে পারব।' শাকিব খানের নায়িকা হয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক হলেও বিষয়টি মিতুর জন্য অনেকটা চ্যালেঞ্জিং। ভালো সুযোগকে কাজে না লাগাতে পারলে ভবিষ্যতের পথ থুবড়ে পড়ে। শাকিবের নায়িকা হয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেকের অনুভূতি নিয়ে মিতু বলেন, 'ভালো লাগাটা যেমন কাজ করছে তার চেয়ে বেশি ভয় পাচ্ছি। শাকিব খানের বিপরীতে যেনতেন অভিনয় তো করলে চলবে না। তার সঙ্গে পালস্না দিয়ে অভিনয় করতে হবে। তার মতো পারফেক্ট না হলেও অন্তত মানানসই হতে হবে। দর্শক নতুন-পুরাতন বুঝবে না। তারা পারফেক্ট অভিনয় দেখতে চান।' চলচ্চিত্রের বিরাজমান নানা সংকটের অন্যতম নায়িকা সংকট। স্বপ্ন নিয়ে রূপালি পর্দায় অনেক নতুনের আগমন ঘটে আবার সময়ের ব্যবধানে অনেকেই হারিয়ে যান। নায়িকা হিসেবে নিজেকে টিকিয়ে রাখা নিয়ে মিতু বলেন, 'আমি সব সময়ই নিজের ভালোলাগাকে প্রাধান্য দিই। যতদিন ভালো লাগবে ততদিন চলচ্চিত্রে কাজ করে যাব। যে সব গল্প ও চরিত্র আমার ভালো লাগবে সে সব চলচ্চিত্রেই কাজ করব। ভালো-মন্দ বিচার না করে একের পর এক সিনেমায় কাজ করার পক্ষে আমি নই।'