অভিমানী মুনমুন

প্রকাশ | ২৯ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মুনমুন
তারার মেলা রিপোর্ট চিত্রনায়িকা মুনমুন। নব্বই দশকের তুমুল ব্যস্ত এই নায়িকা, এখন দূরে সরে রয়েছেন শখের চলচ্চিত্র ইন্ড্রাস্টি থেকে। একের পর এক কমার্শিয়াল খোলামেলা পোশাকের দরুন অশ্লীলতার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এ নিয়ে বারবার ব্যাখ্যা দিলেও মুনমুনের বক্তব্যকে গুরুত্ব না দিয়ে অনেকেই তাকে ময়ূরীর সঙ্গে তুলনা করেছেন। এ কারণে অভিমান নিয়েই চলচ্চিত্র থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন এই নায়িকা। বর্তমানে 'তোলপাড়' নামের একটি ছবিতে কাজ করলেও চলচ্চিত্র থেকে ক্রমেই দূরে সরে যাচ্ছেন তিনি। মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে দুই রাজকন্যা, পদ্মার প্রেম ও রাগী। চলচ্চিত্র ছেড়ে বর্তমানে সার্কাস পার্টিতে নিয়মিত পারফর্ম করে জীবিকা নির্বাহ করছেন মুনমুন। তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমি সার্কাসকে ভালোবাসি। এর আগেও বিভিন্ন সার্কাস পার্টিতে নৃত্য পরিবেশন করেছি। কিন্তু এখন থেকে নিয়মিত হওয়ার চেষ্টা করছি। চলচ্চিত্র নিয়ে আমার মোটেও মাথাব্যাথা নেই। আমার মুক্তি প্রতিক্ষিত 'রাগী' ছবিটি যদি ভালো ব্যবসা করে তাহলে হয়তো আবার চলচ্চিত্রে কাজ করব। না হলে, নিয়মিত সার্কাসে পারফর্ম করব।' রাজধানীর উত্তরাতে সালাম ও সালমান নামের দুই সন্তানকে নিয়ে সুখের বসবাস মুনমুনের। পারিবারিক জীবনে নিজেকে সুখী উলেস্নখ করে মুনমুন বলেন, আমি অনেক হ্যাপি। আমার দুই সন্তান, মা আর স্বামীকে নিয়ে সুখেই আছি। বড় ছেলে যশ রাজধানীর একটি স্কুলে স্ট্যান্ডার্ড সেভেনে পড়ে, ছোট ছেলে শিবরাম কেজি টু-তে পড়ে। স্বামী মীর মোশাররফ হোসেন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। অনেকটা অভিমানের স্বরে মুনমুন বলেন, 'ময়ূরীর সঙ্গে আমার নামটা জুড়ে দিয়ে একইসঙ্গে দুজনকে অশ্লীল নায়িকা হিসেবে কথা বলেন সবাই। আমার দুঃখ হলো এটাই যে, আমাকে অশ্লীল নায়িকা হিসেবে অভিযুক্ত করেছে। যার কারণে আমাকে ফিল্ম ছেড়ে দিতে হয়েছে, পরিবার ছেড়ে দিতে হয়েছে। দ্বিতীয়বার আমি সিনেমায় ফিরতে চেয়েছি আমাকে ফিরতে দেয়া হয়নি। আমি টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করতে চেয়েছি আমাকে কেউ নেয়নি। বাধ্য হয়ে আমি সার্কাসে যোগ দিয়েছি। এখন সার্কাস আমার প্রধান পেশা, 'ভালোবাসা।' মুনমুন বলেন, 'আমাদের নির্মাতারা জোর করে সংক্ষিপ্ত পোশাক পরানোর জন্য। আমরা তো বাসা থেকে কাপড় নিয়ে যাই না। ওরা যেটা পরতে বলতো সেটাই পরতে হতো। এক সময়ে এভাবে না চলতে পেরে চলে আসি। ২০০৩ সাল আমার চলচ্চিত্রের শেষ বছর। এরপর আমি বিয়ে করে ইংল্যান্ড চলে যাই। যে দৃশ্যে অভিনয় করিনি সে দৃশ্যেও আমার মাথা কেটে লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। ভেবে দেখলাম, সম্মান থাকতেই কেটে পড়া উচিত।' মুনমুন আরও বলেন, 'আমি একজন তারকা। আর তারকা হয়ে আমি কেন অশ্লীল চলচ্চিত্রে অভিনয় করব? আমি যখন চলচ্চিত্রে অভিনয় করতাম তখন ছিলাম আনবিটেবল। অপ্রতিদ্বন্দ্বী। আমি বেশিরভাগ ছবিতে লেডি অ্যাকশন চরিত্রে কাজ করেছি, তখন আমাকে পেছনে ফেলার কেউ ছিল না। প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে কয়েকজন সাংবাদিক অশ্লীল নায়িকা তকমা জুড়ে দিয়েছে। কিন্তু কেউ প্রমাণ দেখাতে পারবে না। আমাদের ভালো ছবিতে ঢুকিয়ে দেয়া হতো কাটপিস।' চিত্রনায়িকা মুনমুন ১৯৯৬ সালে 'ও'-লেভেল অধ্যয়নকালীন 'মৌমাছি' সিনেমার মাধ্যমে ঢাকাই ছবিতে অভিষিক্ত হন। এতে তিনি পার্শ্বনায়িকা চরিত্রে অভিনয় করেন। ছবিতে মূল নায়িকা ছিলেন শাবনূর। 'টারজান কন্যা' নামের একটি ছবির মাধ্যমে প্রধান নায়িকা হিসেবে অভিষিক্ত হন। এরপর রানি কেন ডাকাত, মৃতু্যর মুখে, টারজান কন্যাসহ অসংখ্য ব্যবসাসফল ছবি করেছেন।