সাবলীল সাবিলা...

নাট্যপাড়ায় কান পাতলেই শোনা যায়, সাবিলার পরিবর্তনের সুর। কিছুটা বিরতি দিয়ে আবারও অভিনয়ে চমক দেখাতে শুরু করেছেন উঠতি এই তারকা। নাটকের গল্প নির্বাচন ও বৈচিত্র্যময় চরিত্রে নিজেকে উপস্থাপন করছেন তিনি। সদ্য শেষ হওয়া ঈদের নাটকগুলো বদলে যাওয়া সাবিলারই প্রমাণ। তাকে নিয়ে লিখেছেন- রায়হান রহমান

প্রকাশ | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বর্তমান টিভি নাটকের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ, একঘেয়েমিতা। তবে এমন অভিযোগে খুব বেশি বিদ্ধ হতে হয়নি সাবিলা নূরের নাটকগুলোতে। শুরু থেকেই নানামুখী চরিত্রে দর্শকের মননে আলাদা জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। এবারের কোরবানি ঈদেও পাওয়া গেছে তার রেশ। ব্যতিক্রম সব নাটকে দেখা গেছে তাকে। সাবিলা অভিনীত 'উবার' নাটকটির কথাই ধরা যাক। মধ্যবিত্ত জীবনের হাজারো টানাপড়েন নিয়ে বহু নাটক নির্মিত হলেও 'উবার' নাটকটি সম্পূর্ণ আলাদা। বাবা সরকারি চাকরি করেন। মেয়েটা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া। আসা যাওয়ায় কষ্ট হওয়ায় বাবার কাছে আকুল আবেদন, একটা স্কুটি চাই। মেয়ের আবদার রাখতে, বাবা অফিস শেষে 'উবার' চালানো শুরু করেন। এদিকে অধর্য্য মেয়ে বাবার আশায় না থেকে বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে বাড়ি থেকে পালান। উঠেন উবারে। অদ্ভুতভাবে সেই উবার চালক ছিলেন মেয়েটির বাবা। এভাবেই চলতে থাকে হৃদয়বিদারক নাটকটি। ইতোমধ্যেই এ নাটকটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সাম্প্রতিক সময়ে নিজেকে এমন বদলে ফেলার বিষয় সাবিলা বলেন, 'আমি খুবই চুজি হয়ে গেছি। ব্যক্তিগত পরিচয়ের কারণে নাটক হাতে নেয়া বাদ দিয়েছি। সোজা কথা, আমার অনেক টাকা লাগবে না। কাজ করব বেছে-বেছে। মাসে একটি নাটকের শুটিং করলেও কোনো সমস্যা নেই। সেই কাজটা যেন দর্শকের মনে দাগ কাটে, সেটাই আমার লক্ষ্য।' সত্যিই তাই। গেল একটি বছর সাবিলাকে অতিরিক্ত নাটকে দেখা যায়নি। কাজ করেছেন গুনে-বেছে। ফলে এসব নাটকের শ্রম তার বিফলে যায়নি। সে কথাও বললেন নিজের মুখে। 'আগে এতটা প্রশংসা পাইনি। এখনতো অনেকের মুখে বলতে শুনি, সাবিলা বেশ পরিপক্ক হয়েছে। সত্যি বলতে এসব শুনতে বেশ ভালোই লাগে।' 'অতিরিক্ত কাজে আমি বিশ্বাসী নই। অল্প কাজ করব, তবে মানসম্মত। ইদানীং আমি ভালো গল্প খুঁজি। চেষ্টা করি, একটি নাটকের গল্পের সঙ্গে আরেকটি নাটকের গল্প যাতে মিলে না যায়। একটা বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করছি', যোগ করলেন হাল সময়ের ছোট পর্দাও সবচেয়ে আলোচিত এ অভিনেত্রী। কথার পেছনে যুক্তিও আছে। সাবিলা অভিনীত সাম্প্রতিক সময়ের নাটকগুলো দেখলেই তার কথার সত্যতা আন্দাজ করা যায়। উদাহরণ দিয়ে বলা যেতে পারে বেটার হাফ, ছঁ্যাকা খেয়ে ব্যাঁকা, জোকার জসিম ও টোটাল রিলোডেড নাটকগুলো। এ ছাড়াও কাজল আরেফিন অমির 'দ্য টেইলর নাটকটি সাবিলার ক্যারিয়ারে অন্যতম চ্যালিঞ্জিং একটি কাজ ছিল বলে নিজেও স্বীকার করেছেন। শহুরে দস্যি মেয়ে কিংবা মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ের চরিত্রে সাবিলাকেই সবাই চেনে। তাই বলে ভূতের চরিত্রে! এও সম্ভব। হঁ্যা এটাও সম্ভব হয়েছে কেবল সাবিলার অভিনয়শৈলীর বলে। চরিত্রের প্রয়োজনে হয়েছেন ভূত। না! এটা কোনো বোকাভূত নয়। সত্যি সত্যি ভৌতিক গল্পে কাজ করেছেন তিনি। এ নিয়ে সাবিল বলেন, 'আমি ভূত অনেক ভয় পাই। তাও চরিত্রের জন্য ভূত হয়েছি। আর চরিত্রটিকে একদম ন্যাচারাল রাখার জন্য এখানে কোনো গ্রাফিক্স ব্যবহার করা হয়নি। সবটা অভিনয় দিয়েই ফুটিয়ে তোলতে হয়েছে। আমরা পুরো ইউনিট মিলে গাজিপুরের একটি পুরনো বাড়িতে এই ভূতের দৃশ্যায়ন করেছি। সত্যিই অভিজ্ঞতাটা চমৎকার।' দিনকে দিন সাবিলার নিত্যনতুন গল্পের প্রতি আগ্রহ আরও তীব্র হচ্ছে। পরিণত চরিত্রে নিজেকে উপস্থাপনা করা সাবিলার নেশা হয়ে গেছে। একথায় নতুন গল্প যেখানে, সাবিলা সেখানে। এত গেল ছোট পর্দার গল্প-সল্প। কিন্তু বড় পর্দা! সেখানেও একই দশা। এখনো মনের মতো গল্প খুঁজে পাননি সাবিলা, তাই বড় পর্দার কোনো প্রজেক্টে দেখা যাচ্ছে না তাকে। এ নিয়ে সাবিলা বলেন, ''সিনেমায় কাজ করার ইচ্ছে আছে। তবে বড় পর্দা বলেই প্রস্তুতিটা হওয়া চাই বড়সর। তাই সিনেমার কাজের জন্য আমার আরেকটু সময় প্রয়োজন।'