সবকিছু ভুলে নতুনভাবে সাজাচ্ছি নিজেকে

পুরো নাম মেহবুবা মাহনূর চাঁদনী। তবে শোবিজ অঙ্গনে তিনি চাঁদনী নামেই বেশি পরিচিত। যিনি একাধারে একজন মডেল, অভিনেত্রী এবং নৃত্যশিল্পী। ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের সঙ্গে জড়িত তিনি। কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করলেও তার মধ্যে দুটি চলচ্চিত্রের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন। জীবন চলার বাঁকে ছন্দপতন ঘটে এই তারকার। মাঝে লম্বা সময় বিরতিতেও ছিলেন। সবকিছু ভুলে আবার স্বমহিমায় প্রত্যাবর্তনের চেষ্টা করছেন তিনি। তার সঙ্গে কথা বলে সাক্ষাৎকারটি সাজিয়েছেন- মাসুদুর রহমান

প্রকাশ | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
তারার মেলা : মাঝখানে অসুস্থ ছিলেন, শারীরিক অবস্থা এখন কেমন? চাঁদনী : হঁ্যা, ঈদের আগে থেকে বেশকিছু দিন অসুস্থ ছিলাম। বলা চলে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারতাম না। টানা বিশ্রামে ছিলাম। এখন অনেকটাই সুস্থ। তারার মেলা : এখন থেকে কি নাচ ও অভিনয়ে নিয়মিত দেখা যাবে আপনাকে? চাঁদনী : আমি আগে থেকেই খুব কম অভিনয় করি। বেছে বেছে কাজ করি। মাঝখানে অনেকটা সময় কাজ করা হয়নি। তবে কাজের প্রতি আমি এখন অনেক মনোযোগী। নিয়মিত কাজ করতে চাই। নিজেকে নতুনভাবে সাজিয়ে নিতে চাই। চেষ্টা করছি নতুন করে সবকিছুতে ব্যস্ত হওয়ার। আপাতত নাচ নিয়েই আছি। ঈদে নাচের মোট তিনটি অনুষ্ঠান করেছি। মাই টিভিতে দুটি এবং দীপ্ত টিভিতে একটি। তিনটি অনুষ্ঠানই ভালো হয়েছে। পরিপূর্ণ শারীরিক সুস্থ থাকলে হয়তো আরও দুয়েকটি অনুষ্ঠান বেশি করা হতো। অভিনয় ও নাচ দুটো করলেও নাচের অনুষ্ঠানই বেশি করা হয় আমার। আমার শুরুটা তো নাচ দিয়েই। ঈদে একাধিক নাচের অনুষ্ঠান করলেও কোনো নাটক করা হয়নি। তারার মেলা : তাহলে কি আপাতত নাটক থেকে দূরে সরে আছেন? চাঁদনী : ঠিক তা নয়, অভিনয় করছি তো। কিন্তু নতুন নাটকের কাজ এখনও শুরু করিনি। যেগুলো প্রচার হচ্ছে বিভিন্ন চ্যানেলে, সেগুলোর কাজ নিয়মিত করছি। দুটি চ্যানেলে আমার অভিনীত দুটি ধারাবাহিক নাটক প্রচারিত হচ্ছে। মাতিয়া বানু শুকুর রচনা ও রাজু চৌধুরীর পরিচালনায় এনটিভিতে প্রচারিত হচ্ছে 'ঘুমন্ত শহরে'। আশিক মাহমুদের পরিচালনায় বাংলা ভিশনে 'পাগলা হাওয়া'। এটি আর কয়েক পর্ব প্রচারের পর শেষ হয়ে যাবে। এ ছাড়া হিরণের পরিচালনায় 'টিপু সুলতান' নামের একটি ধারাবাহিকের প্রচার শুরু হবে আরটিভিতে। তারার মেলা : তিন ধারাবাহিকে আপনার চরিত্র ও গল্পের কি কোনো ভিন্নতা আছে ? চাঁদনী: তিনটি নাটকের গল্প ও চরিত্র তিন ধরনের। 'ঘুমন্ত শহরে' আমি নেগেটিভ চরিত্রে অভিনয় করেছি। বিদেশে থাকার পর দেশে ফিরে ভাইয়ের সংসারে অশান্তি তৈরি করি। পারিবারিক গল্পের একটি নাটক। একটি মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কিছু মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষের জীবনের চালচিত্র হাস্যরসাত্মকভাবে ফুটিয়ে উঠেছে 'পাগলা হাওয়া'। অন্যদিকে গ্রামের প্রেক্ষাপটের নাটক 'টিপু সুলতান'। এতে আমি ভন্ড মহিলা পীরের চরিত্রে অভিনয় করেছি। বয়স ততটা না হলেও বুড়োদের মতো চালচলন। লাঠি ভর করে হাঁটি। একদমই ব্যতিক্রম চরিত্র। এর আগে এমন চরিত্রে অভিনয় করা হয়নি। অভিনয়টি করে খুব ভালো লেগেছে। আশা করি, নতুন এ ধারাবাহিকটি সবার ভালো লাগবে। তারার মেলা : টেলিভিশন নাটক নিয়ে নানা অভিযোগ শোনা যায়। আপনার কি বক্তব্য? চাঁদনী : বর্তমান টিভি নাটক নিয়ে অনেকের নানা মন্তব্য থাকলেও আমি বলব, টিভি নাটক ভালো হচ্ছে। অনেক ভালো ভালো নির্মাতা নাটক নির্মাণ করছেন, নতুনরা এগিয়ে আসছেন, অনেকে ভালোও করছেন। অভিনয় শিল্পীরাও ভালো করছেন। আমাদের নাটকের মান ভালোই বলব আমি। আমাদের এখন টিভি নাটকে বেশ পরিবর্তন এসেছে। আমি মনে করি, আমাদের দর্শক পারিবারিক গল্পের দিকে বেশি আগ্রহী। পারিবারিক গল্প নিয়ে নির্মিত ধারাবাহিকগুলো সব সময় দর্শকের মনে দাগ কাটে। আমিও তেমন নাটকগুলোতে অভিনয় করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। তারার মেলা : নাচের বর্তমান অবস্থা নিয়ে আপনার মন্তব্য কি? চাঁদনী : নাচ নিয়ে কাজ হচ্ছে। তবে এর চর্চাটা খুব বেশি হচ্ছে না। যদিও নতুনরাও কেউ কেউ ভালো করার চেষ্টা করছে। বিভিন্ন টিভি চ্যানেল অন্যান্য অনুষ্ঠান যতটা প্রচার করে সে তুলনায় নাচের অনুষ্ঠান কম করেন। আগে একটা সময় ছিল নিয়মিত নাচের অনুষ্ঠান হতো। তবে ইদানীং চ্যানেলগুলো নাচের অনুষ্ঠান করছে। কিন্তু পেশাদার নাচের শিল্পী দিয়ে নাচের অনুষ্ঠান কম করা হয়। দেখা যাচ্ছে, অপেশাদার নাচের শিল্পী, হয়তো তারকা বটে কিন্তু নাচের লোক নয়, তাকে দিয়ে নাচের অনুষ্ঠান করা হচ্ছে। এ বিষয়গুলো ভেবে দেখা দরকার। যে যেখানের তাকে সেখানেই রাখা উচিত। তারার মেলা : জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়ার পরেও চলচ্চিত্রে তেমন দেখা যায়নি আপনাকে! প্রত্যাবর্তনের পর চলচ্চিত্রে অভিনয় করার কোনো পরিকল্পা আছে কী! চাঁদনী : দুখাই, লালসালু ও জয়যাত্রা এই তিনটি চলচ্চিত্রে কাজ করেছি। তিনটি চলচ্চিত্রে কাজ করে আপনাদের দোয়ায় দুটিতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি। জয়যাত্রার পর নতুন কোনো চলচ্চিত্রে কাজ করা হয়নি। আমি যেহেতু মাঝখানে চার বছর অভিনয়ের বাইরে ছিলাম এ জন্য অনেকের সঙ্গে যোগাযোগের ঘাটতি তৈরি হয়েছে। হয়তো কেউ কেউ আমাকে চেয়েও পাননি। এখন ভালোভাবে সিনেমাটাই করতে চাচ্ছি। ভালো গল্প হলে বাণিজ্যিক বা অবাণিজ্যিক সব ধরনের সিনেমাতেই অভিনয় করতে চাই। তারার মেলা : চলচ্চিত্রের চলমান অবস্থা নিয়ে আপনার মন্তব্য শুনতে চাই... শুধু চলচ্চিত্রে নয়, ভালো-মন্দ সব জায়গাতেই আছে। অনেক ভালো সিনেমাও নির্মিত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক ভাবেও আমাদের সিনেমা প্রশংসিত হচ্ছে। সিনেমা হলের অবস্থাই তো ভালো না। সিনেমা হলের পরিবেশ ভালো করা জরুরি। হলের সংখ্যা বাড়াতে হবে। আমি সুযোগ পেলে হলে গিয়ে সিনেমা দেখি। শরীর অসুস্থ থাকার কারণে এবারের ঈদের ছবি দেখা হয়নি।