বাড়ছে ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব

একই পরিবেশে একসঙ্গে চলতে গিয়ে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কখনো এই সম্পর্ক গভীর থেকে আরও গভীরে চলে যায়। কিন্তু অপ্রত্যাশিত মনোমালিন্য চরম দ্বন্দ্বে রূপ নিলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সুস্থ পরিবেশ। শোবিজ অঙ্গনে তারকাদের সুসম্পর্কের বিষয়টি পুরনো হলেও ইদানীং নানা কারণে দ্বন্দ্ব প্রকট দেখা দিচ্ছে। কারণে-অকারণে তাদের মধ্যে সম্পর্কের ঘাটতি হচ্ছে। লিখেছেন - মাসুদুর রহমান

প্রকাশ | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
অপু বিশ্বাস
তারার মেলা রিপোর্ট বাংলাদেশে বিদেশি ছবি প্রদর্শনের বিরুদ্ধে একসঙ্গে আন্দোলন করেছিলেন চিত্রনায়ক শাকিব খান ও জায়েদ খান। এ সময় মাঠে সবসময় দুজনকে পাশাপাশিও থাকতে দেখা গেছে। কিন্তু ২০১৭ সালে বাংলাদশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনকে ঘিরেই দ্বন্দ্বের শুরু হয়েছিল দুই খানের। দ্বন্দ্বের সূত্রপাত এই নির্বাচনকে ঘিরেই। নির্বাচনের দিন (৫ মে) রাতে অপ্রীতিকর ঘটনার জের ধরে সে দ্বন্দ্বের উত্তাপ ছড়াতে থাকে। দিন যত গড়িয়েছে মিশা সওদাগর ও জায়েদ খানের নির্বাচিত কমিটির সঙ্গে শাকিব খানের দূরত্ব তত বেড়েছে। বয়কট, শিল্পী সমিতির নির্বাচনে হামলা, মামলাসহ বিভিন্ন ইসু্যতে শাকিব খানের সঙ্গে মিশা সওদাগর ও জায়েদ খানের স্নায়ুযুদ্ধ চলছে বেশ। দুই পক্ষের বাক্য বিনিময়ও হয়েছে। এ দ্বন্দ্বে চলচ্চিত্র পরিবারের আরো অনেকে যুক্ত ছিলেন। তবে নায়করাজ রাজ্জাকের চিরবিদায়ের দিন কাঁধে কাঁধ মিলিয়েছিলেন শাকিব ও জায়েদ। অন্যদিকে ২০১৭ সালে যৌথ প্রযোজনায় ছবি নির্মাণ ইসু্য এবং শিল্পী সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে শাকিব খান ও মিশা সওদাগরের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। বিভিন্ন কারণে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন এই নায়ক-খলনায়ক। দীর্ঘদিন তারা একই ছবিতে একসঙ্গে অভিনয় থেকে বিরত ছিলেন। এরপর ২০১৮ সালে ওয়াজেদ আলী সুমন পরিচালিত 'ক্যাপ্টেন খান' ছবির মাধ্যমে তাদের দ্বন্দ্বেরই অবসান ঘটে। তবে কতটা মিটেছে সেটাই বড় প্রশ্ন। শুধুমাত্র ছবিতে অভিনয়ের খাতিরেই তাদের এক হতে দেখা যায়। জায়েদ খান ও ওমর সানীর মধ্যে দ্বন্দ্ব হয় দুই বছর আগে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের সময় থেকে। ভোট কারচুপির অভিযোগ করে চ্যালেঞ্জ ছোড়েন ওমর সানী। পুনরায় ভোট গণনায় ৯টি ভোট বাড়ে ওমর সানীর। গণনা শেষে মৌসুমী-ওমর সানী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেও অভিযোগ তোলেন। মৌসুমী সহসভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন। জায়েদ খান-ওমর সানীর মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়িও কম হয়নি। এখনও তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ভীষণ পর্যায়ে। কোনো অনুষ্ঠানে একজন থাকলে আরেকজন থাকেন না। এ নিয়ে বিপাকে পড়তে হয় অনুষ্ঠান আয়োজকদের। গত বছরের শিল্পী সমিতির ইফতার মাহফিলে ওমর সানী ও মৌসুমী কোনো দাওয়াত পাননি বলে অভিযোগ তুলেন ওমর সানী। এ নিয়ে তিনি ফেসবুকে লাইভে আসেন। বিষয়টি অস্বীকার করে জায়েদ খান জানান, তাদের ঠিকানায় দাওয়াত কার্ড পৌঁছে দেয়া হয়েছে। এর আগে কুলি খ্যাত নায়ক ওমর সানীর সঙ্গে দ্বন্দ্ব দেখা দেয় শাহরিয়ার নাজিম জয়ের সঙ্গে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে কথা। শাহরিয়ার নাজিম জয়ের একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে 'অসম্মানিত' বোধ করেছিলেন ওমর সানী ও মৌসুমী। ওমর সানী ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এমনকি জয়ের আচরণ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। এরপর সবাই জানতো জয়ের সঙ্গে ওমর সানী দূরত্ব কতটুকু। ঢাকাই ছবির জনপ্রিয় নায়িকা চিত্রনায়িকা পপি ও মাহিয়া মাহীর মধ্যে স্নায়ু যুদ্ধ চলছে জায়েদ খানকে নিয়ে। পপি ও জায়েদ খানের প্রেমের খবর বেশ কয়েক বছর ধরেই সিনেমা পাড়ার মানুষদের মুখে মুখে শোনা গেছে। এখন শোনা যাচ্ছে পপির সঙ্গে জায়েদ খানের প্রেমের ভাটা পড়েছে। তিনি এখন চুটিয়ে প্রেম করছেন মাহীর সঙ্গে। ঢাকাই ছবির জনপ্রিয় এ নায়িকার সঙ্গে জায়েদ খানের কিছু ছবিও এসেছে মিডিয়ায়। বেশির ভাগ ছবিই রয়েছে কোনো না কোনো অনুষ্ঠানের। তাদের একসঙ্গে নানা অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার ঘটনা থেকেই লোকমুখে রটে যায় জায়েদ খান ও মাহীর প্রেমের কথা। তবে প্রেমের সম্পর্ক নাকচ করে দিয়ে জায়েদ খান বলেন, 'এগুলো মিথ্যা, গুজব, বানোয়াট। কারও সঙ্গে কাজ করলে, স্টেজে উঠলেই মানুষ বলে বেড়ায় প্রেম করছি। দেখেন ঢাকাই ছবির কোনো নায়িকার সঙ্গেই আমার কোনো প্রেম নেই। অতীতেও ছিল না।' ঢাকাই ছবির অন্যতম সফল জুটি শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস। তাদের পর্দার রসায়নের বাস্তব রূপ নেয় ব্যক্তি জীবনেও। দুজনে গোপনে বিয়ে করেন ২০০৮ সালে। এরপর চলচ্চিত্র থেকে অপু বিশ্বাস অনেকটাই দূরে থাকেন। কিন্তু বছর দুই আগে হুট করে পর্দায় আসেন অপু। বিয়ে ও সন্তানের বিষয়টি প্রকাশ করেন তিনি। শাকিবের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগও করেন অপু। এতে শাকিব খান ক্ষেপে যান তার ওপর। পরে দুজনের মধ্যে আপস হলেও বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটে। এ সময়েই চলচ্চিত্রের আগম ঘটে নতুন নায়িকা শবনম বুবলির। শাকিবের সঙ্গে তোলা একটি ছবি বুবলি ফেসবুকে পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছিলেন, 'ফ্যামেলি টাইম'। ক্যাপশনে অগ্নিশর্মা হয়েছিলেন অপু বিশ্বাস। সেই থেকেই দু'জনের বাকযুদ্ধ শুরু। শাকিবকে ঘিরে দু'জনের রশি টানাটানি আবারো শুরু করেন অপু। বুবলি শাকিবকে অপুর কাছ থেকে কেড়ে নিতে চাইছেন এমন অভিযোগও করেন অপু। বুবলি অপুর ঘর ভাঙতে চাইছেন- এমন অভিযোগও করেন অপু। সেই বিতর্কে ঘি ঢাললেন বুবলিও। তাদের মনোমালিন্যের কথা সবারই জানা। এখনো অপু-বুবলির মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে।