প্রাণবন্ত আঁখি আলমগীর

প্রকাশ | ১৭ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
আঁখি আলমগীর
তারার মেলা রিপোর্ট মাঝখানে কিছুটা বিরত থাকলেও দু'তিন বছর ধরে তুমুল ব্যস্ত সময় পার করছেন কণ্ঠশিল্পী আঁখি আলমগীর। তবে তার এই ব্যস্ততা স্টেজ শো'কে ঘিরে। শুধু দেশেই নয়, কদিন পর পরই দেশের বাইরে কনসার্ট করতে যাচ্ছেন তিনি। আঁখি আলমগীর নেচে গেয়ে শো'কে এতটাই প্রাণবন্ত করে তোলেন, যা দর্শক শ্রোতাদের মনে অন্যরকম এক উন্মাদনা সৃষ্টি করে। এদিকে শীত মৌসুম আসার আগেই যেন ধুম পড়েছে কনসার্টের। আর স্টেজ মৌসুম শুরু হওয়া মানেই আঁখির নাওয়া-খাওয়া ভুলে কেবল কনসার্টে কনসার্টে গান গাওয়া। আঁখি আলমগীর জানান ঢাকা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ আরও বেশকিছু জায়গায় তাকে এরই মধ্যে স্টেজ শো'তে অংশ নিতে হবে। গেল সপ্তাহে নেপালে একটি কর্পোরেট শো'তে অংশ নিয়ে এসেছেন। শো শেষে নিজের মতো করে নেপালের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করেছেন। পাশাপাশি নতুন গানও করছেন তিনি। এরই মধ্যে দুটি নতুন গানের কাজ প্রায় শেষ করেছেন আঁখি আলমগীর। নিজের ব্যস্ততা প্রসঙ্গে আঁখি আলমগীর বলেন, 'আমি আমার সংগীতময় জীবন নিয়ে বেশ ভালো আছি। স্টেজ মৌসুম চলে আসায় ব্যস্ততা বেড়ে গেল। সবার দোয়ায় দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে আমি একই রকমভাবে স্টেজ শো'তে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছি। এটাও আলস্নাহর রহমত। ব্যস্ততাই প্রাণবন্ত থাকার উপায়, তাই ব্যস্ততা আমি দারুণ উপভোগ করি, কোনো ক্লান্তি আসে না।' আঁখির সর্বশেষ প্রকাশিত গান 'ল্যায়লা' যা ডিএমএস থেকে প্রকাশিত হয়। রুনা লায়লার সুরে আলমগীর পরিচালিত 'একটি সিনেমার গল্প' সিনেমায় গাজী মাজহারুল আনোয়ারের লেখা 'গল্প কথার ঐ কল্পলোকে' গানটি গেয়ে দারুণ প্রশংসা পেয়েছেন আঁখি আলমগীর। তবে স্টেজ শো'তে গান করতেই বেশি ভালো লাগে আঁখির। কারণ হিসেবে তিনি জানান, 'আমি গত ২০ বছর ধরেই স্টেজে একই গতিতে পারফর্ম করছি। এখন হয়তো প্রচার মাধ্যম বেশি, তাই প্রকাশ পাচ্ছে বেশি। পাশাপাশি ফেসবুক রয়েছে। আগেতো এতসব কিছু প্রকাশ হতো না। এখন বিভিন্ন স্থানে স্টেজ শো করতে গেলে ফেসবুকে ছবি দেই। তাই মানুষও বেশি জানছে। তবে দীর্ঘ সময় ধরে স্টেজে কাজ করে আমি দর্শক শ্রোতাদের যে ভালোবাসা পেয়েছি সেটা অমূল্য। এটা ভাগ্যবানদের ক্ষেত্রেই হয়। এভাবেই যতদিন বেঁচে থাকব ততদিন স্টেজে গান করে যেতে চাই। আঁখি আলমগীর বলেন, 'গান গেয়ে মানুষের অনেক ভালোবাসা, সম্মান পেয়েছি। এরচেয়ে বড় পাওয়া আর কী হতে পারে? প্রাপ্তির জায়গায় অপ্রাপ্তি এতটাই কম সেটা বলার প্রয়োজন মনে করছি না। যখন ফিল্মে গান গাইব গাইব করেছি তখন আমাদের বাসায় প্রায়ই ঘরোয়াভাবে গানের আসর বসত। যেখানে প্রায়ই সৈয়দ আব্দুল হাদী আঙ্কেল, সুবীর নন্দী আঙ্কেল আসতেন। আমার মা যেহেতু গান লিখতেন, বাবা অনেক গানপ্রিয় একজন মানুষ। একসঙ্গে বসে গান হতো। এমন এক ঘরোয়া অনুষ্ঠানে সুবীর আঙ্কেলকে বাবা বললেন, আমার মেয়ের গান শোনেন, যদি মনে হয় আমার মেয়ে গান গাইতে পারে, গান গাইবার যোগ্য মনে হয় তাহলে ওকে গান গাইতে দেব। যদি না হয় তাহলে দেব না। এখনতো স্কুলে পড়ে, কলেজে উঠলে গান গাইতে দেব। একটা পুরনো গান গেয়েছিলাম সেদিন। আমার গান শুনে সুবীর আঙ্কেল বললেন, আপনি কলেজ পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন? ততদিনে তো একটা ভালো শিল্পীকে দেশ হারাবে। এ রকম আরও অনেক গুণী শিল্পীর কাছ থেকে উৎসাহ পেয়েছি। এটা অনেক বড় তৃপ্তি।' বর্তমানের অডিও বাজার নিয়ে আঁখি বলেন, 'এখন অডিও ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা ভালোর দিকে যাচ্ছে। কারণ গান থেকে আয়ের অনেক মাধ্যম তৈরি হয়েছে। এখনতো ইউটিউব থেকেও আয় আসছে। আমার মনে হয় সামনে অবস্থা আরো ভালোর দিকে যাবে। তরুণরা অনেক ভালো করছে। অনেক ভালো ভালো শিল্পী দেখছি। আমি মনে করি মেধাবীদের সুযোগ তৈরি করার দায়িত্ব সবার। তবে অন্যের গান গাওয়ার চেয়ে নিজের মৌলিক গানের উপর জোর দিতে হবে বেশি। একজন শিল্পীর বড় অর্জন হচ্ছে তার মৌলিক গান। অন্যের গান কাভার করাটা দোষের কিছু নয়। তবে আগে মৌলিক গানের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ মৌলিক গান শিল্পীর নিজস্বতা বহন করে।' একই সঙ্গে কণ্ঠশিল্পী, উপস্থাপিকা, অভিনয় শিল্পী এবং মডেল। তবে কেবলমাত্র একটা পরিচয় নিয়েই থাকতে চান আঁখি। বলেন, আমি যেহেতু গানের শিল্পী তাই আমার প্রথম পরিচয় একজন সংগীতশিল্পী। সংগীতশিল্পী হিসেবে শ্রোতারা আমাকে প্রথমে ভালোবাসে। অভিনয় তেমন একটা করি না। হয়তো আমার গানে আমি অভিনয় করেছি। মায়ানগর এবং এককাপ চা ছবি দুটিতে অভিনয় করেছি। এটাকে অভিনয় বলা যায় না। আর মডেলিংটা আমি খুবই এনজয় করছি। মডেলিং করতে ভীষণ ভালো লাগে। বিজ্ঞাপনের মডেল হিসেবেও ভক্তরা আমাকে গ্রহণ করেছে। এখন বলা যায় দর্শক শ্রোতারা দুটোতেই আমাকে গ্রহণ করেছে এবং তাদের ভালোবাসায় আমি এগিয়ে যাচ্ছি।'