এখনও ঝলমলে সজল

আমি যে ধরনের গল্প খুঁজি, যেসব গল্প পেলে সত্যিকার অর্থেই উৎফুলস্ন হয়ে ওঠি কিংবা নিজের মধ্যে এক ধরনের চ্যালেঞ্জ অনুভব করি, 'জিন' তেমনই একটি ছবি। বড়পর্দা মানেই বড় ক্যানভাস। এখানে যুতসই গল্প, ভালো ব্যানার ও জাঁদরেল পরিচালক না হলে জমে না। সেদিক বিবেচনা করলে 'জিন' একটি প্যাকেজ। এমন একটি দলের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। যাদের সঙ্গে কাজ করে আমার অভিনয়জ্ঞান সমৃদ্ধ হয়েছে, তাদের মধ্যে নাদের ভাই অন্যতম। তার সঙ্গে শুরু থেকেই আমার চেনাজানা। তিনি নিজেও অসাধারণ অভিনেতা আর পরিচালনার হাতও বেশ পাকা।

প্রকাশ | ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

রায়হান রহমান
আব্দুন নূর সজল
ছোটপর্দায় যত নতুন নতুন মুখই আসুক না কেন, এখনও আপন আলোয় উজ্জ্বল হয়ে জ্বলছেন রোমান্টিক নাটকের অপরিহার্য অভিনেতা আব্দুন নূর সজল। দীর্ঘদিন ধরেই সিনিয়র এবং জুনিয়র অভিনেত্রীদের বিপরীতে সাফল্যের সঙ্গে অভিনয় করে আসছেন এ তারকা। ছোটপর্দার গন্ডি থেকে বেরিয়ে মাঝে মাঝেই বড়পর্দায় দেখা যায় তাকে। সেই ধারাবাহিকতায় দীর্ঘ ৫ বছর পর ফের চলচ্চিত্রের খাতায় নাম লিখিয়েছেন তিনি। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ভালোবাসা দিবসেই রুপালি পর্দায় দেখা মিলবে তার। ছবিটির নাম 'জিন'। এরই মধ্যে ছবিটির শুটিং শেষ করেছেন সজল। জাজ মাল্টিমিডিয়ার ব্যানারে নির্মিতব্য ছবিটি পরিচালনা করছেন নাদের চৌধুরী। এতে তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন সময়ের আলোচিত নায়িকা পূজা চেরী। আর এ ছবির মাধ্যমেই প্রথমবারের মতো ঢাকাই চলচ্চিত্রে পূর্ণাঙ্গ 'ভৌতিক' ছবির নির্মাণ শুরু হলো। স্বাভাবিকভাবেই সিনেমাপ্রেমীদের আগ্রহের কমতি নেই। দর্শকের এমন আগ্রহের কথা জেনেই 'জিন' ছবিতে অভিনয় করেছেন অভিনেতা আব্দুন নূর সজল। কাজটা সহজও ছিল না। গল্পের প্রতিটি পরতে পরতে সাজানো হয়েছে সাসপেন্স আর নাটকীয়তা। সেসব দর্শকের সামনে যুক্তিসঙ্গতভাবে উপস্থাপন করতে বেশ হাড়খাটুনিও গেছে এ অভিনেতার। দুর্গম লোকেশনে পুরনো বাড়িতে রাতভর অভিনয় করতে হয়েছে। তবুও অভিনয়ে এক বিন্দু ছাড় দিতে নারাজ তিনি। মোদ্দাকথা, গল্পের প্রতিটি সংলাপকে বাস্তবিক করতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন এ অভিনেতা। অবশ্য এমন ভারী গল্পের সাবলীল উপস্থাপনা সম্ভব হয়েছে পরিচালক নাদের চৌধুরীরর জন্যই- অকপটে সেটাও স্বীকার করলেন সজল। সজলের ভাষ্য, 'আমি যে ধরনের গল্প খুঁজি, যেসব গল্প পেলে সত্যিকার অর্থেই উৎফুলস্ন হয়ে ওঠি কিংবা নিজের মধ্যে এক ধরনের চ্যালেঞ্জ অনুভব করি, 'জিন' তেমনই একটি ছবি। বড়পর্দা মানেই বড় ক্যানভাস। এখানে যুতসই গল্প, ভালো ব্যানার ও জাঁদরেল পরিচালক না হলে জমে না। সেদিক বিবেচনা করলে 'জিন' একটি প্যাকেজ। এমন একটি দলের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। যাদের সঙ্গে কাজ করে আমার অভিনয়জ্ঞান সমৃদ্ধ হয়েছে, তাদের মধ্যে নাদের ভাই অন্যতম। তার সঙ্গে শুরু থেকেই আমার চেনাজানা। তিনি নিজেও অসাধারণ অভিনেতা আর পরিচালনার হাতও বেশ পাকা।' একটু দম নিয়ে আবারও বলতে শুরু করেন তিনি। বলেন, 'শুধু জিনের বেলায়-ই নয়, যে কোনো কাজ শুরু করার আগে দর্শকের বিষয়টি ভাবনায় থাকে। তারা কি পছন্দ করবে, কি করবে না- সেসবও আমাদের পরিকল্পনার রাখতে হয়। তবে কাজ করে কখনোই তৃপ্তি মিটে না। কারণ, একবার তৃপ্তি মিটে গেলে ভালো কিছু করার ইচ্ছেটাই মরে যাবে। তাই সবসময়ই চাই একটি শট আরও ভালোভাবে দিতে। এরপরও দর্শকের পছন্দ হবে কি হবে না সেটা তাদের ওপর নির্ভর করে। আমরা শুধুমাত্র চেষ্টাই করে যেতে পারি।' সজল আরও বলেন, 'দীর্ঘদিন ধরে অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত আছি। তবে জিনে কাজ করতে গিয়ে এমন সব অভিজ্ঞতা হয়েছে- তা আগে কখনো হয়নি। ছোট একটি ঘটনা বলি- 'এমন এক জাগায় শুটিং করতে হবে, যেখানে নৌকা ছাড়া যাওয়ার কোনো উপায় নেই। বাধ্য হয়ে তাই করা হলো। শুটিং শেষ হতে হতে গভীর রাত। ফিরতেও হবে সেই নৌকা দিয়ে। ছোট একটি নদী। এপার থেকে ওপার যেতে মিনিট পাঁচেক সময় লাগে। ভয়ানক কথা হলো, ওই রাতে মাঝি ভাই কিছুতেই নৌকা ভিড়াতে পারছিলেন না। অর্থাৎ নদীর পাড় খুঁজে পাননি। এমন অদ্ভুত ঘটনা বিশ্বাস হওয়ার মতো নয়।' সজলকে সর্বশেষ বড়পর্দায় দেখা গেছে 'রান আউট' সিনেমায়। মৌসুমী নাগের সঙ্গে জুটিবেঁধে সেলুলয়েডে দেখা দিয়েছিলেন তিনি। যদিও ব্যবসায়িকভাবে সুবিধা করতে পারেনি ছবিটি। তারপর মাহিয়া মাহীর সঙ্গে জুটিবেঁধে শুরু করেছিলেন 'হারজিৎ' নামের একটি সিনেমা। বদিউল আলম খোকনের এ সিনেমার কাজ এখনও শেষ হয়নি। সজলের মতে, 'শিগগিরই এ সিনেমার কাজও শেষ হবে।' গত ঈদে বেশ কয়েকটি নাটকে কাজ করে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছেন এ অভিনেতা। সম্প্রতি 'পাফ ড্যাডি' নামের একটি ওয়েব সিরিজেও কাজ করেছেন তিনি। শিগগিরই দশ পর্বের এ সিরিজটি প্রচার হবে। তবে নতুন বছরের শুরুতেই সিনেমাপ্রেমীরা যে সজল ধামাকে দেখতে যাচ্ছেন- তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।