অস্কারের পর এবার গোল্ডেন গেস্নাব

প্রকাশ | ০৯ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
অলিভিয়া কোলম্যান
তারার মেলা ডেস্ক পুরস্কারে পেছনে নন বরং পুরস্কারই যেন তার পিছু পিছু হাঁটে। মার্কিন তারকা অলিভিয়া কোলম্যানকে নিয়ে এমন কথা প্রায়ই শোনা যায়। সিনেদুনিয়ার সবচেয়ে ঐহিত্যবাহী পুরস্কারের প্রায় সবগুলোই বগলদাবা করেছেন এ অভিনেত্রী। দিন যতই যাচ্ছে, পুরস্কারের সংখ্যা আরও বাড়ছে। গত বছরের কথাই ধরা যাক, দ্য ফেভারিট ছবিতে দুর্দান্ত অভিনয়ের জন্য পেয়েছেন সেরা অভিনেত্রী হিসেবে অস্কার। কদিন বাদেই একই ছবির জন্য পেয়েছেন ব্রিটিশ অ্যাকাডেমি অব ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন আটর্স (বাফটা) পুরস্কার। যাকে অস্কারের পরেই বিবেচনা করা হয়। আর চলতি বছরের শুরুতেই পেলেন ঐতিহ্যবাহী গোল্ডেন গেস্নাব পুরস্কার। 'দ্য ক্রাউন ড্রামা' সিরিজের জন্য সেরা টিভি অভিনেত্রীর পুরস্কার উঠেছে অলিভিয়ার হাতে। বয়সের নাটাই পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই, তবুও ক্ষুরধার অভিনয়ে মাতাচ্ছেন বিনোদন বিশ্ব। পুরস্কার কিংবা সম্মাননার জন্য এক ধরনের স্নায়ুযুদ্ধ চলে হলিউড অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের মধ্যে। যার ঝাঁপিতে যত বেশি পুরস্কার, তিনি তত বড় শিল্পী হিসেবে বিবেচিত হন। পশ্চিমা বিশ্বে নাকি এভাবেই হয় গুণীর বিচার করা। হাতেগোনা কয়েকজন আছেন, যাদের ধ্যান ধারণা, চিন্তা থাকে চরিত্র নিয়ে। যুদ্ধ করেন নিজের সঙ্গেই। চান, তাদের কাজ নিয়ে আলোচনা হোক। দর্শক তাদের মনে রাখুন কাজের জন্য, পুরস্কারের জন্য নয়। সেই গুটি কয়েক মানুষের তালিকা করতে গেলে সবার উপরেই রাখতে হবে অলিভিয়া কোলম্যানকে। পুরো নাম সারা ক্যারোলিন অলিভিয়া কোলম্যান। নামের আকার বড় হওয়ায় নিজেই কাটছাঁট করে ছোট করেছিলেন। আর ছোট নামেই করেছেন বাজিমাত। শুরু খুব বেশি সুখকর ছিল না। প্রথম দিকে টিভি সিরিজের জন্য বেশ কয়েকবার অডিশন দিয়ে ব্যর্থও হয়েছেন তিনি। ভাগ্য খুলে 'পিপ শো' নামের একটি হাস্যরসাত্মক সিরিজে অডিশন দেওয়ার পর। পরিচালকের হঠাৎ করেই মনে ধরে অলিভিয়াকে। সুযোগ দেন তাকে অভিনয়ের। ব্যাস, দশে দশ। 'পিপ শো' ধারাবাহিকটি চ্যানেল ফোরে প্রচারিত হলো মার্কিনিদের মনে আলোড়ন তোলে। চমৎকার অভিনয়ের জন্য খ্যাতি পান অলিভিয়া। ২০০২-২০১৫ সাল পর্যন্ত টানা অভিনয় করেন এ সিরিজে। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি এ অভিনেত্রীকে। এরপর আরও বেশি কয়েকটি টিভি সিরিজ তার জনপ্রিয়তা পায়। তারমধ্যে গ্রিন উইং, বিউটিফুল পিপল, রেভ, টুয়েন্টি টুয়েলভ ও দ্যাট মিচেল অ্যান্ড ওয়েব লুক। টুয়েন্টি টুয়েলভ এ অভিনয়ের জন্য সেরা রম্য অভিনেত্রী হিসেবে বাফটা পুরস্কার পেয়েছেন। শুধু কি হাস্যরসাত্মক? উত্তর হবে না। সৃজনশীল এ অভিনেত্রী যে কোনো চরিত্রের সঙ্গেই নিজেকে মানিয়ে নিতে পটু। তার প্রমাণ পাওয়া গেছে 'ব্রডচার্চ' সিরিজে। গোয়েন্দাভিত্তিক আইটিভির এ ধারাবাহিকে তিনি এলি মিলার চরিত্রে অভিনয় করেও ২০১৪ সালেও সেরা অভিনেত্রী হিসেবে বাফটা পুরস্কার পেয়েছেন। এরপরের বছর একই ধারাবাহিকের জন্য আন্তর্জাতিক এমি পুরস্কারও বাগিয়ে নিয়েছেন। ধারাবাহিকতা ছিল পরের বছরেও। অলিভিয়া হঠাৎ করেই জ্বলে ওঠা কোনো অভিনেত্রী নন। প্রতিবছরই নিজেকে প্রমাণ করে যাচ্ছেন তিনি। বিবিসির নাইট ম্যানেজারে অভিনয় করেও পেয়েছেন একাধিক পুরস্কার। সম্প্রতি একটি ইংরেজি দৈনিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অলিভিয়া বলেন, 'পুরস্কার রাখার জন্য আলাদা একটি রুম রেখেছি। সত্যি বলতে এত পুরস্কার নিতে নিতে আমি ক্লান্ত। তবে অভিনয় আমাকে ক্লান্ত করতে পারেনি। মৃতু্যর আগমুহূর্ত পর্যন্ত সুযোগ থাকলে অভিনয় করে যাব। এ ক্ষেত্রে আমার কোনো কৃপণতা নেই।' এতো গেল টিভি পর্দার হিসাবনিকাশ। অলিভিয়া মাতিয়েছেন বড় পর্দাও। ২০১১ সালে তার অভিনীত 'কনসিডাইনের টাইরানোসার' চলচ্চিত্র দুনিয়ায় বেশ সমাদৃত হয়। এরপরের হিসাব আরও লম্বা। হট ফাজ, দি আয়রন লেডি, হাইড পার্ক অন হাডসন, লক, দ্য থার্টিন্থ টেল, ইয়োর্গোস ল্যান্থিমোসের দ্য লবস্টার অন্যতম। তবে দ্য লবস্টার ছবিতে রানি অ্যান চরিত্রে অভিনয়ের জন্য দুনিয়াব্যাপী তিনি আলোচিত হোন। এ চরিত্রটির জন্য তিনি গেস্নাডেন গেস্নাব, অস্কার ও বাফটা পুরস্কার পান। একাধিকবার ঐতিহ্যবাহী সব সিনে অ্যাওয়ার্ড নিজের করে এ অভিনেত্রীকে বলিউড জীবন্ত কিংবদন্তীর অ্যাখ্যাও দিয়েছেন।