মিস্টার অ্যান্ড মিসেস মুখার্জির

ভালোবাসাবাসি

উদ্ভট, অদ্ভুত ও বিচিত্র এক অনুভূতির নাম ভালোবাসা। ছোট্ট এই শব্দটির বিশালতার পরিমাপ কিংবা পরিধি নির্ণয় করা সম্ভব নয়। এখন পর্যন্ত ভালোবাসার সঠিক কোনো সংজ্ঞা আবিষ্কার করা যায়নি। যার যার কল্প চিন্তাই তার তার ভালোবাসার অভিজ্ঞতা হয়ে দাঁড়ায়। কেউ বলে ভালোবাসা করতে হয় না, হয়ে যায়। কেউ বা বলে ভালোবাসার কথা প্রকাশ না করলে পরবর্তী সময়ে হাতছাড়া হয়ে যায়। আবার কিছু ভালোবাসা বলি-বলি করেই নিঃশেষ হয়ে যায়। আগামীকাল বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। সারা বিশ্বের মতো আমাদের দেশেও প্রতিবছর সানন্দে ভালোবাসা দিবস পালিত হচ্ছে। টিভি-চ্যানেলের পাশাপাশি পত্রপত্রিকাগুলোও থাকছে ভালোবাসা দিবসের বিশেষ আয়োজন। পিছিয়ে নেই তারার মেলাও। সবাইকে ভালোবাসা দিবসের শুভেচ্ছা-

প্রকাশ | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

তারার মেলা রিপোর্ট
মিথিলা ও সৃজিত মুখার্জি
শুরুতেই প্রশ্ন জাগছে ভালোবাসা কি প্রেম? পন্ডিতরা বলেন, ভালোবাসার অনেকগুলো অংশের একটি অংশ হচ্ছে প্রেম। তবে আমাদের দেশের 'ভ্যালেন্টাইন ডে' পালনের ধরন দেখে মনে হয়, ভালোবাসা মানেই প্রেম কিংবা রোমান্স। তবে এসব তর্ক-বিতর্কে না গিয়ে তথাকথিত ভালোবাসা দিবস নিয়েই আলোচনা করা যাক। কিশোর কুমারের গাওয়া গানের মতোই বলতে হয়, 'ভালোবাসা ছাড়া আর আছে কি...! সে তো এক স্বপ্নীল মধুময় অনুভূতি। কখন কাকে কিভাবে জড়িয়ে ফেলে বলা মুশকিল। ভালোবাসা দিয়েই সবকিছু জয় করা যায়। পাথরেও নাকি ফুল ফোটানো যায়। তা না হলে দুই দেশের, দুই ধর্মের অসমান দুই মানুষের হাত ভালোবাসা ছাড়া কি আর এক হতো! এখানেই ভালোবাসার মাহাত্ম্য। গত কয়েক মাস ধরে বলতে গেলে বাংলাদেশের সব শ্রেণির মানুষের কাছে একটা মানুষের নাম ভীষণভাবে আলোচিত হয়ে আসছে, নাম তার মিথিলা। দেশের ডিজিটাল থেকে অ্যানালগ- কোন প্রজন্মের মানুষের কাছে মিথিলা আর অপিচিত নয়! খুব কাছাকাছি সময়ে তার নামের সঙ্গে আর একটা উলেস্নখযোগ্য মানুষের নাম যখন স্থায়ীভাবে জোড়া লাগতে যাচ্ছিল তখন আলোচনার গতিপথ পুরো ৩শ' ষাট ডিগ্রিতে ঘুরে যায়। বলে কি, কলকাতার প্রখ্যাত চিত্র পরিচালক এবং অভিনেতা সৃজিত মুখার্জি যে কি না টালিগঞ্জের সব থেকে এলিজেবল ব্যাচলর হিসেবে সুপরিচিত, সে কি না তার দেশে মিথিলার মতো একজন আনকোরা অভিনেত্রীকে চূড়ান্ত বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষ যারা সৃজিত সম্পর্কে খোঁজখবর রাখেন তাদের সত্যিই চোখ কপালে! আর যারা তার সম্পর্কে জানেন না, তারা খোঁজ নিয়ে রীতিমতো 'হঁ্যা' হয়ে রইলেন। এই কথার মধ্যে মোটেই মিথিলাকে খাট করার চেষ্টা করা হচ্ছে না। মিথিলা পেশায় চাকরিজীবী হলেও সাধারণ মানুষ তাকে একজন অভিনেত্রী বা পাবলিক ফিগার হিসেবেই চেনেন। এ ছাড়া মিথিলার প্রাক্তন স্বামী বাংলাদেশের একজন নামকরা সেলিব্রেটি সব মিলিয়ে তার নামটি বাংলাদেশে বহুলচর্চিত একটি শব্দ! প্রায় একযুগ সংসার করে গত তিন বছর আগে তাহসান-মিথিলার বিচ্ছেদ ঘটে। তাদের সংসারে আইরা নামে একটা মিষ্টি সন্তানও রয়েছে। মিথিলার সিঙ্গেল জীবন নিয়েও ছিল অসংখ্য মানুষের চুলচেরা বিশ্লেষণ। কারণ, তাহসান-মিথিলার প্রেম এবং সংসার ছিল প্রজন্মের বহু মানুষের কাছে একটা ইতিবাচক দৃষ্টান্ত। নিজেদের ব্যক্তিগত টানাপড়েনে তাদের বিচ্ছেদ ঘটলেও তাদের ভক্তকুল এটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি। পরবর্তী সময়ে বিশেষ করে, মিথিলার ওপর ভক্তদের নজর ছিল ভীষণ কৌতূহলের। বছর দেড়েক আগে কোনো এক মিউজিক ভিডিওর কাজে মিথিলা কলকাতায় যায়। সেখানে মিথিলার বন্ধু এবং সৃজিতের বন্ধুদের মধ্যে একটা কমন বন্ধুত্ব ছিল যার সূত্রধরে তাদের পরিচয়। আস্তে আস্তে তাদের পরিচয় গাঢ় হতে থাকে। সম্পর্কের অঙ্কুর গজাতে থাকে, সঙ্গে গজাতে থাকে প্রশ্নের ইঙ্গিতও। সম্পর্ক যখন মাখো মাখো, তখন সরাসরি প্রশ্ন ওঠে, কি সম্পর্ক তাদের মধ্যে? উত্তর আসে জাস্ট ফ্রেন্ড! এরপর আগে মিথিলার পরিবার থেকে গণমাধ্যমকে জানানো হয়, ডিসেম্বরে সৃজিত-মিথিলা বিয়ে করতে যাচ্ছেন। ভারত-বাংলাদেশের গণমাধ্যমে এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর কেউ কেউ তো বলেই ফেলেছিল এসব শুধুই আওয়াজ! কাজের কাজটি হবে না। সাধারণের এমন ধারণা করা সত্যিকার অর্থে অস্বাভাবিক নয়। কারণ সৃজিতের সঙ্গে তার দেশের অন্য অভিনেত্রীদের সঙ্গে প্রেমের খবর বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে টক-ঝাল-মিষ্টি রূপে প্রকাশিত হয়েছে। থাক সেসব। এখন সেসব অপ্রয়োজনীয়। বিয়ের পর প্রথম ভালোবাসা দিবস বলে কথা। যদিও তাদের ভালোবাসা দেখে ধরে নেয়া যায়, তাদের কাছে ভালোবাসার যেন নির্দিষ্ট কোনো দিনক্ষণ নেই। প্রতিদিনই ভালোবাসা দিবস। বিয়ের পর থেকে অভিনন্দন আর আশির্বাদে যেমন ভাসছেন মিস্টার অ্যান্ড মিসেস মুখার্জি, তেমনি দুরন্ত ও দুর্বার ভালোবাসা-বাসিতে মেতে উঠেছেন তারা। দক্ষিণ কলকাতায় লেক গার্ডেনসে বিয়ের একদিন পর জেনেভায় যান সৃজিত মুখার্জি আর মিথিলা। ৬ ডিসেম্বর জমকালো বিয়ে পর্ব শেষ করেই ১৪ ডিসেম্বর গ্রিসে উড়াল দেন হানিমুনের উদ্দেশ্যে। সেখানকার বিভিন্ন লোকেশনে তাদের রোমান্টিক মুহূর্তের ছবি ক্যামেরাবন্দি করে ক্ষণে ক্ষণেই যেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দিয়েছেন মিথিলা। ২১ ডিসেম্বর ঢাকায় ফিরে আসেন মিথিলা। এরপর থেকে এই ঢাকা, এই কলকাতা- এভাবেই দিন কাটছে সৃজিত-মিথিলার। বিয়ের পর প্রথম ভালোবাসা দিবস তাই উদযাপনের দিক থেকেও সৃজিত-মিথিলা কমতি রাখবেন না হয়তো। এদিন কি উপহার দিচ্ছেন তারা একে অপরকে? মিথিলা জানান, আমাদের একসঙ্গে থাকার দিনগুলোই ভ্যালেন্টাইন ডে। তাই সৃজিত আমায় যা দিয়েছে সবই ভ্যালেন্টাইন গিফট। আমি আর সৃজিত সময় খুঁজে বেড়াই। এই ভালোবাসার দিনে আমার মনে হয় সৃজিত আর আমি যে উপহার একে অপরকে দিতে চাই তা হলো সময়। এই অভিনেত্রী বলেন, 'সময় পেলেই এক-দু'দিনের জন্য সৃজিতের সঙ্গে দেখা করে আসি। ও চলে আসে। আর এই একসঙ্গে থাকার দিনগুলোই আমার ভ্যালেন্টাইন ডে'।