বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সময় এখন লুইপার

তরুণ প্রজন্মের আলোচিত কণ্ঠশিল্পী জিনিয়া জাফরিন লুইপা। ২০১০ সালে চ্যানেল আই সেরা কণ্ঠে পঞ্চম হয়েছিলেন। কিন্তু তার সময়ে যারা চ্যাম্পিয়ন এবং দ্বিতীয়, তৃতীয় হয়েছিলেন তারা কেউই গানে পেশাগতভাবে সম্পৃক্ত নন। খোঁজও নেই তাদের। কিন্তু লুইপা তার অসাধারণ গায়কি এবং গানে ধারাবাহিক অধ্যাবসায় দিয়ে সংগীতাঙ্গনের একজন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীতে নিজেকে পরিণত করেছেন। যতই দিন যাচ্ছে গানে গানে লুইপার ব্যস্ততা ততই বাড়ছে। নিয়মিত মঞ্চে, টিভিতে গান করছেন। গান ও গানের নানা বিষয়ে কথা হলো তার সঙ্গে। লিখেছেন - মাসুদুর রহমান
নতুনধারা
  ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০
আপডেট  : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৩:০৪
লুইপা

তারার মেলা: মনে হয় গানে প্রচুর ব্যস্ততা যাচ্ছে? লুইপা: হ্যাঁ, গানে প্রচুর ব্যস্ত সময় পার করছি। স্টেজ শো নিয়েই ব্যস্ততা বেশি। গত নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে, চলবে মার্চের শেষ পর্যন্ত। মাসের ৩০ দিনের মধ্যে প্রায় ২৫ দিনই আমাকে স্টেজ শো করতে হচ্ছে। মার্চের পুরো সময়টা যেন দম ফেলার সময় নেই। তবে মার্চের পর স্টেজ শো কমে আসবে। আসলে শীতের এই সময়টা কনসার্টের মৌসুম তাই, শিল্পীদের এই সময়ে প্রচুর কনসার্টে ব্যস্ত থাকতে হয়।

তারার মেলা: কোন ধরনের প্রোগ্রামের প্রস্তাব বেশি পান?

লুইপা: ইদানীং প্রশাসনিক প্রোগ্রামগুলো বেশি করছি। র‌্যাবের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রোগ্রামগুলো করেছি। পুলিশের আয়োজনে বেশ কিছু প্রোগ্রাম করেছি। যেহেতু মুজিববর্ষ তাই এ উপলক্ষে স্টেজ প্রোগ্রামের ব্যস্ততা বেড়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন জেলায় প্রশাসনের উদ্যোগে প্রোগ্রাম করতে হচ্ছে। আগামী ১৭ মার্চে ঝালকাঠিতে জেলা প্রশাসকের আয়োজনে অনুষ্ঠান আছে। অন্যদিকে টিভি অনুষ্ঠানও করছি। লাইভ ও রেকর্ডিং দুটোই। তবে স্টেজ প্রোগ্রামের জন্য টিভি অনুষ্ঠানে কম সময় দিচ্ছি। মার্চের পর টিভি প্রোগ্রাম বেড়ে যাবে।

তারার মেলা: তাহলে কি স্টেজ করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন?

লুইপা: সত্যি বলতে স্টেজ শো করতেই আমার বেশি ভালোলাগে। এতে সরাসরি দর্শকদের প্রতিক্রিয়া জানা যায়। দর্শকরা কোন গানটি গ্রহণ করছে আর কোনটি গ্রহণ করছেন না তা সঙ্গে সঙ্গে বুঝা যায়। এ জন্য অনুষ্ঠানের ধরন ও দর্শকদের চাহিদা বুঝতে হয়। কনসার্টে রিকুয়েষ্টের গান ও নিজের পছন্দের গান করা হয়।

তারার মেলা: মৌলিক গান করছেন না? লাইপা: নতুন বছরে বেশ কিছু মৌলিক গানে কণ্ঠ দিয়েছি। এর মধ্যে কিছু গান প্রকাশ হবে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে। লুইপা অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে পর্যায়ক্রমে গানগুলো প্রকাশ হবে। মার্চের পর এগানগুলো নিয়ে পরিকল্পনা রয়েছে। অডিওর সঙ্গে ভিডিও থাকবে। এ ছাড়া অন্য প্রোডাকশনের জন্যও মৌলিক গান করেছি। শুধু যে মৌলিক গানই করি তা নয়, আমাকে কাভার সংও করতে হচ্ছে। যে সব গান দিয়ে মানুষ আমাকে চেনতেছেন।

তারার মেলা: এ সময় মৌলিক গানের কতটুকু অভাব বলে মনে করছেন?

লইপা: আমার মনে হয় মৌলিক গানের অভাব নেই। প্রচুর মৌলিক গান হচ্ছে। তবে ঠিক মতো ডেলিভারি না দেওয়ার কারণে অনেক ভালো গান ভালো হচ্ছে না। অনেক সময় তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে ভালো গান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সময় নিয়ে যতœ করে একটি গান প্রকাশ করা উচিত। আমার মনে হয় প্রচুর গান প্রকাশ না করে কিছু কম করা ভালো। যাতে গানের মান ঠিক থাকে। সংখ্যার চেয়ে মানের দিকে গুরুত্ব দেয়া দরকার।

তারার মেলা: গানের প্রতিবন্ধকতাগুলো কি কি?

লইপা: নানা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একটি গান শ্রোতাদের কাছে আসে। গান লেখা থেকে শুরু করে শ্রোতাদের কাছে আসতে অনেক সময়ই প্রতিবন্ধকতা পেরুতে হয়। তবে আমার কাছে মনে হয় এ সময়ে গানে পৃষ্ঠপোষকতার অনেক অভাব। পৃষ্ঠপোষকতা শুধু আর্থিক সমর্থনই নয়। দিকনির্দেশনাও একটি বড় পৃষ্ঠপোষকতা। দিকনির্দেশনা, পরামর্শ একজন শিল্পীর জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক সময়ে সঠিক পরামর্শের অভাবেও অনেক মেধাবীরা পিছিয়ে যায়। লাইন হারিয়ে ফেলে। একজন শিল্পীর জন্য এটাও একটা বড় পরীক্ষা। এ ছাড়া সংগীতাঙ্গনে সি-িকেটও কাজ করছে। এটাও বড় প্রতিবন্ধকতা।

তারার মেলা: এ সময়ে সংগীতাঙ্গনে সমন্বয়হীনতার অনেক অভাব বলে অভিযোগ রয়েছে ? লুইপা: অভিযোগটি অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। সত্যিই আমাদের মাঝে সমন্বয়তার যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। আগে একটি গানকে কেন্দ্র করে গীতিকার, সুরকার, কণ্ঠশিল্পী ও অন্যান্যের মধ্যে দারুণ সম্পর্ক গড়ে উঠতো। সবার মধ্যে যোগাযোগ ভালো ছিল। পারফেক্ট না হওয়া পর্যন্ত গানটি নিয়ে ঘষামাজা চলতো। কিন্তু এখন একটি গান মেইলে পাঠিয়ে দেয়া হয়। প্রযুক্তির কারণে অনেক কিছু সহজ হচ্ছে আবার আবেগও কমে যাচ্ছে।

তারার মেলা: এখন ফিউশনের ছড়াছড়ি। এতে কি গানের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে না? লুইপা: সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অনেক কিছুরই পরিবর্তন হয়। তবে পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে যাতে মৌলিকত্ব নষ্ট না হয়। ফিউশনের মাধ্যমে পুরনো গানকে নতুনদের মাঝে পরিচয় করিয়ে দেয়া হচ্ছে। নতুনরা জানছে এরকম একটা ভালো গান ছিল। এ বিষয়টাকে আমি ইতিবাচক হিসেবেই দেখছি। অন্যদিকে এটাও ঠিক আসল গানের মৌলিকত্ব ঠিক রাখতে হবে। ফিউশনের নামে যাচ্ছে তাই করা যাবে না।

তারার মেলা: সিনেমার গান কম করছেন কেন? লইপা: সর্বশেষ জয় ভাইয়ের ‘পাপ কাহিনী’তে গান করেছি। আসলে সিনেমার গান খুব একটা করা হয় না। সিনেমায় যে কটি গান করেছি তা আলাদা আলাদা ধরনের গান। সাধারণত যে ধরনের গান করা হয় না সেই ধরনের গানও করেছি সিনেমায়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে