উড়ন্ত সময়ে দুরন্ত প্রেম

এতদিন বিয়ের কথা জিজ্ঞাস করলেই বলতেন, ছেলে পারিবারিকভাবে পছন্দ করা আছে। আজ হোক কিংবা কাল, তার সঙ্গেই বিয়ে হবে। কখনো কখনো আবার একগাল হেসে বিয়ের প্রসঙ্গটি উড়িয়ে দিতেন মুমতাহিনা টয়া। সেই অভিনেত্রীই বলা-কওয়া ছাড়া ২৯ ফেব্রম্নয়ারি বিয়ের পিঁড়িতে বসেন। বর হিসেবে দেখা মেলে অভিনেতা শাওনের। তাদের মন দেওয়া-নেওয়া থেকে মধুচন্দ্রিমা পর্যন্ত লিখেছেন- রায়হান রহমান

প্রকাশ | ১২ মার্চ ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
মুমতাহিনা টয়া
লাক্স তারকা টয়া। অভিনয়েও জানা আছে মুনসিয়ানা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ছোট পর্দার বদৌলতে হয়েছেন দর্শকের আশির্বাদতুষ্ট। সেই টয়ার মন পেতে কষাকষিতো করতেই হবে। এমনটাই ভাবনায় ছিল শাওনের। তবে সাত সমুদ্র আর তেরো নদী পার হয়ে মন পেতে হয়নি টয়ার। চোখে চোখ রেখে, হাঁটু গেড়ে শুধু বলেছিলেন, 'ভালোবাসি তোমায়। উইল ইউ ম্যারি মি।' ব্যাস, লাল টুকটুকে বউ সাজার আগেই সেদিন লজ্জায় লাল হয়ে গিয়েছিলেন টয়া। সেদিনই হয়েছিল গায়ে হলুদ। সে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কাছের কয়েকজন। এ ঘটনার চূড়ান্ত রূপ নেয় ২৯ ফেব্রম্নয়ারি, সন্ধ্যায়। কিছুটা পারিবারিক আবহে, রাজধানীর একটি রেস্টুরেন্টে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয় তাদের। স্বল্প দিনের প্রেমনামা থেকে তাদের গল্প পৌঁছায় সাংসারিক জীবনে। এবার একটু পেছন ফেরে তাকানো যাক। অভিনয়ের সূত্র ধরেই শাওয়ানের সঙ্গে পরিচয় টয়ার। দেখতে দেখতে সম্পর্কের বয়স পাঁচ বছরের একটু বেশি। প্রথম দিককার সম্পর্কে সম্বোধন ছিল কেবলই 'হ্যায় হ্যালো'। পরবর্তী সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সম্পর্কের রঙ পরিবর্তন হয়। সময়টা গত বছরের ঈদুল আজহার কিছুদিন আগের। চিরকুট নামের একটি নাটক নির্মাণ হচ্ছিল ঈদের জন্য। এ নাটকের অভিনয়ের সূত্র ধরেই ভাব জমে টয়া ও শাওনের। এ বিষয় টয়া বললেন, 'শুটিংয়ে যাওয়ার আগে শুনেছিলাম শাওনের ডেঙ্গু জ্বর। এরপরও সেদিন ও আগে আগে শুটিংয়ে যায়। আমি পরে যোগ দিই। সন্ধ্যার দিকে একটা দৃশ্যের জন্য ছাদের ওপরের উঁচু জায়গায় আমাদের উঠতে হয়েছিল। সেখানে ওঠার পর আমাদের মেকআপ আর্টিস্ট আমার আর শাওনের একটা ভিডিও করে দেন। শাওন ওটা নিয়ে তাতে আমার পছন্দের একটা গান জুড়ে দেয়। আমার ওটা খুব ভালোলাগে, মিউজিকটা আমার প্রিয় ছিল।' এরপর সময় যত এগিয়েছে, প্রিয় মিউজিকটার মতো মানুষটাও টয়ার প্রিয় হয়ে ওঠে। তখনো কেউ কাউকে ভালোবাসি বলে উঠতে পারেনি। টয়া শাওনকে বিভন্ন সময় ঘুরতে যাওয়ার প্রস্তাব দিতেন। টয়ার ভাষ্য মতে, 'আমি শাওনকে বিভিন্ন সময় প্রস্তাব দিতাম, আমার বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে যেতে। মাঝে মাঝে ও আসতো, আমরা একসঙ্গে ঘুরতাম, আড্ডা দিতাম। শাওন খুব অল্প সময়ের মধ্যে মানুষের সঙ্গে মিশে যেতে পারে। ওর এই গুণটি আমাকে সবসময় মুগ্ধ করে।' এর মাঝেই বন্ধুদের সঙ্গে টয়া ও শাওন কক্সবাজার বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন। সবাই মিলে ভালো কিছু সময় কাটাবেন, এই ছিল উদ্দেশ্য। কিন্তু কক্সবাজার গিয়ে শাওন ও টয়া দুজনেই এক অপ্রত্যাশিত অনুভূতির মুখোমুখি। দেখলেন বন্ধুদের আড্ডায় আর ঘোরাঘুরির কারণে শাওন ও টয়া একে অপরের সঙ্গে কথাই বলতে পারছেন না। দুজনই জানালেন, ওই সময়টা ছিল তাদের জন্য চরম বিরক্তিকর। তখনই একটু একটু বুঝতে শুরু করলেন একে অপরের সঙ্গে কাটানো নিজেদের সময়টা আরও চাই তাদের। টয়া বলেন, 'একটা সময়ে এসে বুঝলাম, আমরা দুজনই একে অপরকে ভালোবাসি। একসঙ্গে বাকিটা সময় থাকতে চাই। জীবনসঙ্গি হিসেবে আমি যে ধরনের মানুষকে চাই, শাওন তেমনই। এর মধ্যেই শাওনের জন্মদিনে ও আমাকে অফিসিয়ালি বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এরপর পারিবারিকভাবে গায়ে হলুদ হয়েছে। অবশ্য আমাদের দুজনের পরিবারই বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ছিলেন। তাদের সম্মতিও ছিল। আমিও চেয়েছি, যেহেতু এক সঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বিয়ে করেই থাকব। দুবছর প্রেম করে সময় নষ্ট করার মানে হয় না।' আর বিয়ের দিনটা স্মরণীয় করে রাখতে বিয়ের দিন হিসেবে 'লিপইয়ার ডে' ঠিক করেন দুজন মিলেই। টয়ার ভাষায়, 'আমরা সবসময় চেয়েছিলাম, 'স্পেশাল কাপল' হতে।' পুরনো কথা ফেলে এবার আসি নতুন কথায়। ইতোমধ্যে মধুচন্দ্রিমাও সেরেছেন টয়া-শাওন দম্পতি। বিয়ের পরপরই তারা দুজন চলে গেছেন সিলেটে, লালা খাল এলাকায় বেড়িয়েছেন। ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকা এটি। সেখান থেকে ঢাকায় ফিরেছেন দুজনই। ফিরেই অংশ নিয়েছেন নতুন একটি নাটকে। তবে এত অল্প সময়ের হানিমুনে মন ভরেনি তাদের। ঈদের পর 'আসল' হানিমুনে ভুটান যাচ্ছেন শাওন-টয়া।