নিয়ামতপুরের স্বাস্থ্য বিভাগ ও কৃষি অফিস খোলা থাকলেও ছিলেন না নেই কর্মকর্তা!

প্রকাশ | ১৫ এপ্রিল ২০২১, ২১:১৭

নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি

 

করোনাকালীন ২য় ঢেউয়ে মানুষের মৃত্যু মিছিল যখন বাড়ছে, অসুস্থরা ছুটছেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দিকে ঠিক তখনই নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ক’দিন ধরেই অনুপস্থিতি স্বাস্থ্য কর্মকর্তার। করোনার এ মহাদুর্যোগে খোদ স্বাস্থ্য কর্মকর্তার এমন অনুপস্থিতি সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে। এমন পরিস্থিতিতে হাসপাতালের গুরুতর সিদ্ধান্ত নিতেও হিমশিম খাচ্ছেন অন্য চিকিৎসকরা।

 

 দেশব্যাপী চলছে সরকারি নির্দেশনায় ৭ দিনের বিশেষ লকডাউন। এ লকডাউনে জরুরি বিভাগ ছাড়া সকল দপ্তর বন্ধ রয়েছে। কিন্তু নিয়ামতপুরের জরুরি দুটি বিভাগের স্বাস্থ্য বিভাগ ও কৃষি অফিস খোলা থাকলেও অফিসে নেই কর্মকর্তা। এতে ব্যাহত হচ্ছে মানুষের কাক্সিক্ষত সেবা।

 

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় সরেজমিনে নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহিঃবিভাগে দেখা যায় রোগীর অনেক ভিড়। এদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিল সর্দিজ্বরে আক্রান্ত রোগী। চিকিৎসক কম থাকায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

 

এরপর স্বাস্থ্য কর্মকর্তার রুমে গেলে তাকে অফিসে পাওয়া যায়নি। পরে জরুরি বিভাগে কর্মরত ডা. ফয়সাল নাহিদ পবিত্রর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, আমাদের স্যার (স্বাস্থ্য কর্মকর্তা) ছুটিতে আছেন। এ কারণে আমার ডিউটি না থাকা সত্ত্বেও রোগী দেখতে হচ্ছে।

 

নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তোফাজ্জল হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘আমি ছুটিতে আছি’। করোনাকালীন সময়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার ছুটি নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ছুটি নেওয়া যাবে না এ রকম কোনো প্রজ্ঞাপন তো জারি হয়নি।

 

তিনি বলেন, বুধবার বৈশাখী ছুটি ছিল, বৃহস্পতিবার সিভিল সার্জন থেকে ছুটি নিয়েছি। তাছাড়া শুক্রবার-শনিবার সরকারি ছুটি। এ কারণে তিনি মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে নওগাঁ সিভিল সার্জন অফিসে কাজ সেরে দেশের বাড়ি গেছেন। 

এ ঘটনায় জানতে চাইলে নওগাঁ জেলা সিভিল সার্জন ডা. এবিএম আবু হানিফ মুঠোফোনে জানান, ‘নিয়ামতপুরের উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তোফাজ্জল হোসেন আমার কাছে থেকে ছুটি নেননি। এমনকি তিনি এ করোনাকালীন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাইরে থাকতে পারেন না। আমি এ বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি। তিনি এমন দুর্যোগের সময়ে অফিসে না থাকলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

অপরদিকে কৃষি প্রধান দেশ হওয়ায় এবং কিছুদিনের মধ্যে বোরো ধান কৃষকের ঘরে উঠবে বলে কৃষি দপ্তর খুলে রাখার প্রজ্ঞাপনে নির্দেশ দেন সরকার। সরেজমিনে উপজেলা কৃষি অফিসে উপস্থিত হলে দেখা মেলেনি কৃষি কর্মকর্তার। কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তার সাথে সকাল ১১টার সময় কথা হলে তিনি বলেন, স্যার এখনও আসেননি অফিসে।

অনুপস্থিতি নিয়ে নিয়ামতপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমীর আব্দুল্লাহ মো. ওয়াহেদুজ্জামানের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, ‘আমি অফিসের কাজে নওগাঁ বিএডিসি সার গুদামে আছি। কাজ সেরে অফিসে আসব।’

নওগা জেলা কৃষি কর্মকর্তা শামশুল ওয়াদুতের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, ‘আমি জানি সে তার নিয়ামতপুর অফিসে থাকবে। আমি জেনে আপনাকে জানাচ্ছি। এরপর তিনি কলব্যাক করে জানান, নিয়ামতপুরে কোনো এক মাঠ পরিদর্শনে গেছেন তিনি। এ করোনার সময়ে তার কর্ম এলাকার বাইরে যেতে পারে না এবং জেলায় এলে আমি তো জানব।’

 

যাযাদি/ এস