শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মির্জাগঞ্জে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব

আইভি স্যালাইন সংকট
মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
  ১৯ এপ্রিল ২০২১, ২০:৩০

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলায় ডায়রিয়া মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে উপজেলা হাসপাতালে প্রতিদিনই বিভিন্ন গ্রাম থেকে নারী-পুরুষ ও শিশুসহ অনেক রোগী ভর্তি হচ্ছে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত আইভি স্যালাইনের সরবরাহ নেই। ফলে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের বাইরের ফার্মেসি থেকে অতিরিক্ত চড়া দামে আইভি স্যালাইন কিনতে হচ্ছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় হঠাৎ করেই ডায়রিয়া রোগের প্রদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ফলে ৫০ শয্যার হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণ শয্যা না থাকায় বাধ্য হয়েই ডায়রিয়া রোগীদের মেঝেতে শয্যা করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৯৩ জন নারী-পুরুষ ও শিশু ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে গত ৭ দিনে মির্জাগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে ভর্তিকৃত ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা ৩৪৯ জনে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে ২৬১ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। গত ১ মাসে উপজেলা হাসপাতালে ছয় শতাধিক ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি করা হয়েছে।

সোমবার সরেজমিনে হাসপাতালে দেখা যায়, ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত উপজেলার দেউলী সুবিদখালী ইউনিয়নের পূর্ব সুবিদখালী গ্রামের সুবল দাসের স্ত্রী প্রীতি দাস (১৮) জানান, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পর হাসপাতালে ভর্তি হই কিন্তু শয্যা না থাকার কারণে মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছি।

উপজেলার মাধবখালী ইউনিয়নের পশ্চিম চৈতা গ্রামের আলতাফ মোল্লার স্ত্রী নাছিমা বেগম (৩৫) বলেন, গত ১৫ এপ্রিল ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে হাসপাতালে আসি। শয্যা না পেয়ে মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছি। কিন্তু এ হাসপাতাল থেকে মাত্র ১টি স্যালাইন দেওয়া হয়। সেটা পর্যাপ্ত না হওয়ায় বাইর থেকে চড়া দামে দেড় হাজার টাকার স্যালাইন কিনতে হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. দিলরুবা ইয়াসমিন লিজা এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, এখানে ডায়রিয়া মারাত্মক আকার ধারণ করার পর প্রয়োজনীয় ওষুধের পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় রোগী এলে তাৎক্ষণিকভাবে রোগীকে হাসপাতালের স্যালাইন দিয়ে পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছি। পরে রোগীদের কাউকে হয়তো-বা বাইরের ফার্মেসি থেকে স্যালাইনসহ ওষুধ কিনতে হয়।

তিনি আরও বলেন, যে হারে প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে তাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ৮টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। আবহাওয়াজনিত কারণে এই সময়ে এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। সবাইকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অবলম্বন করতে হবে, পচা, বাসি খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। বেশি করে বিশুদ্ধ পানি এবং তরলজাতীয় খাবার খেতে হবে। আর এই রোগে আক্রান্ত হলে অবশ্যই তাকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেতে হবে অথবা হাসপাতালে এসে চিকিৎিসা নেওয়ার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসা. তানিয়া ফেরদৌস বলেন, মির্জাগঞ্জে সম্প্রতি ডায়রিয়া বেড়ে যাওয়ার কারণে উপজেলা হাসপাতালে ওষুধের সংকট দেখা দেওয়ায় অসহায় মানুষদের জন্য উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ৩৫৪ ব্যাগ আইভি স্যালাইন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের সিনিয়র কনসালটেন্ট উপজেলার কলাগাছিয়া গ্রামের মৃত আবদুর রহিম সিকদারের ছেলে ডা. মো. সাইফুল আজম রঞ্জু ব্যক্তিগতভাবে ২০০ ব্যাগ আইভি স্যালাইন প্রদান করেছেন।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে