বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নান্দাইল হাসপাতালে ডাক্তার সংকট, নানা সমস্যায় জর্জরিত

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
  ২৪ জুন ২০২১, ১৮:৪৭

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রয়োজনীয় জনবল সংকটে রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা সেবা না পাওয়ার অভিযোগ রোগীদের। নান্দাইল হাসপাতালের জন্য অনুমোদিত ডাক্তারের পদ সংখ্যা ২১টির মাঝে ১০টি পদই শূন্য রয়েছে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী অনেক পদ শূন্য রয়েছে। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ডাক্তারদের স্টাফ কোয়ার্টারগুলো বসবাসের সম্পূর্ণ অনুপযুক্ত অবস্থায় রয়েছে। ৫০ কিলোমিটার দূরে জেলা সদর থেকে ডাক্তারগণ কর্মস্থলে এসে থাকেন। এতে করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না এখানকার জনগণ। ইউনিয়ন পর্যায়ে স্থাপিত ৫টি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অবস্থা খুবই করুণ। যা প্রায় দিনই বন্ধ অবস্থায় থাকে। এছাড়া ডাক্তারদের উপস্থিতি নাই বললেই চলে। ৪০টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু থাকলেও এতে কর্মরত সিএইচসিপিদের উপস্থিতি ও প্রস্থান নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়া এক্সরে মেশিন প্রয়োজনীয় কাঁচামাল ও বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে বন্ধ রয়েছে। হাসপাতালের নিজস্ব জেনারেটর বসানো হলেও তা নষ্ট অবস্থায় পড়ে আছে। রোগীদের ইসিজি করার মেশিন নাই। শুধু আল্ট্রাসনোগ্রাম ব্যবস্থা চালু আছে। অন্যান্য চিকিৎসার সরঞ্জাম থাকার পরেও টেকনিশিয়ান না থাকায় তা চালু করা সম্ভব হচ্ছে না বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মামুনুর রশীদ।

সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো খোলা রাখার সরকারি নির্দেশনা থাকলেও বাস্তবে তা করা হয় না। প্রতিদিন হাসপাতালে ইনডোরে ৭০/৮০জন রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হয়। এছাড়া আউটডোরে ২/৩শ রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে। একজনমাত্র ডেন্টাল সার্জন থাকায় এক্ষেত্রে রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সাম্প্রতিককালে হাসপাতালটি ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যার জন্য প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে এবং ৩৫ কোটি টাকায় অবকাঠামো নির্মাণের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। হাসপাতালের বিদ্যুৎ সংযোগ লাইনটি অতি পুরাতন থাকায় নিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হয় না। এছাড়া হাসপাতালের জন্য বিদ্যুতের যে লোড প্রয়োজন তা এই লাইনের মাধ্যমে সরবরাহ সম্ভব নয়। ফলে প্রায় সময়ই হাসপাতাল এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকে না। এতে রোগীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালের মাঠে খোলা জায়গা ৩টি অ্যাম্বুলেন্স বছরের পর বছর পড়ে থাকায় সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা জানান, অকেজো অ্যাম্বুলেন্সগুলো নিলাম ডাকে বিক্রি করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য সেবা কমিটির সভাপতি সংসদ সদস্য মো. আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন জানান, তিনি প্রতি মাসে স্বাস্থ্য সেবা কমিটির সভা করে এখানকার স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। হাসপাতালটি ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। ডাক্তার সংকটসহ অন্যান্য বিষয়ে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। সকল শূন্য পদ পূরণের জন্য মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য সচিবকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে