ঝালকাঠি হাসপাতালে নেই আইসিইউ ও কেন্দ্রীয় অক্সিজেন ব্যবস্থা, করোনা রোগীদের চিকিৎসায় দুর্ভোগ

প্রকাশ | ১৪ জুলাই ২০২১, ১৯:৪৮ | আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২১, ১৯:৪৯

মো: নজরুল ইসলাম, ঝালকাঠি

 

ঝালকাঠি ১০০ শয্যার সদর হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন ব্যবস্থা ও আইসিইউ না থাকায় করোনা রোগীদের চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে। এ কারণে গুরুতর রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরেইবাংলা মেডিকেলে পাঠাতে হচ্ছে। এতে রোগী ও স্বজনদের অতিরিক্ত টাকা খরচের পাশাপাশি দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।

 

হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) চালুর জন্য সাত মাস আগে প্রক্কলন ব্যয় নির্ধারণ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে প্রস্তাব পাঠানো হলেও কোনো বরাদ্দ বা যন্ত্রাংশ আসেনি। এ ছাড়া গত বছরের ২৫ নভেম্বর ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা চালুর জন্য কাজ শুরু হলেও এখনো তা শেষ হয়নি। এসব কারণে এখানে এসে করোনা রোগীরা যথাযথ সেবা পাচ্ছেন না।

 

এক করোনা রোগীর স্ত্রী সাফিয়া খাতুন বলেন, ‘ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ও আইসিইউ সুবিধা থাকলে আমাদের মতো গরিব রোগীদের বরিশাল যেতে হতো না।’

 

এ বিষয়ে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. আবুয়াল হাসান বলেন, সেন্ট্রাল অক্সিজেন না থাকায় চিকিৎসা সেবা কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। ডাক্তার নার্সের সংকট না থাকলেও আয়া ও ক্লিনার সংকটের কারণে করোনা ওয়ার্ড সার্বক্ষণিক পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করা সম্ভব হচ্ছেনা।

 

ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, অক্সিজেন সরবরাহের ঘাটতি মেটাতে গত বছরের ২৫ নভেম্বর ঝালকাঠি সদর হাসপাতালসহ সারা দেশের ২৩টি হাসপাতালে একযোগে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা স্থাপনের শুরু করে স্পেক্ট্রা ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে ৯০ ভাগ কাজ  শেষ হয়েছে। নির্মাণ করা হয়েছে ৬ হাজার লিটার ধারণ ক্ষমতার অক্সিজেন ট্যাংক। কিন্তু এখন ধীরগতিতে চলছে পাইপ স্থাপনের কাজ। শেষ পর্যায়ে এসে সামান্য কিছু কাজের অভাবে অক্সিজেন সরবরাহ করা যাচ্ছে না। ফলে সাধারণ সিলিন্ডার দিয়ে করোনা রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে তীব্র শ্বাসকষ্টের রোগীদের ঝুঁকি না নিয়ে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। 

 

জেলার নলছিটি,রাজাপুর ও কাঠালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্যকম্পেক্সগুলোর অবস্থা করোনায় কোন চিকিৎসা নেই বললেই চলে বলে জানিয়েছে স্থানীয় ভুক্তভুগীরা। এ অঞ্চলের মানুষের গুরুত্বর সমস্যা দেখা দিলে বিভাগীয় শহরে শেবাচিম হাসপাতাল ও বরিশালের করোনা ইউনিটই এক মাত্র ভরসা।

 

এ বিষয়ে সিভিল সার্জন রতন কুমার ঢালী বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ শেষ করার জন্য জোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে।  সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা চালু হলে মুমূর্ষু  রোগীদের এখানেই চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে। আইসিইউ চালুর বিষয়ে তিনি বলেন, সদর হাসপাতালে আইসিইউ চালুর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যেখানে ১০ শয্যার আইসিইউ ও ৫ শয্যার এইচডিইউ থাকবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় জনবল ও যন্ত্রাংশের ব্যবস্থা করা হবে।

 

ঝালকাঠি জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা করোনার পরীক্ষা করিয়েছেন ২৫২জন, এর মধ্যে ১২৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

 

যাযাদি/এস