তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ জরুরি

প্রকাশ | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২০:৪৫

যাযাদি রিপোর্ট

 

 

করোনা মহামারির এই সময়ে জনস্বাস্থ্য রক্ষায় এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত-২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে কঠোরভাবে তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। এজন্য তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে শক্তিশালী করতে এর ছয়টি ধারা সংশোধন করা জরুরি।

 

বুধবার ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম ও ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের সহযোগিতায় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।

 

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রিসার্চ কোঅর্ডিনেটর ডা. আহমদ খাইরুল আবরার। তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রায় পৌনে ৪ কোটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করে। কর্মক্ষেত্রসহ পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহণে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয় ৩ কোটি ৮৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। তামাকজাত দ্রব্যের বহুল ব্যবহার হৃদরোগ, ক্যানসার, বক্ষব্যাধি ছাড়াও অন্যান্য অনেক প্রতিরোধযোগ্য রোগ ও মৃত্যুর প্রধান কারণ।

 

সভায় আরও বলা হয়, দেশে প্রতিবছর তামাকজনিত রোগে ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ধূমপায়ীদের মারাত্মকভাবে অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা ১৪ গুণ বেশি। তামাকের এসব ক্ষতি থেকে জনস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করা প্রয়োজন বলে মত দেন বক্তারা।

 

ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের লিড পলিসি অ্যাডভাইজর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দেশে বিদ্যমান ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইনটির বিভিন্ন দিক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এফসিটিসির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, তারপরও কিছু জায়গায় দুর্বলতা রয়েছে। এই দুর্বলতাগুলো সংশোধন করা হলে আইনটি আরও কার্যকর হবে।

 

সভায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনীর দাবি জানানো হয়। এগুলো হলো করোনার এই সময়ে সব ধরনের পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহণকে শতভাগ তামাকমুক্ত করা, দোকানে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির সিএসআর নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেট আমদানি, উৎপাদন, বিক্রি ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করা, তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে মুদ্রিত সচিত্র স্বাস্থ্যসতর্ক বার্তার আকার বৃদ্ধি করা এবং তামাকদ্রব্যের খুচরা বিক্রি নিষিদ্ধ করা।

 

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি তৌফিক মারুফ বলেন, জনস্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ করছে হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম। এই ফোরামের সদস্যরা তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে নিয়মিত প্রতিবেদন করে থাকেন। তারা সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন বিষয়ে নীতিনির্ধারকদের সচেতন করবেন বলে জানান।

 

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ রাব্বি। অন্যান্যের মধ্যে ফোরামের সদস্যরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজর আতাউর রহমান মাসুদ প্রমুখ।

 

যাযাদি/ এস