দেশে শিশুদের ডায়াবেটিস আক্রান্তের হার আশঙ্কাজনক

প্রকাশ | ১৫ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০ | আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২১, ০৯:২১

লাইজুল ইসলাম

দেশে টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস আক্রান্তের হার দিন দিন বাড়ছে। টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলেও তার কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ সবার সামনে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুদের ওজন দ্রম্নত কমতে থাকলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ডায়াবেটিস ধরা পড়লে ওষুধ নিতে হবে। নিয়মের মধ্যে থাকলে শিশুটি সবকিছুই করতে পারবে। এদিকে, ১৮ বছর থেকে তার উর্ধ্বে টাইপ টু ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এক কোটি ৩০ লাখ। এর মধ্যে ডায়াবেটিস সমিতির রেজিস্ট্রেশন করা রোগীর সংখ্যা ৫৬ লাখ। এদের মধ্যে ডায়াবেটিস টাইপ ওয়ান ও টু আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ৭ হাজার। যার ভিতরে শুধু টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ৫শ'র বেশি। বাচ্চাদের টাইপ ওয়ান ও টাইপ টু ডায়াবেটিস আক্রান্তের বিষয়ে বাবা-মায়ের আরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। তারা বলেন, সময়মতো আক্রান্তের বিষয়টি জানতে পারলে বড় ধরনের সমস্যায় পড়তে হয় না। কিন্তু বাবা-মা এ বিষয়টিকে মানতেই চান না। এমনকি বাচ্চাদের চিকিৎসার আওতায় নিয়ে আসেন না। বাচ্চাদের টাইপ ওয়ান বা টু ডায়াবেটিস হওয়ার প্রধান লক্ষণগুলোকে বাবা-মাকে আগে ধরতে হবে। তাই জানা দরকার কী কী লক্ষণ দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, এ অবস্থার হঠাৎ ওজন অনেক দ্রম্নত কমতে থাকা, বার বার গলা শুকিয়ে যাওয়া ও পানি পান করা, বেশি বেশি প্রস্রাব করার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এসব বিষয়কে বাবা-মাকেই আগে দেখতে হবে। শিশু ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ ডা. বেদরা জেবীন বলেন, 'হাসপাতালে প্রতিদিন অন্তত দুইজন শিশুকে টাইপ টু ডায়াবেটিস আক্রান্ত পাওয়া যাচ্ছে। এটা খুবই ভয়ঙ্কর বিষয়। আমাদের এমনিতেই ডায়াবেটিস রোগী দিন দিন মহামারির মতো বৃদ্ধি পাচ্ছে। তার ওপর শিশুদের টাইপ টু ডায়াবেটিস ভাবিয়ে তুলছে।' তিনি আরও বলেন, 'টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস রোগীও দিন দিন বাড়ছে। ১০ বছরের ওপরের শিশুদের টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস বেশি ধরা পড়ছে। টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। এটির চিকিৎসা করা সম্ভব। চিকিৎসার আওতায় আনলে বাচ্চাটি সুস্থ জীবনযাপন করতে পারবে। কিন্তু চিকিৎসার আওতায় না এলে যে কোনো কিছু ঘটে যেতে পারে।' ডা. বেদরা বলেন, জন্মগ্রহণের সময় যে বাচ্চারা ডায়াবেটিস আক্রান্ত থাকে সেটি ইনফেন্ট অফ ডায়াবেটিস মাদার বা মায়ের ডায়াবেটিস থেকে আক্রান্ত হওয়া। তবে তা ৭২ ঘণ্টা অবজারবেশনে রাখলে ঠিক হয়ে যায়। এসময় বেশি বেশি বুকের দুধ খাওয়াতে বলি।' ডায়াবেটিস সমিতির সভাপতি প্রফেসর ডা. এ কে আজাদ বলেন, বাচ্চাদের ডায়াবেটিস আমাদের ভাবিয়ে তুলছে। আমরা সচেতনতা বৃদ্ধির কথা বলছি। এটা করতেই হবে। সরকারকে এ বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে। মোট আক্রান্তের ৫ শতাংশের বেশি শিশু ডায়াবেটিস আক্রান্ত। তিনি আরও বলেন, 'আক্রান্ত শিশুদের ইনসুলিন ছাড়া বাঁচা অসম্ভব। তারা ইনসুলিন পাচ্ছে না অসচেতনতা ও দারিদ্র্যের কারণে। এটা তাদের বাবা-মায়ের অবহেলা ও অসেচতনতার কারণ। এতে দেশের বড় ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে।'