শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

চুয়াডাঙ্গায় টিকা দেয়ার পর শিশুর মৃত্যু, তদন্ত কমিটি গঠন

স্টাফ রিপোর্টার, চুয়াডাঙ্গা
  ০২ মার্চ ২০২৩, ১১:৩৬
ছবি-যাযাদি

চুুয়াডাঙ্গায় ইপিআই টিকা দেয়ার ১০ ঘন্টা পর তাহিয়ান তৌফিক নামে দুই মাসের এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারী) রাত ৯ টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়।

শিশুটির পরিবারের দাবি, সকালে টিকা দেয়ার পর দুপুর থেকে জ্বরে আক্রান্ত হয় শিশু তাহিয়ান। রাতে নাপা সিরাপ খাওয়ানোর আধাঘন্টা পরই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে সদর হাসপাতালে নিলে ভর্তি করলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। টিকার দেয়ার কারণেই ছেলের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে দাবি করেছেন।

শিশু তাহিয়ান তৌফিক চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নের হাতিকাটা গ্রামের আদর্শপাড়ার তাজউদ্দিন আহমেদের ছেলে।

এদিকে এ ঘটনায় আজ বুধবার সকালে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের একটি টিম নিহত শিশুটির বাড়ি পরিদর্শন করেছেন। এসময় নাপা সিরাপসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে ঘটনার বিস্তারিত শোনেন।

এঘটনায় চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. মো: সাজ্জাৎ হাসানকে প্রধান করে দশ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সদর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আওলিয়ার রহমান।

শিশুটির বাবা তাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, 'মঙ্গলবার সকাল ১১ টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল থেকে দুই পায়ে তিনটা টিকা এবং একটি খাওয়ানো হয়েছে। এরপর বাড়ি এসে ছেলে মায়ের বুকের দুধ খাওয়া বন্ধ করে দেয়। কেনা দুধ খাওয়ানো হয় তাকে। দুপুর থেকে হালকায় জ্বর আসে। রাতে নাপা সিরাপ খাওয়ানোর আধাঘন্টা পরই ছেলে শিটকিয়ে যায়। পরে দ্রুত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। রাত ১ টার দিকে জানাযার নামায শেষে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। '

তিনি আরও বলেন, এর আগেও ছেলেকে টিকা দেয়া হয়েছে। সেবার কিছুই হয়নি। এবার টিকার দেয়ার পর খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। ধারণা করছি টিকা দেয়ার কারণেই ছেলের মৃত্যু হয়েছে। নাপা সিরাপ খাওয়ানোর জন্য এমন সমস্যা হয়েছে কিনা জানিনা। স্বাস্থ্য বিভাগের টিম নাপা সিরাপটি নিয়ে গেছে। তারাই পরিক্ষা-নিরিক্ষা করে বলতে পারবেন কোন সমস্যা আছে কিনা। এছাড়াও সে দোকান থেকে নাপা সিরাপ কিনেছি ব্যক্তিগতভাবে আপাতত নাপা সিরাপ বিক্রয় না করতে অনুরোধ করেছি। যেন কোন শিশুর ক্ষতি না হয়।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আওলিয়ার রহমান বলেন, ঘটনা শোনার পর আমিসহ স্বাস্থ্য বিভাগের একটি টিম শিশুটির বাড়িতে পরিদর্শন করে বিস্তারিত শুনেছি। টিকা দেয়ার কারণে মৃত্যু হয়নি বলে ধারণা করছি। কারণ মৃত্যু হলে টিকা দেয়ার প্রায় এক থেকে দুই ঘন্টার মধ্যেই মৃত্যু হতো। এমন মৃত্যু ১০ লাখে একজনের হয়। আমরা ওই নাপা সিরাপসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছি। টিকাগুলোর মেয়াদ যাছায় করেছি কোন সমস্যা নেই। তিনি আরও বলেন, শিশুকে গুড়া (বাজারজাত) দুধ খাওয়ানোর জন্য শ্বাসনালীতে আটকে যেয়ে এমন ঘটনা ঘটতে পারে। এঘটনায় চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. মো: সাজ্জাৎ হাসানকে প্রধান করে দশ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা গুরুত্বসহকারে বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. মো: সাজ্জাৎ হাসান বলেন, যেহেতু টিকা কার্যক্রম সদর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা অফিসের আওতাধীন। বিষয়টি শোনার পর সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মকর্তাকে তদন্ত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পেলেই মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে