বাঁশখালীতে হটাৎ বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী, জনমনে আতঙ্ক
প্রকাশ | ০৯ জুন ২০২৩, ১৪:১৩
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার দক্ষিণ অঞ্চলের, শেখেরখীল, চাম্বল ও ছনুয়া ইউনিয়নে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। সম্প্রতি গত দুই মাসে ঐ অঞ্চলে শতাধিক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে ঐ সব এলাকায় জনমনে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত বাঁশখালী জেনারেল হাসপাতালে ৬ জন, বাঁশখালী ন্যাশনাল হাসপাতালে ৫ জন সহ বিভিন্ন হাসপাতালে ২২ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রয়েছেন।
চিকিৎসকেরা জানান, আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ৯০ শতাংশ রোগী উপজেলার শেখেরখীল, পুইঁছড়ি, ছনুয়া ও চাম্বল ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার। তার মধ্যে বেশির ভাগ রোগী শেখেরখীল ইউনিয়নের। আক্রান্তদের অধিকাংশই মাছ ব্যবসায়ী। তাদের অনেকেই নিয়মিত মাছ নিয়ে ঢাকায় যাতায়াত করেন।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার বাঁশখালীর শেখেরখীল ইউনিয়নে জনসাধারণের মাঝে ডেঙ্গু বিষয়ে সচেতনতা মুলক ক্যাম্পিং করেছে বাঁশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এতে ক্যাম্পিং এ সচেতনতামুলক বক্তব্য রাখেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শফিউর রহমান মজুমদার, আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. দিদারুল হক, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যাম মোরশেদুল ইসলাম, স্বাস্থ্য পরিদর্শক ইনচার্জ) আবদুছ ছবুরসহ প্রমুখ।
সরেজমিনে বাঁশখালী জেনারেল হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালের জরুরি বিভাগের পাশে ১টি আলাদা কক্ষে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা চলছে। তাঁদের সবাই মশারির ভেতরে অবস্থান করছেন। প্রাথমিক ধাপে ডেঙ্গু রোগ ধরা পড়ায় হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন বেশির ভাগ রোগী। তবে অনেকের তীব্র জ্বর ও মাথাব্যথা থাকায় উন্নত মানের চিকিৎসার জন্য চলে যাচ্ছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন হাসপাতালে। তবে ডেঙ্গুর ভেরিয়েন্টটি মারাত্মক না হওয়ায় হাসপাতালের প্রাথমিক চিকিৎসায় সেরে উঠছেন বেশির রোগী।
এ সময় বাঁশখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি উপজেলার শেখেরখীল ইউনিয়নের ফাড়িরমুখ এলাকার বাসিন্দা জসিম উদ্দীন বলেন, ৩ দিন আগে হঠাৎ জ্বর অনুভব করলে বাঁশখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হই। পরে পরীক্ষা করে জানতে পারি আমি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। বিভিন্ন সময় ইলিশ মাছ নিয়ে ঢাকায় যাতায়াত করতে হয় আমার। হয় ত ওখান থেকেই আমি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছি।
বাঁশখালী জেনারেল হাসপাতালের ভাইস-চেয়ারম্যান মোক্তার হোসাইন সিকদার বলেন, হঠাৎ বেশ কিছুদিন ধরে আমাদের হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী বেড়েছেন। আমরা আক্রান্তদের জন্য আলাদা ১টি কক্ষে ডেঙ্গু কর্ণার করে রাখা হয়েছে। তাঁদের প্রয়োজনীয় সব সেবা দেওয়া হচ্ছে। অনেকে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তবে আক্রান্ত রোগীদের বেশির ভাগই ছনুয়া ও শেখেরখীল ইউনিয়নের বাসিন্দা বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শফিউর রহমান মজুমদার বলেন, আমরা গত সপ্তাহে এ বিষয়ে জানতে পারি। তবে রোগীদের বেশির ভাগই দক্ষিণ বাঁশখালী শেখেরখীল ও ছনুয়া এলাকার। আমরা ঐ সব এলাকা ডেঙ্গু বিষয়ে সচেতনতামূলক ক্যাম্পিং করেছি। তবে বেশির ভাগ রোগীই মাছ ব্যবসায়ী। তারা পেশাগত কারনে নিয়মিত ঢাকায় যাতায়াত করেন। হয় ত তারা ওখান থেকে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে ঐ সব এলাকায় এডিসের লার্ভা নিধনে ও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সিভিল সার্জনের সঙ্গে কথা হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।
যাযাদি/ এস