ক্যান্সার রোগীদের নিয়ে ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতালের বিশেষ আয়োজন
প্রকাশ | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯:২৮ | আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৯:৪৩
ক্যান্সার রোগীদের আনন্দ দিতে ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল এন্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারের বিশেষ আয়োজন অনুষ্ঠিত। বিশ্ব ক্যান্সার দিবস-২০২৪ উপলক্ষে রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) দিনব্যাপী ছিল নানান কর্মসূচী।
যার মধ্যে প্রথম আয়োজন ছিল ক্যান্সার রোগীদের দিয়ে ছবি আঁকার কর্মশালা, যেখানে প্রশিক্ষক হিসেবে অংশ নেন দেশের প্রতিশ্রুতিশীল চিত্রশিল্পী সোহাগ পারভেজ। তিনি রোগীদের উদ্দেশ্যে জানান রঙ মানুষের মনকে প্রশান্তি দেয়, আঁকাআঁকির ফলে আনন্দদায়ক যে অনুভূতির সৃষ্টি হয় তা একজন মানুষকে ভালো রাখতে সাহায্য করে।
এদিকে ছবি আঁকতে পেরে খুশি হাসপাতালের ক্যান্সারের চিকিৎসা নেওয়া রোগীরাও। এরপর দ্বিতীয়ভাগে বিকাল ৪ টায় শুরু হয় শুরু হয় আরেক আয়োজনের। যেখানে অংশ নেন ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া দেশের নানা প্রান্তে থেকে আসা ক্যান্সার যুদ্ধে সুস্থ হওয়া রোগীরা। সেই পর্বে তারা জানান ক্যান্সার বিষয়ক তাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা, চিকিৎসা সংক্রান্ত অনুভূতি এবং সবশেষ ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতাল এন্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারের সিনিয়র কনসালটেন্ট দেশবরেণ্য ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের ক্যান্সার বিষয়ক সচেতনতামূলক মূল্যবান পরামর্শ এবং ক্যান্সার বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা অনুষ্ঠান।
যেখানে উপস্থিত ছিলেন, ল্যাবএইড ক্যানসার হাসপাতাল এন্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারের মাননীয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব সাকিফ শামীমসহ হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল অনকোলজি বিভাগের সিনিয়র, জুনিয়র কনসালটেন্ট, নার্স, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
সকলের উদ্দেশ্যে ল্যাবএইড ক্যানসার হাসপাতাল এন্ড সুপার স্পেশালিটি সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব সাকিফ শামীম বলেন, 'ক্যান্সার মানেই যেন নিরানন্দ একটা বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, ক্যান্সার হলে প্রত্যেকটা রোগী স্বজনদের মধ্যে মানসিক উদ্বেগ কাজ করে। কিন্তু আমরা চেয়েছি ক্যান্সার আক্রান্ত মানুষটাও আনন্দ করতে জানুক, তারা আরও জানুক ক্যান্সার হলে ভয়ের কিছু নেই বরং দরকার একটু সচেতনতা। নির্দিষ্ট একটা সময় পর্যন্ত চিকিৎসায় ক্যান্সার সম্পূর্ণ ভালো হয়। তাই মনে জোর রেখে দ্রুত সঠিক চিকিৎসা করাতে হবে তাহলে ক্যান্সার আর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াবে না। আগে ক্যান্সারের চিকিৎসা মানেই বিদেশ নির্ভরশীলতা ছিল যেখানে সময়, ভোগান্তি, অর্থের কথা চিন্তা করে মানুষের চিকিৎসা নিতে দেরি হতো। চিকিৎসা দেরিতে হওয়ার ফলাফল স্বরূপ ক্যান্সার অ্যাডভান্স লেভেলে চলে যেত, তখন চিকিৎসা খুব একটা কাজে আসতো না। এখন দেশেই ক্যান্সারের আন্তর্জাতিকমানের চিকিৎসা আছে।
বিশেষ করে ল্যাবএইড ক্যান্সার হাসপাতালে ক্যান্সারের আন্তর্জাতিকমানের চিকিৎসা হয়। রোগীদের উদ্দেশ্য তিনি আরও বলেন সময় নষ্ট না করে যতদ্রুত সম্ভব ক্যান্সারের উপযুক্ত চিকিৎসা গ্রহণ করুণ, নিজে ও পরিবার নিয়ে সচেতন হোন, সুস্থ থাকুন।'
চিকিৎসকরা তুলে ধরেন ক্যান্সার বিষয়ক তাদের মূল্যবান পরামর্শ। তারা জানান বিশ্ব ক্যান্সার দিবস একটি সংস্থা, যা ক্যান্সারের প্রকোপ কমাতে কাজ করে এবং ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য উন্নত ক্যান্সার কেয়ারকে সমর্থন করে।
প্রত্যেক বছর, ৪ ফেব্রুয়ারি ক্যান্সারের জন্য ডেডিকেট করা হয় এবং সারা বিশ্ব থেকে বিভিন্ন সরকার, প্রতিষ্ঠান, দাতব্য সংস্থা, ব্যবসা এবং সম্প্রদায়গুলি এটিকে অনবরত সমর্থন করে চলেছে। এই বছর ক্যান্সার দিবসের প্রতিপাদ্য হলো ‘আসুন ক্যান্সার সেবায় বৈষম্য দূর করি’। এরমানে হলো ক্যান্সারে আক্রান্ত সবাই কিন্তু একই রকম যত্ন পায় না। তারা যে ধরনের চিকিৎসা, তথ্য এবং সহায়তা পাচ্ছে তা তাদের অবস্থান, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, লিঙ্গ এবং অন্যান্য বিভিন্ন অনেক বিষয় দ্বারা প্রভাবিত।
অর্থাৎ টিম অনকো, তাদের পরিষেবার মাধ্যমে সারা বছর এই ব্যবধান কমাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পাশাপাশি ক্যান্সারকে ভয় না পেয়ে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেন তারা। এছাড়া স্বাস্থ্যকর খাবার স্বাস্থ্যকর জীবন যাপনের প্রতিও গুরুত্বারোপ করেন। সর্বোপরি ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগীদের কী করণীয়, চিকিৎসা চলাকালীন অবস্থায় পরিবারের অবস্থান ও ভূমিকা, তাদের খাদ্যাভ্যাস এবং মানসিক অবস্থা উন্নয়ন এরকম নানা বিষয়ে দিক নির্দেশনা প্রদান করেন হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
যাযাদি/ এম