শরীরে তরলের ভারসাম্য রক্ষা করতে এবং আমাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য পানি খুবই উপকারি। বেঁচে থাকার জন্য প্রত্যেক জীবের পানি পান করা উচিত।
তবে পানি কম পান করা যেমন ক্ষতিকর, তেমনি বেশি পান করাও বিপদজনক। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা জরুরি।
পর্যাপ্ত পানি পানের গুরুত্ব:
১. শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ: পানি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তাই শরীরের তাপমাত্রাকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পর্যপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে। অন্যথায় শরীরে বাসা বাধতে পারে নানা ধরনের রোগ।
২. চোখ, নাক এবং মুখের টিস্যুগুলোকে আর্দ্রতা ধরে রাখতে: পানি জীব দেহের টিস্যুগুলোকে আর্দ্র রাখে। শরীরে পর্যপ্ত পানি মজুত থাকলে, তা সহজেই জীবের চোখ, নাক, কান ও মুখসহ অন্যান্য টিস্যুগুলোকে আর্দ্র রাখে। ফলে, এসব টিস্যুতে রোগ জীবানু আক্রমণ করতে পারে না।
৩. শরীরের অঙ্গ রক্ষা: পানি শরীরের প্রতিটি অঙ্গের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। শরীরের অঙ্গগুলোকে রক্ষা ও সঠিকভাবে বৃদ্ধির জন্য পর্যপ্ত পানি পান করতে হবে। এতে করে অঙ্গগুলো রোগ প্রতিরোধের সামর্থ লাভ করে।
৪. কোষে পুষ্টি এবং অক্সিজেন বহন: জীব দেহের কোষের জন্য পুষ্টি এবং অক্সিজেন অত্যাবশ্যক। আর এই পুষ্টি ও অক্সিজেন শরীরে উৎপাদন ও সংরক্ষণের জন্য পর্যপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হয়। এছাড়া, অক্সিজেন উৎপাদনের জন্য পানির কোনো বিকল্প নেই।
৫. জয়েন্টগুলোকে লুব্রিকেট করা: জীবের শরীরে অনেকগুলো জয়েন্ট থাকে। মানুষের শরীরে প্রায় ৩০০ থেকে ৩৫০ টি হাডের জয়েন্ট আছে। এই জয়েন্টগুলোকে সুস্থ্য করতে এবং প্রয়োজনীয় তরল তৈরি করতে পর্যাপ্ত পানির প্রয়োজন হয়।
৬. বজ্য পদার্থ বের করে দিতে: পানি জীবের শরীর থেকে বজ্য পদার্থ বের করে দেয়। তাই নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা জরুরি। যারা পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করে না, তারা কোষ্ঠকাঠিন্যসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়।
৭. কিডনি এবং লিভারের উপর ভার কমায়: পানি মানুষের কিডনি ও লিভারের উপর ক্ষতিকর প্রভাব কমায়। পর্যপ্ত পানি পানের ফলে শরীর থেকে সহজে বজ্য পদার্থ বের হয়ে যায়, ফলে কিডনি ও লিভারের উপর ক্ষতিকর কোনো প্রভাব পড়ে না। এতে করে কিডনি ও লিভারজনিত রোগ হয় না।
৮. খনিজ এবং পুষ্টিগুলোকে দ্রবীভূত করে: পানি মানবদেহের জন্য প্রয়োজনীয় খনিজ ও পুষ্টিগুলোকে দ্রবীভূত করে এবং শরীরের ব্যবহার উপযোগী করে। শরীরে পর্যাপ্ত পানি না থাকলে এই প্রক্রিয়া ব্যহত হয়। ফলে দেহে প্রযোজনীয় খনিক পদার্থ ও পুষ্টির অভাব দেখা দেয়।
৯. মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ায়: পানি পান করলে তা মানসিক স্বচ্ছতা, মনোযোগ এবং একাগ্রতা উন্নত করতে সাহায্য করে। মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতার জন্য সঠিকভাবে হাইড্রেটেড থাকা গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত পানি পান করলে তা নিউরোট্রান্সমিটারের কার্যকলাপকে উৎসাহিত করে এবং স্বাস্থ্যকর মস্তিষ্ক বজায় রাখে, যা কর্মক্ষমতা এবং উৎপাদনশীলতাকে উন্নত করে।
১০. হাইড্রেশন বজায় রাখে: শ্বাস-প্রশ্বাস, ঘাম এবং অন্যান্য শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ার ফলে শরীর থেকে তরল বের হয়ে যায়। পানি পানের মধ্য দিয়ে এই ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব। এতে ডিহাইড্রেশন এড়ানো যায় এবং শরীরের ভেতরের কার্যকারিতা ঠিক থাকে।
যাযাদি/ এম