বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

৬ দাবিতে মানববন্ধনে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট পরিষদ

যাযাদি ডেস্ক
  ২০ নভেম্বর ২০২৪, ২০:১২
ছবি : যায়যায়দিন

স্বতন্ত্র পরিদপ্তর গঠন ও ডিপ্লোমাধারীদের ১০ম গ্রেড পদমর্যাদা প্রদানসহ ছয় দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে বৈষম্যবিরোধী জাতীয় মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট পরিষদ।

এ সময় সংগঠনের নেতারা, পেশাজীবীদের দীর্ঘকাল বৈষম্যের আশু সমাধানের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে দাবিগুলো তুলে ধরে।

বুধবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ একযোগে রাজধানীর ১৪টি হাসপাতালসহ সারাদেশে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে বৈষম্যবিরোধী জাতীয় মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট পরিষদের সভাপতি আব্দুস সামাদ ও মহাসচিব মো. রিপন শিকদার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তাদের দাবি-দাওয়ার বিষয় গুলো জানিয়েছেন।

সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন, চিকিৎসক-নার্স ও মেডিকেল টেকনোলজিস্টসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের পেশাগত সুরক্ষা ও অধিকার নিশ্চিত করতে সকলকে নিয়েই একটি অংশগ্রহণমূলক ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে। স্বাস্থ্যসেবা একটি টিমওয়ার্ক। যার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ তত্ত¡াবধানে চিকিৎসক ও নার্সদের পাশাপাশি মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন।

তারা বলেন, দেশে ৪০ হাজারেরও বেশি পেশাজীবী মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্টদের কোনো স্বতন্ত্র পরিদপ্তর বা উইং নেই। এটি খুবই দুঃখের বিষয়। স্বাস্থ্য সেবা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা উভয় বিভাগে কর্মরত মেডিকেল টেকনোলজি শিক্ষা ও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট পেশাজীবীদের বদলি, পদোন্নতি, উন্নত শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, দক্ষতা বৃদ্ধি ও সমন্বয়ের জন্য একটি উইং বা পরিদপ্তর বা অধিদপ্তর প্রয়োজন। এই ৪০ হাজারেরও বেশি জনবলের পরিকল্পনামাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য কোনো প্রকার দপ্তরের ব্যবস্থা না থাকা দুঃখজনক।

মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মানবন্ধন শেষে বিপিএ আহবায়ক ও পেশাজীবি নেতা নাছির আহাম্মেদ রতন বলেন, অবিলম্বে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট ছাত্র-শিক্ষক-পেশাজীবীদের ছয় দফা দাবী মেনে নিয়ে তা অতি দ্রæত বাস্তবায়ন করতে হবে।

তিনি বলেন, প্রশাসনিক জটিলতা করনে দীর্ঘ শূণ্য পদ থাকর পরেও ১৪ বছর ধরে মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ। পাঁচ হাজার ৯৭৫ বিপরীতে সরকারি চাকরিতে কর্মরত আছেন মাত্র চার হাজার ১০৬ জন। যেখানে চিকিৎসক ও নার্সের সংখ্যার অনুপাতে মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের সংখ্যা হওয়ার কথা ছিল ৮০ হাজারেরও বেশি।

এ সময় আরও বক্তব্য দেন মুগদা মেডিকেল কলেজ শাখার বৈষম্যবিরোধী জাতীয় মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হাসান, কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহসভাপতি মনিরুল ইসলাম, মোক্তার হোসেন, সুজন সরকার, নাইমুর রহমান এবং মাহফুজুর রহমান প্রমুখ ।

ছয় দফা দাবি........

সেবার এই গুরুত্বপূর্ণ পেশাজীবীদের প্রতি দীর্ঘকাল বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়েছে উল্লেখ করে তার আশু অবসানের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ছয় দফা দাবি তুলে ধরে সংগঠনটি। দাবিগুলো হলো-

১. স্বতন্ত্র পরিদপ্তর গঠন করতে হবে।

২. ডিপ্লোমাধারীদের ১০ম গ্রেড (দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড) পদমর্যাদা প্রদান করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী আনুপাতিক হারে পদ সৃজনপূর্বক দ্রæত নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে, পাশাপাশি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ২০১৩ সালের স্থগিতকৃত নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করতে হবে।

৩. গ্রাজুয়েট মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের নবম গ্রেডের পদ সৃষ্টিপূর্বক চাকরিজীবীদের আনুপাতিক হারে পদোন্নতির নিয়ম বহাল রেখে স্ট্যান্ডার্ড সেটআপ, নিয়োগবিধি ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

৪. ঢাকা ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজিকে (আইএইচটি) ‘বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব মেডিকেল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’ নামকরণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করতে হবে এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল আইএইচটির জন্য মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট শিক্ষকদের স্বতন্ত্র ক্যারিয়ার প্ল্যান গঠন করে বিদ্যমান নিয়োগবিধি ও অসংগতিপূর্ণ গ্রেড সংশোধন করতে হবে।

৫. মেডিকেল টেকনোলজি কাউন্সিল গঠনের মাধ্যমে পেশাদার লাইসেন্স প্রদান, ডিপ্লোমা মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড গঠন এবং প্রাইভেট সার্ভিস নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।

৬. বি ফার্মসহ সকল অনুষদের বিএসসি ও এমএসসি কোর্স চালু করা এবং স্কলারশিপসহ প্রশিক্ষণ ভাতা চালু করতে হবে।

বৈষম্যবিরোধী জাতীয় মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট পরিষদ জানিয়েছে, ছয় দফা দাবি আদায়ের ধারাবাহিক কর্মসূচি হিসেবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টার, ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল, ঢাকা ডেন্টাল কলেজ, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউট, জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় ক্যান্সার গবেষনা ইন্সটিটিউট ও হাসপাতাল এবং ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব কিডনী ডিজিজেসে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে