করোনার নতুন প্রজাতি শনাক্ত, ফের মহামারির শঙ্কায় বিজ্ঞানীরা

প্রকাশ | ০৭ জুন ২০২৫, ১৪:০৪

যাযাদি ডেস্ক
ছবি: প্রতিকী

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের ভয়াল থাবা থেকে মুক্তি মেলেনি এখনও। এরই মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে করোনার একটি নতুন প্রজাতি। ভাইরাসটির উৎসস্থল চীনে এবার শনাক্ত হয়েছে করোনা ভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট — HKU5-CoV-2। চীনা বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ভাইরাসটির জেনেটিক মিউটেশনে সামান্য পরিবর্তন এলেই এটি অত্যন্ত সংক্রামক ও প্রাণঘাতী রূপ নিতে পারে, যার ফলে ফের সৃষ্টি হতে পারে বৈশ্বিক অতিমারীর ঝুঁকি।

চীনের গবেষকরা আশঙ্কা করছেন, এই নতুন স্ট্রেইনটি যদি মানুষের শরীরে প্রবেশের ক্ষমতা অর্জন করে, তবে দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে এবং ব্যাপক মৃত্যুর কারণ হতে পারে। এমনকি ফের লকডাউন পরিস্থিতির মুখে পড়তে পারে বিশ্ব। এই ভাইরাসটি মূলত মার্স (MERS) গোত্রের বলে মনে করা হচ্ছে, যা অতীতে এক-তৃতীয়াংশ রোগীর মৃত্যুর কারণ হয়েছিল।

এদিকে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ইতোমধ্যেই করোনা সংক্রমণ বাড়ছে। ভারতে সংক্রমণের হার বাড়তে শুরু করেছে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৫ হাজার ৩৬৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে কেরালায়, এরপর দিল্লি ও গুজরাটে। পশ্চিমবঙ্গেও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে; গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১০৬ জন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমানে ভারতে যে ভ্যারিয়েন্টগুলো (যেমন NB.1.8.1 এবং JN.1) ছড়াচ্ছে সেগুলোর মারণক্ষমতা তুলনামূলকভাবে কম হলেও নতুন HKU5-CoV-2 যদি মানবদেহে সংক্রমণ ঘটাতে সক্ষম হয়, তবে পরিস্থিতি দ্রুতই ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ও ভাইরোলজিস্ট ড. মাইকেল লেটকো জানান, HKU5-CoV-2 ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনে হালকা মিউটেশন হলেই এটি মানবদেহের ACE-2 রিসেপ্টর কোষে সহজেই প্রবেশ করতে পারবে। যা করোনাভাইরাসের মতো দ্রুত সংক্রমণের পথ খুলে দেবে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সতর্কতা না দিলেও চীনা বিজ্ঞানীদের এই পর্যবেক্ষণ নতুন করে দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের কাছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মুহূর্তে প্রয়োজন সতর্কতা, নজরদারি এবং পূর্বপ্রস্তুতি।