ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপ কি ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান?
প্রকাশ | ২৬ জুন ২০২৫, ১১:৫৫

বিশ্বের জনপ্রিয় দুইটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ। প্রতিদিন কোটি কোটি মানুষ এই দুটি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করেন যোগাযোগ, তথ্য বিনিময় এবং ব্যবসার কাজে।
তবে অনেকের মনেই একটি প্রশ্ন ঘোরে—ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ কি ইসরায়েলি কোনো প্রতিষ্ঠান?
এই প্রশ্নের উত্তর হলো না, ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান নয়। তবে প্রায় সময়ই দেখা যায় প্রতিষ্ঠান দুইটির পলিসিতে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন থাকে। তাই মেটার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
ফেসবুকের মালিকানা ও ইতিহাস
ফেসবুক প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০৪ সালে, যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মার্ক জাকারবার্গ ও তার কয়েকজন বন্ধুর উদ্যোগে। ফেসবুকের সদর দফতর যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার মেনলো পার্কে অবস্থিত।
বর্তমানে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ ও থ্রেডস—সবগুলো প্ল্যাটফর্মের মালিকানা মেটা (Meta Platforms Inc.) নামক একটি মার্কিন বহুজাতিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের অধীনে।
হোয়াটসঅ্যাপের উৎপত্তি
হোয়াটসঅ্যাপ প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০৯ সালে, যুক্তরাষ্ট্রেই। এটি তৈরি করেছিলেন জান কুম ও ব্রায়ান অ্যাক্টন, যাদের একজন (জান কুম) ইউক্রেনীয় বংশোদ্ভূত হলেও তিনি যুক্তরাষ্ট্রেই বড় হন এবং কাজ করেন।
২০১৪ সালে ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপকে কিনে নেয় ১৯ বিলিয়ন ডলারে, এবং এর পর থেকে এটি মেটার অধীনেই পরিচালিত হচ্ছে।
তাহলে ইসরায়েলের প্রসঙ্গ কোথা থেকে আসে?
অনেক সময় গুজব বা বিভ্রান্তিকর তথ্যের কারণে ধারণা তৈরি হয় যে এই অ্যাপগুলো ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণে। এর কারণ হতে পারে—
ইসরায়েলের সাইবার নিরাপত্তা ও নজরদারি প্রযুক্তি খাত বিশ্বে প্রসিদ্ধ, যার মধ্যে এনএসও গ্রুপ (পেগাসাস স্পাইওয়্যার নির্মাতা) অন্যতম।
বিভিন্ন সময়ে গুজব ছড়িয়েছে যে হোয়াটসঅ্যাপ বা ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তথ্য ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠানগুলো পাচ্ছে—তবে এসব তথ্যের কোনো প্রমাণ নেই।
ফেসবুক বা হোয়াটসঅ্যাপে যেহেতু ইসরায়েলি নাগরিকরাও উচ্চপর্যায়ে কাজ করেন, অনেকে একে ইসরায়েলি মনে করেন।
তবে বাস্তবিকভাবে ফেসবুক বা হোয়াটসঅ্যাপ—কোনোটিই ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠানের তৈরি নয়, মালিকানাও ইসরায়েলের নয়।
ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন
তবে ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রায়ই প্রশ্নে ওঠে। ফিলিস্তিন-ইসরায়েল দ্বন্দ্বে প্রতিষ্ঠানটি দখলদারদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে বলে দাবি করেছেন ফিলিস্তিনি আন্দোলনকারীরা।
শুধু আন্দোলনকারীরাই নয়, ফিলিস্তিনের সাংবাদিকরাও মনে করেন, ফেসবুক ইসরায়েলের পক্ষাবলম্বন করছে। এছাড়াও বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চলমান সংঘাতের সময়েও এই দুই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইসরায়েলের পক্ষে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে তাদের পক্ষপাতিত্ব।