বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

​ মিয়ানমারে বিক্ষোভ দমাতে পুলিশের রাতভর অভিযান

যাযাদি ডেস্ক
  ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১২:১৫

বিক্ষোভকারীদের ওপর আরও কঠোর হয়েছে মিয়ানমারের পুলিশ। সামরিক শাসকের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীরা তাদের হামলার শিকার হয়েছে। আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে রাতভর চলেছে অভিযান। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্ত দেশটির বাণিজ্যিক কেন্দ্র ইয়াঙ্গুনে এমন পরিস্থিতি দেখা গেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এদিনও ইয়াঙ্গুনে বিক্ষোভের পরিকল্পনা করেছিলেন জান্তাবিরোধীরা। এক পর্যায়ে বিশ্ব ব্যাংকের আর্থিক সহায়তার এক প্রকল্প বন্ধ ঘোষণার পর আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তারা। কিন্তু বিক্ষুব্ধরা শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থান নেওয়ার আগেই সেখানে যান জান্তার সমর্থকেরা।

ঘটনাস্থলে সরকারের প্রায় এক হাজার সমর্থক অবস্থান নিয়ে অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তারা গণমাধ্যমকর্মীদেরও হুমকি দেয়। মারধর করা হয় বিক্ষোভকারীদের।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছুরি নিয়ে হামলা চালান কেউ কেউ। অনেককে আবার পাথরও ছুড়তে দেখা যায়। অন্তত দুইজন ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন। এ ঘটনারও ভিডিও ফুটেজও পাওয়া গেছে। আরেকটি ঘটনায় ইয়াঙ্গুনের তামউইতে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে দাঙ্গা পুলিশ। বিক্ষোভকারীদের ওপর কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে তারা।

স্থানীয়রা বাসিন্দারা জানান, বেশ কয়েকবার পুলিশের গুলির শব্দ শুনেছেন তারা। শুক্রবার রাত ২টার দিকেও তারা রাজপথে পুলিশকে অবস্থান নিয়ে থাকতে দেখেছেন। নাম না প্রকাশ করার শর্তে একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আমি সত্যিকারার্থেই ভয় পেয়ে গেছি। এদিকে বৃহস্পতিবারই ‘প্রাণঘাতী সহিংসতার’ আশঙ্কায় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে নিষিদ্ধ করেছে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম।

মিয়ানমারে গত ৮ নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পায় অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি)। তবে এনএলডি নিরঙ্কশ জয় পেলেও সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) ভোটে প্রতারণার অভিযোগ তুলে ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছিল। তারা নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তোলে।

গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে নতুন পার্লামেন্টের অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে ওইদিন ভোরে স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি ও প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ এনএলডির শীর্ষ বেশ কিছু নেতাকে গ্রেপ্তারের পর এক বছরের জন্য মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা জারি করে সেনাবাহিনী। ক্ষমতায় বসেন সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং।

সেনাবাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণের পর গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর ও গ্রেপ্তার নেতাদের মুক্তির দাবিতে আন্দোলনে নামে সাধারণ মানুষ। মিয়ানমার সেনাবাহিনী বলছে, বিক্ষোভ ঠেকাতে তারা ন্যূনতম শক্তি প্রয়োগ করছে।দেশটিতে এরই মধ্যে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘিরে সহিংসতায় তিন আন্দোলনকারী ও এক পুলিশ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে।

যাযাদি/এসএইচ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে