পশ্চিমবঙ্গের চাহিদা মিটলে তিস্তার পানি পাবে বাংলাদেশ: মমতা

প্রকাশ | ০৮ মার্চ ২০২১, ১০:৩৬

যাযাদি ডেস্ক

তিস্তা নদীর পানি বন্টন নিয়ে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়ে দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার (৭ মার্চ) বিকেলে পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুঁড়িতে এক সভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের চাহিদা মেটানোর পরই কেবল বাংলাদেশ তিস্তার পানি পাবে।’ মোদীকে কঠোর ভাষায় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে মমতা বলেন, ‘হঠাৎ করে বলে তিস্তার জল দিয়ে দাও। আরে ভাই, রাজ্যকে জিজ্ঞেস করলে না। আমার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক সবচেয়ে ভালো। আমি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে শ্রদ্ধা জানাই, সালাম জানাই, খুব ভালোবাসি। একটা রাজ্য সরকার আছে। তুমি হঠাৎ গিয়ে বলে আসছ, আমার রাজ্যটাকে বিক্রি করে দেবে? বাব্বা, ওত সস্তা নয় ভাই, ওত সস্তা নয়। তিস্তা উত্তরবঙ্গের হিস্যা, বাংলার হিস্যা। এ আপকো ইয়াদ হোনা চাহিয়ে। আমিতো বলিনি জল দেব না। কিন্তু আমি তো খাব, তারপর তো জল দেব। আমার ঘরে থাকবে তারপরে তো আমি দেব।’

 

রবিবার শিলিগুড়িতে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনী মাঠে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায় ২১ মিনিট ভাষণ দেন। ভাষণের নয় মিনিট যাওয়ার পরই তিনি তিস্তা প্রসঙ্গ টেনে আনেন এবং রাগান্বিত হয়ে তিস্তার প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেন। তিস্তার জলচুক্তি নিয়ে তিনি নরেন্দ্র মোদিকেই আক্রমণ করেছেন। কিন্তু তিস্তা চুক্তি নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের আমল থেকেই কথা চলছিল। কিন্তু শিলিগুড়িতে ভাষণে তিনি নরেন্দ্র মোদিকেই প্রতিপক্ষ বানিয়ে নেন।

 

আগামী ২৬ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশর্তবর্ষের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সফর করবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ধারণা করা হচ্ছে, সেই সময় তিস্তা নিয়ে ইতিবাচক কথা বলতে পারেন। মমতা থাকাকালীন বাংলাদেশের মানুষের কাছে তিস্তা প্রতিশ্রুতি দিয়ে কোনো কাজ হবে না- রবিবার সেটা ফের পরিষ্কার করে দিলেন তিনি।

 

সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর ঢাকা সফর করেন। ওই সফরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিস্তার বিষয়টি জানতে চাইলে জয়শঙ্কর বলেছিলেন, তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে ভারত সরকার আগের অবস্থানেই আছে। তিস্তা নদীর পানি বণ্টন সমস্যা সমাধানে কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করা গেছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন এ নিয়েও তারা আলোচনা করেছেন। আমাদের পানি সম্পদ সচিবরা শিগগিরই বৈঠকে বসবেন। আমি নিশ্চিত তারা এটা আলোচনা করবেন। আমি জানি আপনারা সবাই এ বিষয়ে ভারত সরকারের অবস্থান জানেন এবং সেটার কোনো পরিবর্তন হয়নি।

 

প্রসঙ্গত, তিস্তার পানি নিয়ে ভারতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সম্মতি না পাওয়ায় কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তিতে উপনীত হতে পারছেনা গত ১০ বছর ধরে।

 

যাযাদি/এসএইচ