জার্মানিতে পুরুষ নির্যাতন, হেল্পলাইনে ফোনের ‘বন্যা’

প্রকাশ | ২০ এপ্রিল ২০২১, ২০:৩৯

যাযাদি ডেস্ক

 

বিশ্বজুড়ে নারী নির্যাতনের খবর অহরহ শোনা যায়, করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে পারিবারিক সহিংসতা আরও বেড়েছে বলে জানা যাচ্ছে। অথচ জার্মানিতে পুরুষের বিরুদ্ধে সহিংসতা সংক্রান্ত একটি হেল্পলাইন খোলার পর থেকেই ফোনের বন্যা বয়ে যাচ্ছে।

 

জানা যায়, জার্মানির নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়া ও বাভারিয়া রাজ্যে এই হেল্পলাইন খোলা হয়েছিল। গত এক বছরে সেখানে ১ হাজার ৮০০টিরও বেশি ফোনকল গেছে। এই অবস্থা দেখে কর্তৃপক্ষ হেল্পলাইন খোলা থাকার সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

 

জার্মান কর্মকর্তাদের দাবি, এই হেল্পলাইন সামাজিক সহযোগিতা ব্যবস্থায় যে ঘাটতি ছিল, তা পূরণ করছে।

 

সম্প্রতি দেশটির বাডেন-ভুর্টেমব্যার্গ রাজ্যও পুরুষ নির্যাতন হেল্পলাইন চালু করতে চলেছে। রাজ্যটির সামাজিক ন্যায় মন্ত্রী বলেছেন, পুরুষের বিরুদ্ধে সহিংসতা এখনো ট্যাবুই রয়ে গেছে। এটি তাদের জন্য লজ্জার বিষয় বলে মনে করা হয়। তবে যেকোনও ধরনের সহিংসতাই জনসমক্ষে আনা উচিত।

 

নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়ার সমানাধিকার মন্ত্রী বলেছেন, এর মাধ্যমে পুরুষরা নির্যাতিত হলেও ভয়-লজ্জা দূরে সরিয়ে তা স্বীকার করে নিচ্ছেন। তার মতে, নারী নির্যাতনের মতো পুরুষ নির্যাতন নিয়েও খোলাখুলি কথা বলা দরকার।

 

কারা ব্যবহার করছেন হেল্পলাইন

 

জার্মানিতে পুরুষ নির্যাতনের হেল্পলাইন চালু হওয়ার পর গত এক বছরে ১ হাজার ৮২৫টি ফোনকল এসেছে। প্রতিদিন কল এসেছে গড়ে ছয় থেকে নয়টি। এর মধ্যে ৩৫ শতাংশ ফোনকলই এসেছে দেশটির সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়া থেকে। বাভারিয়া থেকে কল এসেছে ১৮ শতাংশ। বাকি ফোনকলগুলো অন্য রাজ্য থেকে এসেছে।

 

পরিসংখ্যান বলছে, যারা ফোন করেছেন তাদের মধ্যে অন্তত চারভাগের মধ্যে তিনভাগই ৫১ বছরের কম বয়সী পুরুষ।

 

হেল্পলাইনে কল করে ৫৩ শতাংশ পুরুষ শারীরিক বা যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন। ৮৫ শতাংশ মানসিক নির্যাতনের কথা জানিয়েছেন। ৭০ শতাংশ পুরুষ বলেছেন, তারা খুবই সহিংস পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন।

 

তিনভাগের দুই ভাগ অভিযোগকারী নিজেই ফোন করেছেন। ১০ ভাগের একভাগ ক্ষেত্রে আশপাশের মানুষ বা পরিচিতরা ফোন করেছেন। বাকি ফোন এসেছে পেশাদার পরামর্শদাতাদের কাছ থেকে।

 

অধিকাংশ পুরুষই তাদের বর্তমান বা সাবেক জীবনসঙ্গীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন।

 

বাড়ছে পরিষেবা

 

হেল্পলাইনের উদ্যোক্তারা সম্প্রতি জানিয়েছেন, তারা এই পরিষেবা বাড়াচ্ছেন। এর জন্য আরও পেশাদার নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। বাড়ছে সেবার সময়। পাশাপাশি অনলাইনেও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। সূত্র: ডয়েচে ভেলে ।

 

যাযাদি/এসআই