পি কে হালদার কয়েক হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে: ইডি
প্রকাশ | ১৫ মে ২০২২, ০৯:৪৬
এনআরবি গ্লোবাল ব্যাঙ্কের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার বা পি কে হালদার অর্থ পাচারের অভিযোগে ২০১৯ সাল থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। গতকাল শনিবার তার আইনজীবী সুকুমারসহ তাকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অশোকনগর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ভারতের ডিরেক্টরেট অব এনফোর্সমেন্ট (ইডি) আর্থিক জালিয়াতির অভিযোগে বেশ কয়েকটি স্থানে অভিযান চালিয়ে পি কে হালদার ও তার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে। ইডি জানিয়েছে, পি কে হালদার ও তার সহযোগীরা মানি লন্ডারিং ও বৈদেশিক মুদ্রা অভিযোগে অভিযুক্ত।
ইডির বিবৃতিতে বলা হয়, পি কে হালদার ও অন্যান্য সহযোগীরা বাংলাদেশে কোটি কোটি টাকার আর্থিক জালিয়াতির দায়ে অভিযুক্ত। তারা কয়েক হাজার কোটি বাংলাদেশি টাকা ভারতসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করেছেন। পি কে হালদার, প্রীতিশ কুমার হালদার, প্রাণেশ কুমার হালদার এবং তাদের সহযোগীদের ধরতে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় অধিদপ্তর।
এতে আরও বলা হয়, পি কে হালদার জালিয়াতির মাধ্যমে ভারতের সরকারি রেশন কার্ড, ভারতীয় ভোটার আইডি কার্ড, পারমানেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বর (প্যান) ও আধার কার্ড তৈরি করে নিজেকে ভারতীয় নাগরিক শিবশঙ্কর হালদার নামে পরিচয় দিতেন।
পি কে হালদারের সহযোগীদের বিরুদ্ধেও একই ধরনের অভিযোগ রয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই বাংলাদেশি নাগরিকরা জালিয়াতির মাধ্যমে সংগ্রহ করা পরিচয় দিয়ে কলকাতার অভিজাত এলাকাসহ বিভিন্নস্থানে স্থাবর সম্পত্তি কিনেছেন।
ইডির এক কর্মকর্তা বলেছেন, 'অভিযুক্তরা বিভিন্ন ব্যাংক থেকে কোম্পানির মাধ্যমে ঋণ হিসেবে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। তাদের কোম্পানিগুলোর অস্তিত্ব শুধু কাগজে-কলমে বিদ্যমান ছিল। প্রতারিত হওয়ার পর বুঝতে পেরে ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ পুলিশের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটকে জানায় এবং পরবর্তীতে ভারত সরকারকে জানানো হয়।'
২০১৯ সালে দেশে 'ক্যাসিনোবিরোধী' অভিযান শুরু হলে পি কে হালদারের নাম আলোচনায় আসে। ২০০৯ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে পি কে হালদার ও তার সহযোগীরা ৪টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রায় এক হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো—পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (পিএলএফএস), ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেড, এফএএস ফাইন্যান্স ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স। এরপর থেকে এই প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিকভাবে নাজুক অবস্থায় আছে। এর মধ্যে পিএলএফএস'র লিকুইডেশনের প্রক্রিয়াধীন। এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা রাখা অর্থ পুনরুদ্ধারে ব্যাংকগুলোকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পি কে হালদারকে ইডি গ্রেপ্তার করেছে। সংস্থাটি মূলত মানি লন্ডারিং ও বৈদেশিক মুদ্রা সংক্রান্ত আইন লঙ্ঘনের বিষয় তদন্ত করে।
যাযাদি/এসএইচ