কারও ফোন অন কারও অফ, সাড়া দেয় না কেউ

প্রকাশ | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৪:০৯ | আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৪:১৪

যাযাদি ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত

মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে তুরস্ক ও সিরিয়ার বিশাল অঞ্চল। এখন পর্যন্ত ৫ হাজারের বেশি মানুষের মৃতদেহ উদ্ধার হলেও এই সংখ্যা কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা বলতে পারে না কেউ। হাজার হাজার ভবন ধসে পড়েছে। এসব বাড়িতে থাকা মানুষেরা কী অবস্থায় রয়েছে তা বলতে পারছে না বেঁচে থাকা আত্মীয় স্বজনরা।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বাসিন্দাদের বেশিরভাগেরই মোবাইল বন্ধ। কারও মোবাইলে কল বাজলেও ধরছে না। তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে তা জানাও সম্ভব হচ্ছে না।

তুরস্কের সানলিউরফা শহরের উত্তরের একটি সড়কে সারি সারি গাড়ি। এসব গাড়িতে করে আতঙ্কগ্রস্ত বাসিন্দাদের ধীরে ধীরে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সড়কের অন্য পাশে দেখা গেল প্রচণ্ড ঠান্ডায় বৃষ্টির মধ্যে অসহায় একটি পরিবার হেঁটে যাচ্ছে। সঙ্গে মালামালবোঝাই একটি ট্রলার। সোমবার ভূমিকম্পের পর নিরাপদে রাত কাটানোর জন্য তারা আশ্রয় খুঁজছিলেন।

সানলিউরফা হলো তুরস্কের দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চলের একটি বড় শহর। গতকাল ভোরে তুরস্ক ও সিরিয়ায় আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে শহরটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভূমিকম্পে ১০টি তুরস্কের এই প্রদেশের প্রায় সাড়ে ৩ হাজার ভবন ধসে পড়েছে। আহত হয়েছে ১১ হাজারের বেশি মানুষ।

সানলিউরফায় ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হওয়া ভবনে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন কর্মীরা। সেখানে বন্ধুকে খুঁজছেন সিরীয় শিক্ষার্থী ওমর এল চুনিদ। তিনি বলেন, ‘আমি জানি, এখানে ধ্বংসস্তূপের নিচে একটি পরিবার চাপা পড়ে আছে। বেলা ১১টা এবং দুপুরেও আমার বন্ধু তার মুঠোফোনে আমার সঙ্গে কথা বলেছে। কিন্তু এখন আর তার সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি এখানে চাপা পড়ে আছে।’

এরপরও বন্ধুকে জীবিত ফিরে পাওয়ার আশা জিইয়ে রেখে এ শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমার মনে হয়, ওর ফোনের চার্জ শেষ হয়ে গেছে।’

ওমর বলেন, বৃষ্টি কিংবা ঠান্ডা যা–ই থাকুক না কেন, তিনি ও তাঁর বন্ধুরা সারা রাত সেখানে কাটাবেন। তিনি জোর গলায় বলেন, ‘আমাকে থাকতেই হবে।’

ভূমিকম্পের পর নিরাপত্তার কথা ভেবে সবাইকে সড়কে অবস্থানের নির্দেশ দিয়েছে তুরস্ক সরকার। সে প্রসঙ্গ টেনে স্থানীয় বাসিন্দা কোয়ুনচু বলেন, ‘আমরা বাড়ি ফিরতে পারছি না, তাই এখানে অপেক্ষা করছি। এ মুহূর্তে বাড়ি ফেরা নিষেধ।’ তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকেই আতঙ্কে আছে।’

তুরস্ক ভয়াবহ ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা অসংখ্য মানুষ বাঁচার জন্য মরিয়া। তারা আর্তচিৎকার করছে। কিন্তু তাদের জীবিত উদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়ছে। হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রা, তুষার ও বৃষ্টি উদ্ধারকাজে বাধার সৃষ্টি করছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উদ্ধারকারীরা সময়মতো তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না। এ কারণে মৃতের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। সূত্র: এএফপি ও বিবিসি

যাযাদি/ এস