সেই ভাইরাল নেতা পাকিস্তান জামায়াতের আমির নির্বাচিত

প্রকাশ | ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০১

যাযাদি ডেস্ক
-ফাইল ছবি

গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে হাফিজ নাইমুর রহমানকে জয়ী ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তখন তিনি এই বিজয় মেনে নেননি। তিনি বলেন, আমি অত ভোট পাইনি যে আমাকে বিজয়ী ঘোষণা করতে হবে। বরং তিনি পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীকে আসনটি ছেড়ে দেন। তিনি বলেন আসলে বিজয়ী হয়েছে পিটিআই-সমর্থিত প্রার্থী। এর পর পাকিস্তানসহ উপমহাদেশ জুড়ে তার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। তার সততার প্রসংশা করেন অনেকে। 

সেই হাফিজ নাইমুর রহমান পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামীর নতুন আমির নির্বাচিত হয়েছেন। দলটির ষষ্ট আমির হিসেবে বৃহস্পতিবার তিনি নির্বাচিত হন বলে সংগঠনের এক্স অ্যাকাউন্টে বলা হয়েছে।

এতে বলা হয়, তিনি ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৯ সালের এপ্রিল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করবেন। ইতোপূর্বে তিনি দলটির করাচি শাখা আমির ছিলেন।

জামায়াতে ইসলামির নির্বাচন কমিশনের সভাপতি রশিদ নাসিম লাহোরে এক সংবাদ সম্মেলন করেও ফলাফল ঘোষণা করেন। তিনি জানান, তিনজন প্রার্থীর মধ্য থেকে সদস্যরা তাকে নির্বাচিত করেছেন। তিনি বলেন, ভোটারের উপস্থিতি ছিল ৮২ ভাগ।

হাফিজ নাইম হলেন পাকিস্তান জামায়াতের ষষ্ট আমির। ইতোপূর্বে মাওলানা আবুল আ'লা মওদুদি (১৯৪১-৭২), মিয়া তোফায়েল মোহাম্মদ (১৯৭২-৮৭), কাজি হোসাইন আহমদ (১৯৮৭-২০০৮), মনোয়ার হাসান (২০০৮-২০১৩) এবং সিরাজুল হক (২০১৩-২০২৪) পাকিস্তান জামায়াতের আমির হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।


হাফিস নাইমের পূর্বসূরি সিরাজুল হক গত ৮ ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে খারাপ ফলাফলের পর পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তবে তা দলটি গ্রহণ করেনি।

নতুন আমির নির্বাচনের পর সিরাজুল হক তার সাফল্য কামনা করেন। পাকিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ড. আরিফ আলভিও জামায়াতে ইসলামির নতুন আমিরের সাফল্য কামনা করেছেন।

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআইয়ের নেতা আসাদ কায়সার অভিনন্দন বার্তায় বলেন, 'পাকিস্তানের রাজনীতিতে নাইমুর রহমান একজন ইতিবাচক মুখ। তিনি ক্ষমতার বদলে মূল্যবোধ ও নীতিবোধের রাজনীতি করেন।'

তিনি বলেন, 'জামায়াতে ইসলামি সাংবিধানিক শ্রেষ্ঠত্ব এবং আইনের শাসনের জন্য লড়াইয়ে আমাদের প্রধান মিত্র। আমি আশা করি নাইমুর রহমানের নেতৃত্বে পিটিআই এবং জেআইয়ের নেতৃত্বের মধ্যে সম্পর্ক আরো জোরদার হবে।'

হাফিস নাইমের পরিচিতি

হাফিস নাইম ৮ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে প্রাদেশিক পরিষদে জয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু পরে এই যুক্তিতে আসনটি ছেড়ে দেয়ার ঘোষণা দেন যে এতে আসলে জয়ী হয়েছিলেন পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী। তিনি নির্বাচনে কারচুপির বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করেন।


তিনি বলেছিলেন, ‌'আমাদের ভোট নয়, এমন একটি সিঙ্গেল ভোটও আমি চাই না। আর আমাদের পক্ষে পড়েছে, এমন একটি সিঙ্গেল ভোটও আমি ছেড়ে দিতে চাই না।'

তার এই ঘোষণা সত্ত্বেও পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন তাকে নির্বাচিত ঘোষণা করে।

গত বছর হাফিজ নাইম করাচির মেয়র পদে পিপিপির মর্তুজা ওয়াহাবের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। ওয়াহাব ১৭৩ ভোট পেয়ে জয়ী হন। হাফিজ পেয়েছিলেন ১৬০ ভোট।

হাফিস নাইম এনইডি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিগ্রি নিয়েছেন। তিনি করাচি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের ইতিহাসের ওপর মাস্টার্স ডিগ্রি নেন। তিনি পরিবেশবাদী হিসেবেও পরিচয় দিয়ে থাকেন। তিনি জামায়াতে ইসলামির ছাত্র সংগঠন জমিয়তে তালেবার (আইজেটি) সভাপতি ছিলেন দুবার।

তিনি ২০০০ সালে জামায়াতের রুকন হন। আর ২০১৩ সালের অক্টোবরে জামায়াতের করাচি শাখার আমির হন। সূত্র : ডন, পাকিস্তান টুডে

যাযাদি/ এস