হামাস নেতা সিনওয়ার যোদ্ধাদের দেখতে প্রকাশ্যে এলেন 

প্রকাশ | ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:৫৬

যাযাদি ডেস্ক
ইয়াহিয়া সিনওয়ার

ধ্বংস করে দেয়া এক জনপদের নাম অবরুদ্ধ গাজা। দখলদার ইসরাইলী বাহিনী দীর্ঘদিন সেখানে হাজার হাজার টন বোমা ফেলেছে। যার নীচে চাপা পড়েছে হাজার হাজার মানুষ, ঘর-বাড়ী, হাসপাতাল, স্কুল কলেজ ও হাট-বাজার। বলা যায় সেখানে এখন আর মানুষের বসবাসের কোনো স্থান নেই। বাতাসে রারুত ও লাশের গন্ধা। সেই জনপদে আবারো ফুল পোটাতে চায় ফিলিস্তিনির স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের যোদ্ধারা। তারা যুদ্ধা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলের বিরুদ্ধে। 

এদিকে গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার তার বাহিনীর সদস্যদের সাথে সাক্ষাত করতে সুড়ঙ্গ ছেড়ে ওপরে চলে এসেছিলেন বলে খবর পাওয়া গেছে। হামাসের একটি সিনিয়র সূত্র আল-আরাবি আল-জাদিদকে বুধবার এই তথ্য জানান।

সূত্রটি জানায়, সিনওয়ার 'সম্প্রতি প্রতিরোধ বাহিনী এবং দখলদার সেনাবাহিনীর মধ্যকার সঙ্ঘাতের স্থানগুলো পরিদর্শন করেছেন। তিনি সুড়ঙ্গে নয় বরং মাটির ওপরে আন্দোলনটির যোদ্ধাদের কয়েকজনের সাথে সাক্ষাত করেছেন।

সূত্রটি দাবি করে, সিনওয়ার 'বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন নন।'
তিনি বলেন, 'সুড়ঙ্গের ভেতরে সিনওয়ার বিচ্ছিন্ন হয়ে আছেন বলে যে দাবি করা হয়, তা আসলে নেতানিয়াহু এবং তার সংস্থাগুলোর কথা। তারা ইসরাইলি রাস্তায় এবং তাদের মিত্রদের কাছে ঘোষণা করা তাদের লক্ষ্য হাসিলে ব্যর্থতা ঢাকা দিতে এসব কথা বলে থাকেন।'

হামাস সূত্রটি কোনো যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপে ৪০ জনের বদলে ২০ বন্দীকে মুক্তি দিতে হামাস আগ্রহী বলে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তিনি সেটাও অস্বীকার করেন।

সূত্রটি জানায়, গাজায় আটক বন্দীদের ঠিক কতজন এখনো বেঁচে আছে, তা নির্ভুলভাবে নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। তবে কয়েকটি মিডিয়ায় যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, সংখ্যাটি তার চেয়ে অনেক বেশি।

সূত্রটি দাবি করে, হামাসের হাতে প্রায় ৩০ জন ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এবং শিনবেত অফিসার আটক রয়েছে। এসব বন্দীকে অত্যন্ত সুরক্ষিত স্থানে রাখা হয়েছে। তারা আছে দখলদারদের হাত থেকে অনেক দূরে। কোনো পরিস্থিতিতেই তাদের কাছে যাওয়া অসম্ভব।

হোস্টেজ অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিজ ফোরাম জানিয়েছে, হামাস নেতা সিনওয়ারের সুড়ঙ্গ থেকে বের হয়ে আসার খবরটিকে তারা 'বিশ্বাসযোগ্য' মনে করছে। উল্লেখ্য, হামাসের অভিযানে আটকদের মুক্তির জন্য এই ফোরাম গঠিত হয়েছে।

হোস্টেজ অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিজ ফোরাম জানিয়েছে, 'সিনওয়ারের ছবি দেখা যায় গাজার রাস্তায় রাস্তায়। আর বন্দীরা বেজমেন্টে পড়ে আছে। এটা ইসরাইলি ব্যর্থতার ছবি।

তবে সাবেক সিনিয়র শিন বেত অফিসার মিকাহ কবি ইসরাইলি মিডিয়া মারিভকে বলেন, তাত্ত্বিকভাবে এমনটা সম্ভব যে আইডিএফের বিশৃঙ্খলা এবং গাজা উপত্যকা থেকে বেশিভাগ ইসরাইলি বাহিনী প্রত্যাহারের সুযোগ সিনওয়ার গ্রহণ করবেন। তিনি একে কাজে লাগিয়ে আরো মুক্তভাবে তার যোদ্ধাদের পরিচালিত করতে পারবেন।

উল্লেখ্য, সিনওয়ার যখন ইসরাইলি কারাগারে বন্দী ছিলেন, তখন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন মিকাহ কবি।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, সিনওয়ারের সুড়ঙ্গ থেকে বের হওয়ার খবর মিডিয়ার বানানো কল্পকথার চেয়ে বেশি নয়। তারা জানে যে ইসরাইলি বাহিনী রাফায় প্রবেশ করবে। ফলে তারা মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমাদের বিভ্রান্ত করতে চাইবে, তারা আমাদের লক্ষ্য ভিন্ন দিকে চালিত করতে আগ্রহী। সূত্র : জেরুসালেম পোস্ট

যাযাদি/ এস