গাজায় ‘এক গ্রাম খাদ্যও ঢুকতে দেওয়া উচিত নয় : ইসরাইল
প্রকাশ | ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৩:৪৫

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখন্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল।
টানা প্রায় ১৮ মাস ধরে চালানো এই আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৫১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। হামলার পাশাপাশি ইসরাইল গাজাতে সর্বাত্মক অবরোধও জারি রেখেছে।
ফলে গাজায় বহু মানুষ দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছে। এমন অবস্থায় গাজায় এক গ্রাম খাদ্য বা সাহায্যও ঢুকতে না দেওয়ার আহŸান জানিয়েছেন ইসরাইলের উগ্র-ডানপন্থি জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির।
এমনকি গাজায় ত্রাণ ঢুকতে দিলে তা ইসরাইলের “হামাসকে পরাজিত করার প্রচেষ্টা ক্ষতিগ্রস্ত করবে” বলেও দাবি করেছেন তিনি। বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
ইসরাইল গত ২ মার্চ থেকে গাজায় মানবিক সহায়তার প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে।
চলমান ইসরাইলি সামরিক অভিযানের মাঝে এই উপত্যকায় ভয়াবহ মানবিক সংকট বৃদ্ধি পেয়েছে।
এর মাঝেই গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে দুই মাসের যুদ্ধবিরতি চুক্তির অবসান ঘটিয়ে গত ১৮ মার্চ গাজায় নতুন করে অভিযান শুরু করে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে শুরু হওয়া ইসরাইলি বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৬৫২ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও প্রায় ৪ হাজার ৪০০ জন আহত হয়েছেন।
ইসরাইরের বর্বর এই হামলা চলতি বছরের জানুয়ারিতে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে দিয়েছে।
এরই মাঝে ইসরাইলের উগ্র-ডানপন্থি জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির বুধবার এক বিতর্কিত মন্তব্যে বলেন, গাজা উপত্যকায় “এক গ্রাম খাবার বা ত্রাণও” ঢুকতে দেওয়া উচিত নয়, যতক্ষণ না সেখানে বন্দি থাকা ইসরাইলিদের মুক্ত করা হচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, “আমরা আমাদের ভুল থেকে কিছুই শিখিনি। যখন আমাদের বন্দিরা এখনো সুড়ঙ্গের ভেতরে মৃত্যুবরণ করছে, তখন গাজায় এক গ্রাম খাবার বা ত্রাণ পাঠানোরও কোনো যৌক্তিকতা নেই।”
বেন-গভির দাবি করেন, গাজায় ত্রাণ ঢুকতে দিলে তা ইসরাইলের “হামাসকে পরাজিত করার এবং বন্দিদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।”
এর আগে গাজা উপত্যকায় কোনও ধরনের মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দেয় ইসরাইল। ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেন, গাজায় ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত “কৌশলগত চাপ প্রয়োগের অংশ”, যাতে হামাস সাধারণ মানুষের দুঃখকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে।
মূলত ইসরাইল ২ মার্চ থেকে গাজার সব সীমান্ত পুরোপুরি বন্ধ করে রেখেছে, ফলে খাদ্য, পানি, ওষুধসহ জরুরি সহায়তা প্রবেশে বাধা তৈরি হয়েছে।
অথচ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, গাজায় বহু মানুষ দুর্ভিক্ষের মুখে। ইসরাইলি সেনাবাহিনী ১৮ মার্চ থেকে আবারও গাজায় ভয়াবহ হামলা শুরু করেছে।
যদিও জানুয়ারিতে একবার যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময়ের চুক্তি হয়েছিল। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরাইলি আগ্রাসনে ৫১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
যাযাদি/আর