ভারতের সঙ্গে যুদ্ধের শঙ্কায় আগাম যে প্রস্তুতি নিচ্ছে আজাদ কাশ্মির
প্রকাশ | ০৪ মে ২০২৫, ১৪:৩৩

জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে এবং এই উত্তেজনা সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কাও বাড়ছে।
এমন অবস্থায় ভারতের সঙ্গে আসন্ন যুদ্ধের শঙ্কায় আগাম প্রস্তুতি নিচ্ছে পাকিস্তান-শাসিত আজাদ কাশ্মির। সম্ভাব্য এই যুদ্ধকে সামনে রেখে নিয়ন্ত্রণরেখার (এলওসি) বিভিন্ন দুর্গম এলাকায় খাবারের সরবরাহ বাড়িয়েছে পাকিস্তান। এছাড়া জরুরি প্রয়োজন মেটাতে ১০০ কোটি রুপির ‘জরুরি তহবিল’ও গঠন করা হয়েছে। রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা ও সীমান্তে অনুপ্রবেশের শঙ্কার মধ্যে আজাদ জম্মু ও কাশ্মিরের (এজেকে) খাদ্য বিভাগ নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) সংলগ্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় আটা সরবরাহ বাড়ানোর কাজ শুরু করেছে।
আজাদ কাশ্মিরের প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী আনোয়ারুল হকের নির্দেশে এবার সীমান্তবর্তী এলাকায় অন্তত দুই মাসের জন্য মজুত বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আজাদ কাশ্মিরের খাদ্যমন্ত্রী চৌধুরী আকবর ইব্রাহিম বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী আমরা পুরো সীমান্ত এলাকায় দুই মাসের জন্য পর্যাপ্ত আটা সরবরাহ নিশ্চিত করতে জোরদার অভিযান শুরু করেছি।” তিনি আরও জানান, সীমান্তে গোলাবর্ষণ বা সামরিক হামলার ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো থেকে খাদ্য গুদাম তুলনামূলক নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কাজও চলছে, যাতে মানুষের জন্য আটার সহজলভ্যতা ব্যাহত না হয়।
আজাদ কাশ্মিরের এই মন্ত্রী আরও বলেন, “যেসব এলাকা প্রায়ই শীতকালীন তুষারপাত বা ভারতীয় গোলাবর্ষণে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, সেখানে খাদ্য সরবরাহ অব্যাহত রাখতে বিকল্প পরিকল্পনা তৈরির জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছি।”
এর আগে গত বৃহস্পতিবার আজাদ কাশ্মিরের প্রধানমন্ত্রী আইনসভায় জানান, তিনি ১ বিলিয়ন (১০০ কোটি) রুপির প্রাথমিক বাজেটের একটি ‘জরুরি তহবিল’ গঠন করেছেন। এই তহবিল থেকে সীমান্তের ১৩টি আসনে (যেগুলো নীলম, ঝেলম উপত্যকা, হাভেলি, পুঞ্চ, কোটলি ও ভিম্বার জেলায় অবস্থিত) খাদ্য, জীবনরক্ষাকারী ওষুধ এবং জরুরি সেবা সরবরাহের জন্য খরচ করা হবে। আজাদ কাশ্মিরের খাদ্য বিভাগের পরিচালক আবদুল হামিদ কিয়ানি জানান, “নিয়ন্ত্রণরেখার সব গুদামে ইতোমধ্যেই পর্যাপ্ত আটা মজুত রয়েছে।
তবে বর্তমান অনিশ্চিত পরিস্থিতি ও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী দুই মাসের জন্য মজুত বাড়ানো হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের সব ঠিকাদারকে সর্বোচ্চ সংখ্যক গাড়ি ব্যবহার করে দ্রæততম সময়ে আটা পৌঁছাতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সরবরাহের পুরো প্রক্রিয়া আমরা সরাসরি পর্যবেক্ষণ করছি।” কিয়ানি আরও জানান, লক্ষ্যের ৭০ শতাংশ ইতোমধ্যেই পূরণ হয়েছে।
এদিকে শনিবার আজাদ কাশ্মিরের রাজধানী মুজাফফরাবাদের উপকণ্ঠের একটি মিল থেকে প্রায় ২৫০ টন আটা সীমান্তবর্তী এলাকায় পাঠানো হয়েছে। খাদ্য পরিদর্শক সৈয়দ জওয়ার হায়দার এই মিলের কার্যক্রম তদারকি করছিলেন।
তিনি জানান, “এই চালানগুলো নীলম উপত্যকা ও ঝেলম উপত্যকার সীমান্তবর্তী এলাকায় পাঠানো হচ্ছে। আমরা কাজ নিরবিচ্ছিন্নভাবে চালিয়ে যাচ্ছি এবং আশা করছি আগামী দুই দিনের মধ্যে পুরো সরবরাহ সম্পন্ন হবে।”
যাযাদি/আর