গাজা দখলের চূড়ান্ত পরিকল্পনা ইসরাইলের
প্রকাশ | ০৬ মে ২০২৫, ১৪:১৯

গাজা দখলের চূড়ান্ত পরিকল্পনা করেছে দখলদার ইসরাইল।
দেশটির নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা গাজার ওপর আরও বড় পরিসরে সামরিক অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই পরিকল্পনার আওতায় গাজার কিছু অংশ দখল করে তা দীর্ঘমেয়াদে নিয়ন্ত্রণে রাখার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি গাজার ২১ লাখ বাসিন্দাকে দক্ষিণ দিকে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে তাদের ‘নিরাপত্তা নিশ্চিত’ করা যায়।
রোববার রাতে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল এয়াল জামিরের প্রস্তাবিত পরিকল্পনাটিকে সর্বসম্মতভাবে অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।
প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এ সিদ্ধান্তকে ‘হামাসকে ধ্বংস ও জিম্মিদের মুক্তির লক্ষ্যে জোরালো পদক্ষেপ’ বলে উল্লেখ করেছেন। নেতানিয়াহু বলেন, আমাদের সেনারা গাজায় ঢুকে বেরিয়ে আসবে না, তারা সেখানে থাকবে। তবে ঠিক কতটা এলাকা দখল করা হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।
এদিকে, মন্ত্রিসভা একটি বিতর্কিত সহায়তা সরবরাহ পরিকল্পনাও অনুমোদন করেছে। এর আওতায় বেসরকারি কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে গাজায় ত্রাণ পৌঁছানো হবে। এটি কার্যকর হলে যদিও দুই মাস ধরে চলা অবরোধের অবসান ঘটবে; তবে জাতিসংঘ ও অন্যান্য মানবিক সংস্থাগুলো এই পরিকল্পনার কড়া সমালোচনা করেছে।
তারা বলেছে, এটি আন্তর্জাতিক মানবিক নীতিমালার পরিপন্থী এবং এ ধরনের ত্রাণ বিতরণে তারা অংশ নেবে না। জাতিসংঘ আরও বলছে, ইসরাইলি অবরোধের কারণে গাজায় খাদ্য সংকট চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে।
হামাসের পক্ষ থেকেও এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করা হয়েছে। সংগঠনটির এক শীর্ষ নেতা একে ‘ইসরাইলের চাপ ও ব্ল্যাকমেইল’ হিসেবে উল্লেখ করে জানান, তারা এমন কোনো শর্তে রাজি নয়।
যুদ্ধবিরতির শর্তে হামাসের সঙ্গে দ্বিমত দেখা দিলে গত ১৮ মার্চ থেকে আবারো গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরাইল। ইসরাইলি কর্মকর্তাদের দাবি, এই নতুন পদক্ষেপের লক্ষ্য হামাসকে পরাজিত করা এবং এখনও জিম্মি থাকা ইসরাইলিদের ফিরিয়ে আনা।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরাইলের এই পরিকল্পনার বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে বলেন, তিনি ফিলিস্তিনিদের জন্য খাদ্য সহায়তা পাঠাতে সহায়তা করবেন।
ইসরাইলের এক শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই পরিকল্পনার বাস্তবায়নে ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে। তিনি বলেন, এর ফলে হামাসের সামনে একটি ‘সমঝোতার জানালা’ খোলা থাকবে, যাতে তারা যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তির একটি চুক্তিতে সম্মত হতে পারে।
প্রসঙ্গত, ট্রাম্পের এই সফরে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং কাতার যাওয়ার কথা রয়েছে।
সূত্র: বিবিসি
যাযাদি/আর