‘পাকিস্তানের সামরিক ও প্রযুক্তিগত সক্ষমতা দেখে হতভম্ব ভারত’
প্রকাশ | ১১ মে ২০২৫, ১৯:২৬

পাকিস্তান সামরিক সরঞ্জাম, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা ও কারিগরি শক্তির মাধ্যমে ভারতকে অবাক করে দিতে পেরেছে বলে মন্তব্য করেছেন ব্রিটিশ নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অধ্যাপক মাইকেল ক্লার্ক।
পাকিস্তান সামরিক সরঞ্জাম, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা ও কারিগরি শক্তির মাধ্যমে ভারতকে অবাক করে দিতে পেরেছে বলে মন্তব্য করেছেন ব্রিটিশ নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অধ্যাপক মাইকেল ক্লার্ক।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্লার্ক বলেছেন, ‘ভারত সম্ভবত পাকিস্তানের শক্তি প্রদর্শনকে ঝুঁকি নেওয়ার লক্ষণ হিসেবে দেখবে। পাকিস্তানের সক্ষমতার সামনে ভারত অনেকটাই অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়ে গিয়েছিল।’
এর কারণ হিসেবে ক্লার্ক বলেন, ‘সাম্প্রতিক উত্তেজনায় পাকিস্তান তাদের বহরে থাকা অনেক চীনা প্রযুক্তিনির্ভর সরঞ্জাম ব্যবহার করেছে। এর মধ্যে সবার মনোযোগ জে-১০ যুদ্ধবিমানের দিকে।’
ক্লার্ক আরও বলেন, ‘মনে হচ্ছে পাকিস্তানের একটি জে-১০ জেট ভারতের অস্ত্রাগারে থাকা ফ্রান্সের তৈরি একটি রাফায়েলকে ভূপাতিত করেছে।
এ ছাড়া পাকিস্তান তাদের এইচকিউ-৯ অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে, যা বেশ কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে।’
‘তাই আমি মনে করি ভারতীয়রা তাদের চীনা সরঞ্জাম দিয়ে পাকিস্তানের প্রযুক্তিগত দক্ষতা দেখে অবাক হতে পারে,’ বলেন এই নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ।
তবে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের যুদ্ধংদেহি মনোভাব দেখে তারা অবাক হয়নি, কারণ তারা এটাই আশা করেছিল—বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ক্লার্ক বলেন, ‘ভারতের প্রতিক্রিয়ার একটি অংশ ছিল জেনারেল মুনিরকে একটি শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা।
ভারত বোঝাতে চেয়েছে, তারা যেকোনো কিছু করতে প্রস্তুত। এর অংশ হিসেবে তারা তাদের পশ্চিমা নৌবহরের একটি বিমানবাহী রণতরী দল মোতায়েন করেছে।
এটি করাচি থেকে মাত্র ৩০০ মাইল দূরে ছিল। এটি একটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের দিকে যাওয়ার হুমকি, যদি না পাকিস্তান তাদের অবস্থান থেকে সরে আসে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এমন একটি উপায় বের করেছে যেখানে উভয় দেশ সংঘাত থামানোর বিষয়টি মেনে নিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘উভয় পক্ষই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসন ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও কঠোর চেষ্টা করে এই যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করেছেন।’
তবে এই ইস্যুতে মার্কিন প্রশাসন কিছুটা দেরিতে যুক্ত হলেও তাদের কথায় কাজ হয়েছে বলে জানান তিনি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শনিবার বলেছেন, ভারত ও পাকিস্তান একে অপরের সামরিক স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে চতুর্থ দিনের হামলা এবং পাল্টা হামলার পর ‘পূর্ণ এবং তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে’ সম্মত হয়েছে। ভারত-পাকিস্তানের পক্ষ্য থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
কয়েক দশক ধরে চলা পাকিস্তান-ভারত দ্বন্দ্বের সর্বশেষ উত্তেজনা শুরু হয় গত ৭ মে, পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারতের হামলার মধ্য দিয়ে।
এতে কমপক্ষে ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়। প্রতিশোধ হিসেবে তিনটি রাফায়েলসহ পাঁচটি ভারতীয় বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান এবং কয়েক ডজন ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করে পাকিস্তান।
ক্রমাগত হামলা পাল্টা হামলার জেরে শনিবার ভোরে পাকিস্তানি বিমানঘাঁটিতে হামলার পরপরই সরাসরি জবাব দেয় দেশটির সেনাবাহিনী।
পাকিস্তান বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান জেএফ-১৭ থান্ডার থেকে ছোড়া হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র আদমপুর বিমানঘাঁটিতে ভারতের এস-৪০০ সিস্টেম ধ্বংস করে দেয় বলে জানায় ইসলামাবাদ। এই হামলার সময় বিমানঘাঁটিটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মূল্য প্রায় ১.৫ বিলিয়ন ডলার, যা ভারতের সবচেয়ে উন্নত বিমান প্রতিরক্ষা ঢাল হিসেবে বিবেচিত।
সূত্র: জিও নিউজ