বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে ধর্ষণ, যা বলল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট
প্রকাশ | ০৪ জুন ২০২৫, ১৭:৩২

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, কোনো বিবাহিত নারী যদি স্বামীর সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক এখনও চলমান অবস্থায় থাকে, তবে তিনি অন্য কোনো পুরুষের বিরুদ্ধে ‘বিবাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের’ অভিযোগ আনতে পারেন না।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, মহারাষ্ট্রের সাতারা জেলার এক বিবাহিত নারী, যিনি চার বছর বয়সী সন্তানের মা এবং বাবা-মায়ের বাড়িতে বসবাস করতেন। তিনি পাশের বাড়ির ২৩ বছর বয়সী বিএসসি ছাত্রের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। তার অভিযোগ অনুযায়ী, ৮ জুন ২০২২ থেকে ৮ জুলাই ২০২৩ পর্যন্ত ওই যুবক তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেছেন এবং বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছেন যে, তার তালাক হলে তাকে তিনি তাকে বিয়ে করবেন।
এমন প্রতিশ্রুতিতে নারীটি তার স্বামীর সঙ্গে ২০২২ সালের ২৯ ডিসেম্বর তালাক সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। যুবক প্রথমে হাইকোর্টে মামলা খারিজের আবেদন করেন, কিন্তু সফল না হয়ে পরে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বি ভি নাগারথ্না এবং সতীশ সি শর্মার বেঞ্চ পর্যবেক্ষণে বলেন, নারীর বক্তব্য ও তার আচরণে অসঙ্গতি রয়েছে।
নারী অভিযোগ করেছেন তিনি সম্মতি ছাড়াই শারীরিক সম্পর্কের শিকার হন, কিন্তু তিনি এক বছর ধরে সম্পর্ক চালিয়ে যান এবং দুবার হোটেলেও যান।
বিচারপতি শর্মা বলেন, তালাক ২৯ ডিসেম্বর ২০২২-এ হয়। তাই সম্পর্কের শুরুতে যখন তিনি বিবাহিত ছিলেন, তখন বিবাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠা আইনি দৃষ্টিতে অবৈধ ও বাস্তবতাবর্জিত।
আদালত বলেন, এ ধরনের সম্পর্ক স্বেচ্ছায় এবং দীর্ঘস্থায়ী হলে, তা একতরফাভাবে ‘ধর্ষণ’ হিসেবে গণ্য করা যায় না।
এ ছাড়া অভিযোগ আনা হয়েছিল ওই যুবক গ্র্যাজুয়েট হয়ে নিজ শহর আহমেদনগরে ফিরে যাওয়ার পর। তখনই নারীটি তার বাড়িতে যান এবং যুবকের পরিবারের সঙ্গে বিবাদের সৃষ্টি হয়।
সুপ্রিম কোর্ট মন্তব্য করে, একজন বিবাহিত নারী, যার একটি চার বছর বয়সী সন্তান রয়েছে, তিনি দীর্ঘ এক বছরের জন্য প্রতারণার শিকার হতে পারেন, এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। এমন সম্পর্ক ভেঙে গেলে তা ফৌজদারি মামলার ভিত্তি হতে পারে না।