উত্তাল লস অ্যাঞ্জেলেস, ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন
প্রকাশ | ০৮ জুন ২০২৫, ১১:৪৭ | আপডেট: ০৮ জুন ২০২৫, ১১:৪৯

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসনবিরোধী অভিযানে অন্তত ৪৪ জনকে আটক করা হয়েছে।
তাদের আটকের জেরে লস অ্যাঞ্জেলেসে দ্বিতীয় দিনের মতো শতাধিক বিক্ষোভকারীরর মুখোমুখি হয়েছে সরকারের ফেডারেল এজেন্টরা। এ ঘটনায় মোকাবিলা করতে দুই হাজার ন্যাশনাল গার্ড সেনা মোতায়েন করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
স্থানীয় সময় শনিবার (৭ জুন) হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘বিশৃঙ্খলা মোকাবিলায়’ ন্যাশনাল গার্ড সেনা মোতায়েনের জন্য ট্রাম্প একটি রাষ্ট্রপতি স্মারকলিপি স্বাক্ষর করেন।
ট্রাম্পের সীমান্ত প্রধান টম হোম্যান ফক্স নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, শনিবার রাত থেকেই ন্যাশনাল গার্ড লস অ্যাঞ্জেলেসে মোতায়েন করা হবে। খবর রয়টার্সের।
এর আগে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ সতর্ক করে বলেন, লস অ্যাঞ্জেলেসে ‘যদি সহিংসতা চলতে থাকে’ তবে পেন্টাগন সক্রিয়-দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনা মোতায়েন করতে প্রস্তুত রয়েছে।
শনিবার দক্ষিণ-পূর্ব লস অ্যাঞ্জেলেসের প্যারামাউন্ট এলাকায় বিক্ষোভকারীরা ফেডারেল এজেন্টদের মুখোমুখি হন। এ সময় কিছু বিক্ষোভকারী মেক্সিকোর পতাকা প্রদর্শন করেন, যা উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তোলে।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, অভিবাসন সংস্থাগুলো তাদের কর্মী ও স্বজনদের ‘অপহরণ’ করছে। এর বিরুদ্ধে সংগঠিত প্রতিরোধ গড়ে তোলার হুঁশিয়ারিও দেন তারা।
এই পরিস্থিতি লস অ্যাঞ্জেলেসের ডেমোক্রেট নেতৃত্বাধীন প্রশাসন ও হোয়াইট হাউসের মধ্যে তীব্র রাজনৈতিক বিভাজনকে স্পষ্ট করে তুলেছে।
অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের অভিযানের সিদ্ধান্তকে ‘ইচ্ছাকৃতভাবে উসকানিমূলক’ বলে অভিহিত করেছেন ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউসম।
তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের এক পোস্টে দাবি করেন, ট্রাম্প আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ব্যর্থতার কারণে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করছেন না, বরং তিনি একটি ‘তামাশা’ করতে চান। তার মতে, জনগণকে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ জানানো উচিত এবং সহিংসতায় লিপ্ত হওয়া উচিত নয়।
অন্যদিকে ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, যদি নিউসম ও লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন বাস তাদের কাজ করতে না পারেন তাহলে ফেডারেল সরকার হস্তক্ষেপ করবে ও সমস্যা সমাধান করবে, যেভাবে এটি সমাধান করা উচিত।
দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই অবৈধ অভিবাসীদের নির্বাসন ও যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্ত কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের অঙ্গীকার করেন ট্রাম্প। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩ হাজার অভিবাসীকে গ্রেপ্তারের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে এই ব্যাপক অভিযান আইনত বসবাসকারী ব্যক্তিদেরও প্রভাবিত করছে।
গত শুক্রবার রাতে শহরে অভিযান চালিয়ে অন্তত ৪৪ জনকে গ্রেপ্তার করে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)।
লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র কারেন বাস এই অভিযানের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, ‘এই কার্যক্রমগুলো আমাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং শহরের নিরাপত্তার মৌলিক নীতিগুলোকে ব্যাহত করে। আমরা এটা মেনে নেব না।’