আমাদের অপহরণ করা হয়েছে: ভিডিও বার্তায় গ্রেটা

প্রকাশ | ০৯ জুন ২০২৫, ১৩:৪৪

যাযাদি ডেস্ক
গাজাগামী ত্রাণবাহী জাহাজ ‘ম্যাডলিন’ থেকে ভিডিও বার্তা পাঠিয়ে আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছেন সুইডিশ পরিবেশবাদী গ্রেটা থুনবার্গ।

গাজাগামী ত্রাণবাহী জাহাজ ‘ম্যাডলিন’ থেকে ভিডিও বার্তা পাঠিয়ে আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছেন সুইডিশ পরিবেশবাদী গ্রেটা থুনবার্গ।

ভিডিওটিতে তাকে দেখা যায় ফিলিস্তিনি কেফিয়াহ পরিহিত অবস্থায় এবং হাতে ফিলিস্তিনের পতাকা নিয়ে কথা বলতে। খবর আলজাজিরার।

গ্রেটা থুনবার্গ বলেন, 'আমার নাম গ্রেটা থুনবার্গ, আমি এসেছি সুইডেন থেকে। বর্তমানে আমরা আন্তর্জাতিক জলসীমায় আছি, যেখানে আমাদের জাহাজ আটকে রাখা হয়েছে। দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী অথবা তাদের সহযোগী বাহিনী আমাদের জোরপূর্বক ধরে এনেছে।'

‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন’ নামের আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থা পরিচালিত এই জাহাজে বিভিন্ন দেশের ১২ জন মানবাধিকারকর্মী ছিলেন, যাদের একজন গ্রেটা। মানবিক ত্রাণ নিয়ে ইতালি থেকে রওনা হওয়া এই জাহাজটি গাজা উপকূলে পৌঁছাতে পারেনি। ইসরায়েলি বাহিনী জাহাজটি দখলে নিয়ে সেটিকে আশদাদ বন্দরের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

গ্রেটার ভিডিও বার্তাটি সম্ভাব্য পরিস্থিতি বিবেচনায় আগেই রেকর্ড করে রাখা হয়েছিল। জাহাজ দখলের আগে সেটি প্রকাশ করা হয়। তিনি বলেন, 'আমি আমার পরিবার, বন্ধু ও সহকর্মীদের অনুরোধ করছি যেন তারা সুইডিশ সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে আমাদের দ্রুত মুক্তির ব্যবস্থা করে।'

ত্রাণবাহী জাহাজে যে মানবাধিকারকর্মীরা ছিলেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত ফরাসি নাগরিক ও ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য রিমা হাসান, জার্মানির ইয়াসেমিন আচার, ফ্রান্সের ব্যাপতিস্ত আন্দ্রে ও ওমর ফায়াদ, ব্রাজিলের থিয়াগো আভিলা, স্পেনের সার্জিও তোরিবিও, তুরস্কের সুলাইব ওর্দু, নেদারল্যান্ডসের মার্কো ফন রেনেস এবং ফ্রান্সের রিভা ভিয়া।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার)-এ একটি বার্তায় জানিয়েছে, ম্যাডলিন জাহাজটিকে আটক করে নিরাপদে উপকূলে আনা হচ্ছে। তাদের ভাষায় এটি 'সেলফি ইয়ট' এবং এতে থাকা ব্যক্তিরা 'সেলিব্রিটি।'

এদিকে ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী জাহাজটি দখলে নেওয়ার পর যাত্রীদের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। টেলিগ্রামে পোস্ট করা একটি ছবিতে দেখা যায়, ত্রাণকর্মীরা হাত উঁচু করে বসে আছেন, যা দখলের সময়ের দৃশ্য বলে দাবি করা হয়েছে।

সংস্থাটির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জাহাজটি গাজার জন্য বিশেষভাবে প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী বহন করছিল। এর মধ্যে রয়েছে চিকিৎসা সরঞ্জাম, ময়দা, চাল, শিশুদের দুধ, ডায়াপার, নারীদের স্যানিটারি পণ্য, পানি বিশুদ্ধকরণ কিট, ক্রাচ এবং শিশুদের কৃত্রিম অঙ্গ।

ইসরায়েলের এমন পদক্ষেপ নিয়ে বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার সংগঠন ও নাগরিক সমাজের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। মুক্তি দাবি এবং ত্রাণ পৌঁছাতে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে চলমান প্রতিবাদ আরও জোরালো হচ্ছে।