ইরানে হামলার পর বেড়ে গেল তেলের দাম
প্রকাশ | ১৩ জুন ২০২৫, ০৮:৪৭

বিশ্বে তেলের দাম বেড়েছে। শুক্রবার ভোরে ইরানের তেহরানে ইসরায়েলের হামলার পরপরই তেলের দামের এই উর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দিয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এ হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যে বড় ধরনের সংঘাত ছড়িয়ে পড়বে। আর এতে তেল সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্যবিষয়ক প্রশাসনের (ইউএস এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) তথ্য অনুসারে, ইরান বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ। ওপেকের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে তেল উৎপাদনে দেশটির অবস্থান তৃতীয়।
ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে সামরিক উত্তেজনা বেড়ে গেলে হরমুজ প্রণালি দিয়ে জাহাজ চলাচলের ওপর প্রভাব পড়বে।
ওমান ও ইরানের মধ্যে জাহাজ চলাচলের যে পথটি আছে, সেটি বিশ্বের তেল বাণিজ্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। বিশ্বে তেল সরবরাহের ২০ শতাংশই এ পথে হয়।
ওপেকভুক্ত দেশ সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত এবং ইরাকও তাদের তেল রপ্তানির একটা বড় ভাগই হরমুজ প্রণালি দিয়ে করে থাকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, শুক্রবার ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় হামলা চালানোর পর বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম একদিনে ৭% থেকে ৮% পর্যন্ত বেড়েছে। ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৭৪.৬৫ ডলার এবং ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (WTI) ক্রুডের দাম ৭৩.৪২ ডলারে পৌঁছেছে, যা গত বছরের মে মাসের পর সবচেয়ে বড় একদিনের উত্থান।
বিশ্ববাজারে তেলের দাম বৃদ্ধির পেছনে মূল কারণ হিসেবে ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলার আশঙ্কা ও হরমুজ প্রণালী অবরোধের সম্ভাবনা উল্লেখ করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, ইরান যদি হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেয়, তাহলে বিশ্ববাজারে তেলের সরবরাহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারে, যার ফলে তেলের দাম ১২০ ডলার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
বিশ্ববাজারে তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে ভারতের মতো তেল আমদানিনির্ভর দেশগুলোর জন্য উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ববাজারে তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ১০ ডলার বেড়ে গেলে ভারতের বাণিজ্য ঘাটতি ০.৫৫% এবং ভোক্তা মূল্য সূচক (CPI) ০.৩% বৃদ্ধি পায়।
বিশ্ববাজারে তেলের দাম বৃদ্ধির এই পরিস্থিতি আগামী দিনগুলোতে অর্থনৈতিক অস্থিরতা ও মুদ্রাস্ফীতির ঝুঁকি বাড়াতে পারে। বিশ্বব্যাপী তেলের সরবরাহ ও চাহিদার ভারসাম্য বজায় রাখতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমন্বিত পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।