ইরানের কড়া হুশিয়ারি
ইসরায়েলের হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রও দায়ী হবে
প্রকাশ | ১৩ জুন ২০২৫, ১০:৩৯

ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে। তেহরান বলেছে, ইসরায়েলের এই আগ্রাসনের জন্য শুধু তেলআবিব নয়, বরং তাদের প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্রকেও দায় নিতে হবে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, এই ‘আগ্রাসনের জন্য’ যুক্তরাষ্ট্রও দায়ী থাকবে। তেহরান বলেছে, জাতিসংঘ সনদের ৫১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ইরানকে আক্রমণের প্রতিক্রিয়া জানানো তাদের ‘‘আইনগত ও বৈধ অধিকার।’’
তারা আরও বলে, ‘‘ইরানের বিরুদ্ধে জায়নিস্ট শাসনের এই আগ্রাসনের বিপজ্জনক ও সুদূরপ্রসারী প্রভাব ও পরিণতির দায়ভার এ অঞ্চলের এই শাসকগোষ্ঠী ও তাদের মদদদাতাদেরই নিতে হবে।’’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘‘জায়নিস্ট শাসনের এই আক্রমণ যুক্তরাষ্ট্রের সমন্বয় এবং অনুমোদন ছাড়া সম্ভব ছিল না। ফলে, যুক্তরাষ্ট্র সরকার, যারা এই শাসনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক, তাদেরকেও এই বিপজ্জনক পদক্ষেপের জন্য দায়ী থাকতে হবে।’’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি ইরানের ওপর ইসরায়েলের এই সরাসরি আক্রমণ, একটি আন্তর্জাতিক অপরাধ। এর জবাব আমরা জাতীয় মর্যাদা, আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে কঠোরভাবে দেব।”
ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা মধ্যপ্রাচ্যে আরও অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। এরইমধ্যে ইসরায়েল একাধিকবার দাবি করেছে যে তারা ইরানের সামরিক এবং পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহল পরিস্থিতি শান্ত রাখতে আহ্বান জানালেও ইরান ও ইসরায়েলের পরস্পরের প্রতি কড়া ভাষায় দায় চাপানো চলছেই।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া:
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ইসরায়েলের অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়িত নয়। প্রেস সেক্রেটারি জানান, “আমরা এই অভিযানের পূর্বে অবগত ছিলাম না। তবে যুক্তরাষ্ট্র তার মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে থাকা সকল সামরিক ও কূটনৈতিক সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করায় অগ্রাধিকার দিচ্ছে।”
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী এবং কৌশলগত মিত্র। ফলে ইরানের অভিযোগ পুরোপুরি অমূলক বলা যাচ্ছে না।
এদিকে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস এ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “উভয় পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম দেখাতে হবে। এই অঞ্চল আরও এক যুদ্ধের ধকল নিতে পারবে না।”
এদিকে তুরস্ক, চীন, রাশিয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং উভয় পক্ষকে আলোচনায় ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের এই নতুন উত্তেজনা শুধু ইসরায়েল ও ইরান সীমাবদ্ধ থাকবে না, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এটি ছড়িয়ে পড়তে পারে লেবানন, সিরিয়া, ইয়েমেন এমনকি উপসাগরীয় অঞ্চলের অন্যান্য দেশেও। এ পরিস্থিতিতে একটি ভুল সিদ্ধান্ত গোটা অঞ্চলকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে।