ইরানে হামলার বিরুদ্ধে আরব বিশ্বের তীব্র নিন্দা
প্রকাশ | ১৩ জুন ২০২৫, ১৬:৪৪ | আপডেট: ১৩ জুন ২০২৫, ১৬:৪৯

ইসরায়েলের সাম্প্রতিক ইরানবিরোধী হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে একাধিক আরব দেশ। কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এবং মিশরসহ মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রগুলো একযোগে এই হামলাকে “আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন” বলে অভিহিত করেছে এবং উভয় পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুর রহমান আল থানির ভাষায়, “ইসরায়েলের এই অযৌক্তিক পদক্ষেপ শান্তির সম্ভাবনাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করছে এবং বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য এক তাৎক্ষণিক হুমকি তৈরি করছে।”
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই হামলাকে আন্তর্জাতিক আইনের সরাসরি লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করে বলেছে, “এই ধরনের আগ্রাসন মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে।”
সংযুক্ত আরব আমিরাত (UAE) হামলাকে “সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে নিন্দা” জানিয়ে বলেছে, “পরিস্থিতি যাতে আরও খারাপের দিকে না যায়, সেজন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম ও দূরদর্শিতা প্রদর্শন করতে হবে।”
আমিরাতের মতে, এই ধরনের সামরিক অভিযানের পরিণতি কেবল ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না; এটি পুরো অঞ্চলকে অনিরাপদ করে তুলতে পারে।
মিশরীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, “এই হামলার ফলে মধ্যপ্রাচ্যে যে ধরনের অভূতপূর্ব বিপর্যয় সৃষ্টি হতে পারে, তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।”
মিশর, যেটি দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করছে, বলেছে— এই হামলা কেবল ইরান নয়, বরং গোটা অঞ্চলের নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলছে।
এই প্রতিক্রিয়াগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে, ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনার মধ্যে আরব দেশগুলো এক ধরণের নীতিগত অবস্থান নিচ্ছে—যেখানে সরাসরি সংঘাতের পরিবর্তে তারা কূটনৈতিক সমাধানকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
মধ্যপ্রাচ্য রাজনীতির বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনার পর আরব বিশ্ব এখন আরও বেশি করে ইসরায়েলের একপাক্ষিক সামরিক কৌশলের বিরুদ্ধে কথা বলছে। ইরানকে সাধারণত সন্দেহের চোখে দেখলেও, তাদের ভূখণ্ডে সরাসরি হামলার ঘটনাকে আরব নেতৃত্ব আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী বলেই বিবেচনা করছে।
যুদ্ধ, প্রতিশোধ, চুক্তি ও সংযমের মাঝে দোদুল্যমান এই সময়টিতে আরব রাষ্ট্রগুলোর অবস্থান এক ধরনের কূটনৈতিক ভারসাম্য তৈরি করছে। ইসরায়েলের ওপর চাপ বাড়ছে এবং জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংগঠনের দিকেও নজর পড়ছে—এই সংকট নিরসনে তারা কী ভূমিকা রাখে, তা এখন সময়ের দাবি।