পারমাণবিক অস্ত্রের দ্বারপ্রান্তে ইরান?
প্রকাশ | ১৪ জুন ২০২৫, ১৭:৩৫

ইরানের ভূখণ্ডে ইসরায়েলের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক হামলার জেরে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান আলোচনা ‘অর্থহীন’ বলে মন্তব্য করেছে তেহরান। এমন অবস্থানের পর ধারণা করা হচ্ছে—ইরান এবার প্রকাশ্যে তার পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারে।
শনিবার (১৪ জুন) বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই কড়া ভাষায় বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র এমন আচরণ করছে, যা এই সংলাপকে অর্থহীন করে তুলেছে। আপনি একদিকে ইরানের ভূখণ্ডে হামলার অনুমোদন দেবেন, আবার অন্যদিকে আলোচনার ডাক দেবেন—তা তো সম্ভব নয়।”
তিনি আরও জানান, আগামী রোববারের আলোচনায় ইরান অংশ নেবে কি না, সে সিদ্ধান্ত এখনো নেওয়া হয়নি।
বাঘাই আরও দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সম্মতি ছাড়া ইসরায়েল এই হামলা চালাতে পারত না। এর মধ্য দিয়ে ওয়াশিংটন আসলে তেলআবিবকে প্রকাশ্য সমর্থন দিয়েছে এবং দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ধ্বংস করে দিয়েছে।
অন্যদিকে, মার্কিন প্রশাসন এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বলছে, পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে তেহরানের সঙ্গে আলোচনা এখনো যুক্তিসংগত।
এমন অবস্থায় টুইটার ও ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইরানপন্থি একাধিক অ্যাকাউন্ট থেকে দাবি করা হয়েছে—ইরান কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পারমাণবিক অস্ত্রের প্রথম পরীক্ষা চালাতে পারে। যদিও এই দাবির পক্ষে সরকারিভাবে কিছু জানানো হয়নি, তবে বিশ্লেষকরা এটিকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না।
এর আগে শুক্রবার ভোরে ইসরায়েল, ইরানের একাধিক পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনায় ব্যাপক হামলা চালায়। এতে নিহত হন ইরানের বেশ কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানী।
ইরানও বসে থাকেনি। জবাবে তারা ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনার দিকে শতাধিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এই পাল্টা হামলায় অন্তত তিনজন নিহত এবং ৮০ জনের বেশি ইসরায়েলি নাগরিক আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে তেলআবিব। হামলার পর ইসরায়েলের বিভিন্ন এলাকায় লাখ লাখ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটে যান।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে এক নতুন ধরনের বিপর্যয় নেমে আসতে পারে, যার প্রভাব বিশ্বজুড়েই পড়বে।