ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি
ট্রাম্পের মন্তব্যে দিল্লিতে অস্বস্তি
প্রকাশ | ২০ জুন ২০২৫, ১৬:০০ | আপডেট: ২০ জুন ২০২৫, ১৯:০৭

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাতের পর যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হয়েছিল গত ১০ মে। কিন্তু এই যুদ্ধবিরতির কৃতিত্ব দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত বুধবার হোয়াইট হাউজে পাকিস্তানের সেনা প্রধান ফিল্ড মার্শাল অসিম মুনিরকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। এরপর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প একই কথার পুনরাবৃত্তি করেছেন। আর এই বিষয়টি নিয়ে দিল্লিতে অস্বস্তি বিরাজ করছে।
জানা যায়, এক মাসেরও বেশি সময় আগে যুদ্ধবিরতি হলেও এর কৃতিত্বের দাবি নিয়ে চলছে বিবৃতি-পাল্টা বিবৃতি, যা সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে অস্বস্তির পরিবেশ তৈরি করেছে।যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কয়েকদফা বক্তব্য দিয়ে দেশ দুটির সংঘাত থামানোর কৃতিত্ব দাবি করেছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তারই মধ্যস্থতায় দুই দেশের চলমান সংঘাত থেমেছে। যদিও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও পাল্টা বক্তব্য দিয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একাধিকবার বিবৃতি দিয়ে ট্রাম্পের দাবি খারিজ করেছে।
এরপরও ডোনাল্ড ট্রাম্প কৃতিত্ব দাবি করে বক্তব্য দিয়েছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তার বুধবারের ফোনালাপের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ট্রাম্প সেই একই দাবি করেন। পাকিস্তানের সেনা প্রধান ফিল্ড মার্শাল অসিম মুনিরকে হোয়াইট হাউজে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বুধবার। তার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সাক্ষাতের আগেই ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে।
সেই সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আবারও বলেন, ‘আমি একটা যুদ্ধ থামিয়ে দিলাম… আমি পাকিস্তানকে ভালোবাসি। আমার মনে হয় মোদী একজন অসাধারণ মানুষ। আমি গত রাতে তার সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা ভারতের মোদীর সঙ্গে একটা বাণিজ্য চুক্তি করতে চলেছি।’
এরপর অসিম মুনিরের সঙ্গে তার দীর্ঘক্ষণ বৈঠক হয়। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমানোর জন্য তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘অসিম মুনিরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তিনি সম্মানিত বোধ করছেন।’
ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের বিষয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। বাণিজ্য শুল্ক এবং ভিসা নীতির বিষয় ছাড়া প্রথম দফায় ক্ষমতায় থাকাকালীন ট্রাম্পকে ভারতের বিরুদ্ধে বিশেষ কিছু বলতেও দেখা যায়নি।
কিন্তু দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় আসার পর প্রথমে রেসিপ্রোক্যাল ট্যারিফ, অভিবাসীদের ভিসা নীতি এবং পরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ অভিবাসীদের সামরিক বিমানে করে ফেরত পাঠানোকে কেন্দ্র করে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের সমীকরণে কিছুটা হলেও ভিন্ন সুর দেখা যায়।
সম্প্রতি ভারত ও পাকিস্তানের সংঘাতের সময় যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান, যুদ্ধবিরতির কৃতিত্বের দাবি নিয়ে মোদী ও ট্রাম্পের পরস্পরবিরোধী মন্তব্য এবং সর্বোপরি সিম মুনিরকে হোয়াইট হাউজে আমন্ত্রণ জানানোর ঘটনাতেও দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে অস্বস্তি বেড়েছে।