ইরানে মোসাদের ৫৪ গুপ্তচর গ্রেপ্তার
প্রকাশ | ২১ জুন ২০২৫, ১০:০৫

মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতের মধ্যে গোয়েন্দা ও সাইবার যুদ্ধও তীব্র আকার ধারণ করেছে। এমন সময়, ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে ৫৪ জন সন্দেহভাজন গুপ্তচরকে গ্রেফতার করেছে ইরান। বার্তাসংস্থা আনাদোলু ও ফার্স নিউজ এজেন্সির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
গ্রেফতার অভিযানটি পরিচালিত হয়েছে ইরানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় খুজেস্তান প্রদেশে, যেখানে পরিস্থিতি শুরু থেকেই উত্তপ্ত ছিল। খুজেস্তানের প্রসিকিউটর অফিস জানিয়েছে, আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে “শত্রুর পক্ষ হয়ে তথ্য সংগ্রহ, রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণা চালানো, মিথ্যা তথ্য ও গুজব ছড়িয়ে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও সামাজিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করার” অভিযোগ আনা হয়েছে।
ফার্স নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, তদন্তে প্রমাণ মিলেছে যে গ্রেফতা হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের মোসাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ছিল। এর মাধ্যমে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার হয়ে তথ্য পাচার, বিভ্রান্তিমূলক প্রচার ও গোপন অপারেশনে যুক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে দাবি করছে ইরানি কর্তৃপক্ষ।
সংঘাতের প্রেক্ষাপট
গত ১৩ জুন থেকে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সামরিক উত্তেজনায় দুই দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে বিমান হামলা, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। সংঘাতের ফলে দুই দেশের মধ্যে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে।
ইসরায়েলের সরকারি সূত্র অনুযায়ী, ইরানের হামলায় ২৫ জন নিহত এবং কয়েক শ মানুষ আহত হয়েছেন।
অন্যদিকে, ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৬৩৯ জন নিহত এবং ১,৩০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
এই সময়ের মধ্যে উভয় দেশেই সাইবার হামলা ও গুপ্তচরবৃত্তি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ৫৪ জন গুপ্তচর গ্রেপ্তারের ঘটনাকে এই সংঘাতের গোপন ও তথ্যভিত্তিক যুদ্ধের অংশ হিসেবে দেখছে বিশ্লেষকরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের গুপ্তচরবৃত্তি ও তার বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন প্রমাণ করে যে, ইরান-ইসরায়েল সংঘাত শুধু সামরিক নয়, বরং তথ্য, প্রযুক্তি ও মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধেও রূপ নিচ্ছে। মোসাদের কার্যকলাপ মোকাবিলায় ইরান তার গোয়েন্দা নজরদারি আরও জোরদার করছে।
এদিকে আন্তর্জাতিক মহল এই সংঘাত নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘ বারবার উভয় পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানালেও, বাস্তব পরিস্থিতিতে সংঘর্ষ কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।