‘জুয়াড়ি’ আখ্যা দিয়ে ট্রাম্পকে কড়া হুঁশিয়ারি ইরানের 

প্রকাশ | ২৩ জুন ২০২৫, ১৫:৫৭

যাযাদি ডেস্ক
নিউ ইয়র্ক শহরে ইরান যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ।

ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর খতম আল-আনবিয়া কেন্দ্রীয় সামরিক সদরদপ্তরের মুখপাত্র ইব্রাহিম জুলফাকারি বলেছেন, পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তেহরানের সশস্ত্র বাহিনীর পাল্টা হামলার বৈধ নিশানার পরিধি আরও বড় করে দিয়েছে। এছাড়া ইরানে ইসরাইলি ‘আগ্রাসনে’ যোগ দেওয়ায় দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তিনি ‘জুয়াড়ি’ অ্যাখ্যাও দিয়েছেন।  খবর: বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যা করেছে তার জন্য চড়া মূল্য চুকানোর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে। জুয়াড়ি ট্রাম্প, আপনি হয়তো যুদ্ধ শুরু করতে পারেন, কিন্তু আমরাই সেই যুদ্ধের ইতি টানতে যাচ্ছি।’  রেকর্ডকৃত ভিডিও বিবৃতির শেষে ইংরেজিতে এমনটা বলেন জুলফাকারি।

শনিবার ইরানের পরমাণু স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার জবাবে তেহরান কী করে তার জন্য বিশ্ব যখন অপেক্ষায় তখনও ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা অব্যাহত হয়েছে। এদিকে ট্রাম্পও মার্কিন হামলার পাল্টা জবাব দিলে এর পরিণতিতে তেহরানের সরকার ফেলে দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

বেসরকারি কোম্পানির উপগ্রহের ছবিতে মার্কিন হামলার পর ইরানের ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক স্থাপনা ফোরদোর উপরে থাকা পাহাড়ের গায়ে ছয়টি গর্ত দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাঙ্কার-বিধ্বংসী বোমায় ওই স্থাপনাটি ধ্বংস যদি নাও হয়, তাও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

তবে অনেক বিশেষজ্ঞ বলছেন, কেবল পাহাড়ে গর্ত দেখে ভেতরে কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা বোঝা যাবে নাা। যদিও ট্রাম্প বলছেন, ‘ইরানের সব পারমাণবিক স্থাপনার মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে মাটির অনেক নিচে। অব্যর্থ নিশানা।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট এর আগে ইরানকে পাল্টা আঘাত যেন না করে সে ব্যাপারে সাবধান করেছিলেন। বলেছিলেন, ইরানি সরকারের উচিত ‘শান্তিতে রাজি হওয়া’, নাহলে ভবিষ্যত হামলা হবে ‘আরও মারাত্মক, আরও সহজ।” তার এমন মন্তব্যের পর মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতের তীব্রতা আরও বেড়ে যেতে পারে বলে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।

মার্কিন জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইন সাংবাদিকদের বলেছেন, ইরানের তিনটি পারমাণবিক বোমা লক্ষ্য করে তারা বাঙ্কারবিধ্বংসী বোমাসহ সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত হানতে সক্ষম এমন ৭৫টি গোলা ছুড়েছিলেন, এর বাইরে মেরেছিলেন দুই ডজনের বেশি টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র।

যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পর স্থাপনার বাইরে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা বেড়ে যেতে দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের পরমাণু বিষয়ক ওয়াচডগ আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থার মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি।

তবে হামলায় স্থাপনাগুলোর কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা মূল্যায়ন করা সম্ভব হয়নি, সিএনএনকে এমনটাই বলেছেন তিনি।

ঊর্ধ্বতন এক ইরানি সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের হামলার আগেই উচ্চমাত্রার সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের সিংহভাগই ফোরদো থেকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছিল। রয়টার্স এ দাবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।

যদিও তেহরান দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছে, তারা পারমাণবিক অস্ত্র বানাতে চায় না এবং তাদের কর্মসূচি ‍পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ।