পরমাণু স্থাপনায় হামলায় ছড়ায়নি তেজস্ক্রিয়তা, বেকায়দায় যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশ | ২৩ জুন ২০২৫, ২২:২৫

যাযাদি ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্র ফোরদো ও নাতানজে বাংকার-বাস্টার বোমা ব্যবহার করেছে এবং ইসফাহানে দুই ডজনের বেশি টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় সফলভাবে বোমা হামলা চালানো হয়েছে। 

এর মধ্য দিয়ে কার্যত ইসরায়েলের সঙ্গে যৌথভাবে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছে ওয়াশিংটন। 

ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, ‘ইরানে তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় অত্যন্ত সফলভাবে হামলা সম্পন্ন হয়েছে — এর মধ্যে ফোরদো, নাতানজ এবং ইসফাহান রয়েছে। হামলায় ব্যবহৃত সব বিমান এখন ইরানের আকাশসীমার বাইরে চলে গেছে।’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় সফলভাবে বোমা হামলা চালানো হয়েছে। 

এর মধ্য দিয়ে কার্যত ইসরায়েলের সঙ্গে যৌথভাবে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছে ওয়াশিংটন। ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, ‘ইরানে তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় অত্যন্ত সফলভাবে হামলা সম্পন্ন হয়েছে — এর মধ্যে ফোরদো, নাতানজ এবং ইসফাহান রয়েছে। হামলায় ব্যবহৃত সব বিমান এখন ইরানের আকাশসীমার বাইরে চলে গেছে।’

মার্কিন বিমান বাহিনীর প্রধান ড্যান কেইন জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ফোরদো ও নাতানজে বাংকার-বাস্টার বোমা ব্যবহার করেছে এবং ইসফাহানে দুই ডজনের বেশি টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। 

ট্রাম্প একে ‘দারুণ সামরিক সাফল্য’ আখ্যা দিয়েছেন এবং বলেন, ‘ইরানের মূল ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা হয়েছে।’ তবে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা স্বাধীনভাবে এই দাবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি।

পেন্টাগন জানিয়েছে, এ হামলায় ১৪টি জিবিইউ-৫৭ ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর (এমওপি) বোমা ব্যবহার করা হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বিধ্বংসী বাংকার-বাস্টার। 

এগুলো একেকটি প্রায় ১৩ হাজার কেজি ওজনের এবং ১৮ মিটার কংক্রিট বা ৬১ মিটার মাটি ভেদ করে বিস্ফোরণ ঘটাতে সক্ষম। হামলায় বি-২ স্পিরিট স্টেলথ বোমারু বিমান ব্যবহার করা হয়েছে, যা একবারে দুটি এমওপি বহন করতে পারে।

ইসফাহান স্থাপনাটি শেষ মুহূর্তে মার্কিন সাবমেরিন থেকে ছোঁড়া দুই ডজনের বেশি টমাহাক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়। এক গোপন অভিযানে ১২৫টি বিমান অংশ নেয় এবং সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে ৭৫টি বোমা ফেলা হয়। 

এত বড় ধ্বংসাত্মক হামলার পরও আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) এবং ইরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তেজস্ক্রিয়তা ছড়ানোর কোনো প্রমাণ নেই। 

ফলে প্রশ্ন উঠেছে- ইউরেনিয়াম কোথায় গেল? যদি স্থাপনাগুলো ধ্বংস হয়ে থাকে, তাহলে বিপুল পরিমাণ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ কোথায় সংরক্ষিত ছিল বা সরিয়ে নেয়া হয়েছে?

উদ্ভুত এই পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রকে বেকায়দায় ফেলেছে। কারণ, হামলা করে (ইরানের) ইউরোনিয়াম সমৃদ্ধকরণের সক্ষমতা ধ্বংসের দাবি করলেও বাস্তবে যদি ইউরেনিয়াম অন্য কোথাও স্থানান্তরিত হয়ে থাকে, তাহলে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি থামানো সম্ভব হবে না — বরং ইরান আরও কঠোর অবস্থান নিতে পারে।

এই হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যে বড় ধরনের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। 

ইতিমধ্যে ইরান হুঁশিয়ারি দিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র যদি আবার হামলা চালায়, তবে পুরো অঞ্চলে মার্কিন স্বার্থকে লক্ষ্য করে পাল্টা আঘাত হানা হবে। 

এরই মধ্যে ইরাক, ইয়েমেন ও সিরিয়ায় ইরানপন্থি গোষ্ঠীগুলো সক্রিয় হয়ে উঠেছে। হুতি গোষ্ঠীও লোহিত সাগরে মার্কিন জাহাজে আক্রমণের হুমকি দিয়েছে। 

মার্কিন কর্মকর্তারা দাবি করছেন, ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বি-২ অভিযান পরিচালনা করে নজির স্থাপন করেছে ওয়াশিংটন। 

কিন্তু ইরানের গোপন ইউরেনিয়াম কোথায়-এই প্রশ্নের উত্তর এখনও অজানা। ফলে হামলা সফল হলেও কৌশলগতভাবে যুক্তরাষ্ট্র এখন এক কঠিন অজানা পরিস্থিতির মুখে। সূত্র : আল জাজিরা