ইহুদীদের নতুন ঠিকানা সাইপ্রাস...

প্রকাশ | ৩০ জুন ২০২৫, ১১:৫২

যাযাদি ডেস্ক
ইহুদীদের নতুন ঠিকানা সাইপ্রাস

ইতিহাস জুড়ে ফিলিস্তিনে জোরপূর্বক ভূমি দখলের মাধ্যমে সংকট সৃষ্টি করেছে জায়নবাদীরা। 

সেই দীর্ঘস্থায়ী সংকটের মাঝেই এবার ইউরোপের ছোট দ্বীপরাষ্ট্র সাইপ্রাসে বিপুল পরিমাণ জমি ও সম্পত্তি কিনছে ইসরায়েলি নাগরিকরা। এতে দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে এবং সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে চরম উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদি জনগোষ্ঠীর অন্যতম বড় আশ্রয়স্থল ছিল সাইপ্রাস। ইরান-ইসরায়েল সাম্প্রতিক উত্তেজনার সময়ও হাজার হাজার ইহুদি এ দেশেই আশ্রয় নিয়েছিল। 

এমনকি জানা যায়, অতীতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু পর্যন্ত সাইপ্রাসে পালিয়ে ছিলেন। ফলে ঐতিহাসিকভাবেই দুই দেশের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ।

তবে ইদানীং সাইপ্রাসের রিয়েল এস্টেট বাজারে ইসরায়েলিদের অস্বাভাবিক হারে সম্পত্তি কেনাবেচা নতুন করে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশটির বামপন্থী রাজনৈতিক দল আকেল পার্টি এ নিয়ে সরব হয়েছে। 

দলের শীর্ষ নেতা স্টেফানো সাইবিসি স্থানীয় একটি রেডিওতে বলেন, “ইসরায়েলিরা এখন লিমাসোল ও লারনাকা অঞ্চলে ‘গেটেড কমিউনিটি’ গড়ে তুলছে—যেখানে কেবল তারাই বসবাস করতে পারবে। 

সেখানে ইতোমধ্যেই জায়নবাদী স্কুল ও ইহুদি উপাসনালয় (সিনাগগ) নির্মাণের কাজ চলছে। অথচ প্রশাসন সবকিছু জেনেও নীরব।”

সাইপ্রাস ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশ হওয়ায় অন্যান্য ইউরোপীয়দের জন্য জমি কেনা সহজ হলেও, ইসরায়েলের মতো বাইরের দেশের নাগরিকদের জন্য তা নিয়মতান্ত্রিকভাবে কঠিন। 

এরপরও ইসরায়েলিদের সম্পত্তি ক্রয়ের মাত্রা যেভাবে বেড়েছে, তা গভীর উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সাইপ্রাস সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সাল থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত শুধু লারনাকা শহরেই ইসরায়েলি নাগরিকরা কিনেছেন ১,৪০৬টি স্থাবর সম্পত্তি। 

এর মধ্যে ৪৮১টি সম্পত্তির মালিকানা দলিলও তারা পেয়েছে। 

লিমাসোল শহরেও চিত্র ভিন্ন নয়—সেখানে ১,১৫৪টি সম্পত্তি কিনেছেন ইসরায়েলিরা, যার ৫১১টির মালিকানা তারা ইতিমধ্যে পেয়েছেন।

এই অবস্থায় আকেল পার্টি ‘গোল্ডেন ভিসা’ প্রক্রিয়ার কড়া সংস্কার চেয়ে নতুন আইন প্রস্তাব করেছে। 

এই ভিসার আওতায় ইইউর বাইরের নাগরিকরা ৩ লাখ ইউরো মূল্যের সম্পত্তি বা কোম্পানির শেয়ার কিনলেই সাইপ্রাসে বসবাসের অনুমতি পান। 

দলটি দাবি করেছে, তৃতীয় বিশ্বের নাগরিকদের জমি ক্রয় প্রক্রিয়াও কঠোর নজরদারির আওতায় আনতে হবে।

আকেল নেতারা সতর্ক করেছেন, “এই প্রবণতা চলতে থাকলে সাইপ্রাসের ভূখণ্ড ধীরে ধীরে বিদেশিদের দখলে চলে যাবে, বিশেষ করে ইসরায়েলিদের হাতে। 

এখনই নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে এই দ্বীপ রাষ্ট্রকেও ‘নতুন ফিলিস্তিন’ হিসেবে দেখতে হতে পারে।”

https://www.youtube.com/watch?v=2Rcg3l_6RfI