সিরিয়া ও বাংলাদেশে ‘আইএস তহবিলে অর্থ পাঠাত’ গ্রেপ্তার বাংলাদেশিরা: মালয়েশিয়া পুলিশ

প্রকাশ | ০৪ জুলাই ২০২৫, ১৫:১৫ | আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৫, ১৮:২০

যাযাদি ডেস্ক
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মালয়েশিয়া পুলিশের আইজিপি দাতুক সেরি মোহদ খালিদ ইসমাইল। | ছবি: দ্য স্টার

জঙ্গিবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশিদের দলটি সিরিয়া ও বাংলাদেশে ‘ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সেলগুলোকে’ অর্থ পাঠাত বলে তথ্য দিয়েছেন দেশটির পুলিশ প্রধান। খবর: দ্য স্টার।

আজ শুক্রবার (৪ জুলাই) মালয়েশিয়ার বুকিত আমানে দেশটির পুলিশের আইজিপি দাতুক সেরি মোহদ খালিদ ইসমাইল সাংবাদিকদের বলেন, ‘পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ কাউন্টার টেরোরিজম ডিভিশনের (ই-এইট) গোয়েন্দা তথ্য ও তদন্তে জানা গেছে, এই গোষ্ঠী আইএসেরর জন্য অর্থ সংগ্রহ করছিল।’

তিনি বলেন, ‘তারা মোট কত টাকা সংগ্রহ করেছে তা নিয়ে এখনো তদন্ত চলছে। আমরা মনে করি, সদস্যদের বার্ষিক চাঁদা এবং দান থেকে তারা এ অর্থ সংগ্রহ করেছে।’

পুলিশ প্রধান খালিদ ইসমাইল জানান, এই গোষ্ঠীর নাম 'গেরাকান মিলিট্যান রেডিক্যাল বাংলাদেশ' বা জিএমআরবি। এর সদস্যরা হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে তাদের মতবাদ প্রচার এবং নতুন সদস্য নিয়োগ করছিল।

তিনি বলেন, ‘আমাদের ধারণা, তাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ১০০ থেকে ১৫০ জন সদস্য রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, গ্রুপের প্রত্যেক সদস্যকে বছরে ৫০০ রিংগিত চাঁদা দিতে হয়। তবে অন্য দানের পরিমাণ সদস্যদের ওপর নির্ভর করে।’

তাদের কোনো আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক বা প্রতিবেশী দেশগুলোর আইএস সেলের সঙ্গে কোনো সংযোগ রয়েছে কি না— এমন প্রশ্নে আইজিপি জানান, বিষয়টি এখনো তদন্তাধীন। 

তিনি বলেন, ‘আমরা অন্য দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও ইন্টারপোলের সঙ্গে কাজ করছি যাতে তাদের সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক উন্মোচন করা যায়।’

আইজিপি আরও জানান, জিএমআরবি মূলত মালয়েশিয়ায় থাকা বাংলাদেশী অভিবাসীদের মধ্য থেকে সদস্য নিয়োগ করছিল। প্রতিটি সদস্যকে দলে যুক্ত হওয়ার আগে 'বাইআ'হ' (আনুগত্যের শপথ) গ্রহণ করতে হয়। তবে এর আগে সদস্যদের খুব নিখুঁতভাবে যাচাই-বাছাই করা হতো।

আইজিপি জানান, মালয়েশিয়াকে যাতে বিদেশী জঙ্গিদের লজিস্টিক ও ট্রানজিট হাব হিসেবে ব্যবহার না করা যায়, সে জন্য এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে ই-এইট। তাদের তিন ধাপে চালানো একটি অভিযানে এই গোষ্ঠীকে নির্মূল করা হয়েছে। 

অভিযানটি চলেছে গত ২৮ এপ্রিল থেকে ২১ জুন পর্যন্ত। এতে ২৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ৩৬ জন বাংলাদেশীকে জোহর এবং সেলাঙ্গর থেকে আটক করা হয়েছে, যাদের মধ্যে তাদের নেতাও রয়েছেন।

মালয়েশিয়ার পুলিশ প্রধান বলেন, ‘এই ৩৬ জনের মধ্যে ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, ১৫ জনকে ইমিগ্রেশন বিভাগে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং বাকি ১৬ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইন সোসমা অনুযায়ী তদন্ত চলছে।’