যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নাকচ করে কিয়েভে বড় হামলা রাশিয়ার, হতাশ ট্রাম্প
প্রকাশ | ০৪ জুলাই ২০২৫, ১৯:১৩

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে রেকর্ড সংখ্যক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে বড় ধরনের হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে চালানো এ হামলায় অন্তত ২৩ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে এ ঘটনায় হতাশ হয়েছেন ট্রাম্প। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
ইউক্রেনের বিমান বাহিনীর দাবি, রাশিয়া ওই রাতে ৫৫০টি ড্রোন এবং ১১টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। এগুলোর মধ্যে ৭২টি ড্রোন কিয়েভের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ভেদ করে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। এটিকে ইউক্রেনের ওপর সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা হিসেবে বর্ণনা করেছে তারা।
স্থানীয় সময় শুক্রবার সকাল পর্যন্ত কিয়েভের আকাশে ধোঁয়ার ঘনচাদর দেখা গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা কর্তৃক প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, দমকলকর্মীরা বিভিন্ন ভবনে আগুন নেভাচ্ছেন।
কিয়েভের রেল অবকাঠামো, স্কুল, ভবন ও যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পোল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, কিয়েভে পোলিশ কনসুলেটও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই হামলাকে যুদ্ধের অন্যতম সবচেয়ে দৃশ্যমান ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ হামলা বলে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, এই নির্ঘুম রাত কেবল ইউক্রেন নয়, সমগ্র বিশ্বের জন্য রাশিয়ার এক নির্মম বার্তা।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, পুতিন-ট্রাম্প ফোনালাপের পরপরই এমন হামলা প্রমাণ করে যে রাশিয়া যুদ্ধ থামাতে চায় না। এ সময় জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রসহ মিত্রদের প্রতি মস্কোর ওপর আরও চাপ বাড়ানোর আহ্বান জানান।
বৃহস্পতিবার ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে ফোনালাপ হয়। পরে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, আমার কথোপকথনে কোনও অগ্রগতি হয়নি। আমি খুব হতাশ। পুতিন যুদ্ধ থামাতে চান বলে মনে হয় না। এটা খুবই দুঃখজনক।
পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বিবিসিকে জানান, যুদ্ধের মূল কারণগুলো সমাধান না হওয়া পর্যন্ত রাশিয়া তাদের বিশেষ সামরিক অভিযান চালিয়ে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র সরবরাহ স্থগিত করেছে, এমন ঘোষণার পর প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ট্রাম্পের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ থাকলে ইউক্রেনের পক্ষে রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা কঠিন হয়ে পড়বে।
তবে ট্রাম্প জানান, আমরা এখনও অস্ত্র দিচ্ছি, পুরোপুরি বন্ধ করিনি। এর জন্য তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে দায়ী করে বলেন, তিনি আমাদের সব অস্ত্র বাইরে দিয়ে দিয়েছেন। আমাদের নিজেদের জন্য যথেষ্ট রাখাও জরুরি।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে সর্বাত্মক আক্রমণ শুরু করে। এর পর থেকে তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধ চলছে। শান্তিচুক্তি নিয়ে আলোচনা একাধিকবার ব্যর্থ হয়েছে। বরং সম্প্রতি রাশিয়ার হামলার মাত্রা বেড়েছে।