শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

প্রাচীন স্থাপত্যের অপূর্ব নিদর্শন চৌধুরী বাড়ি জামে মসজিদ

বোরহানউদ্দিন (ভোলা) প্রতিনিধি
  ০৬ জানুয়ারি ২০২১, ২১:১৪

বোরহানউদ্দিন উপজেলা সদর থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দক্ষিণে দেউলা ও সাচড়া ইউনিয়নে যেতে পাকা সড়কের পাশেই কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে প্রাচীন স্থাপত্যের অপূর্ব নিদর্শন চৌধুরী বাড়ি জামে মসজিদ। ঐতিহ্যবাহী চৌধুরী বাড়ির নামেই এ মসজিদের নামকরণ করা হয়েছে। ওই বাড়ির প্রবেশপথেই ঘাটলা বাঁধানো পুকুরসহ দৃষ্টিনন্দন মসজিদের দিকে সবার চোখ একবারের জন্য হলেও আটকে যায়।

চৌধুরী বাড়ির প্রবীণ ব্যক্তি ও মসজিদের তত্ত্বাবধায়ক মাহাবুব চৌধুরী জানান, ১৮৬০ সালে তৎকালীন জমিদার বোরহানউদ্দিন চৌধুরী মসজিদটি নির্মাণ করেন। তিনি ভারতের দিল্লি থেকে শ্বেতপাথর এবং রাজমিস্ত্রিদের এনে মসজিদের অবকাঠামো সাজিয়েছেন। মসজিদে ব্যবহৃত লোহার বিমগুলো আনা হয়েছিল সুদূর বেলজিয়াম থেকে। বোরহানউদ্দিন চৌধুরী বিমগুলো কলকাতা থেকে আনানোর ব্যবস্থা করেন। দরজা-জানালায় ব্যবহার করা বাদামি রঙের কাঠগুলো নতুনের মতো একই রকম বিবর্ণহীন। মসজিদের ভিতর বাইরে অপূর্ব কারুকাজ। বোরহানউদ্দিন পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসান জানান, ওই সময় এত উচ্চমানের উপকরণ দিয়ে মসজিদ নির্মাণ এবং নির্মাণশৈলী সত্যিই আলাদা আভিজাত্যের পরিচয় বহন করে। এই মসজিদে ব্যবহৃত প্রদীপগুলোতে একসময় সরিষার তেল জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হতো। মসজিদটির পশ্চিম পাশে রয়েছে তালগাছবেষ্টিত শান বাঁধানো পুকুর। এককালে মসজিদের পূর্ব পাশে ছিল তিনটি কাচারি। ওই কাচারিগুলোতে শত শত মুসাফির আশ্রয় নিত। একশ বছরের বেশি সময় ওই এলাকার একমাত্র মসজিদে দূরদূরান্ত থেকে মুসল্লিরা নামাজ পড়ত।

এক একর ৪০ শতাংশ জমির ওপর মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। একসময় মসজিদের নিজস্ব ২৬০ বিঘা জমির আয় দিয়ে মুসাফিরদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হতো। কালের আবর্তে তেঁতুলিয়া নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে প্রায় ২০০ বিঘা জমি। বর্তমানে মাত্র ৫০ বিঘা জমির আয় দিয়ে মসজিদের কার্যক্রম চালাতে সমস্যা হচ্ছে বলে জানান মাহাবুব চৌধুরী। দীর্ঘদিন পর ২০০৮ সালে প্রথম মসজিদটি সংস্কার করা হয়। মসজিদের নিয়মিত ইমাম মাওলানা মো. মনছুর ও মুয়াজ্জিন হাফেজ মোহাম্মদ আলী বলেন, এ মসজিদে প্রত্যেক ওয়াক্তে ৪০ থেকে ৫০ জন এবং শুক্রবার জুমার দিন ২০০ থেকে ২৫০ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করেন। এছাড়া ঈদুলফিতর ও ঈদুল আজহার নামাজে আশপাশের কয়েক হাজার মুসল্লি অংশ নেন।

যাযাদি/এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে